থমাস অ্যাকুইনাস

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

এখানে থমাস অ্যাকুইনাস নিয়ে একটি পেশাদার বাংলা নিবন্ধ দেওয়া হলো:

থমাস অ্যাকুইনাস

থমাস অ্যাকুইনাস (আনুমানিক ১২২৫ – ৭ মার্চ ১২৭৪) ছিলেন মধ্যযুগের একজন প্রভাবশালী দার্শনিকধর্মতত্ত্ববিদ। তিনি ইতালির অ্যাসিসিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং রোমের পোপের অধীনে পড়াশোনা করেন। অ্যাকুইনাস স্কলাস্টিক ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হন এবং অ্যারিস্টটলের দর্শনকে খ্রিস্টীয় ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে সমন্বিত করার জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত।

জীবন ও কর্মজীবন

থমাস অ্যাকুইনাসের জন্ম ১২২৫ খ্রিস্টাব্দে ইতালির অ্যাসিসিতে একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তাঁর আসল নাম ছিল টমাসো ডি অ্যাকুইনো। তিনি ছিলেন সেন্ট টমাস অ্যাকুইনাস নামেও পরিচিত। খুব অল্প বয়সেই তিনি বেনেডিক্টিন মঠের ছাত্র হিসেবে যোগদান করেন। মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি ধর্মীয় জীবন গ্রহণ করেন।

অ্যাকুইনাস প্যারিসের ইউনিভার্সিটি এবং নেপলসের ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। তিনি অ্যারিস্টটলের কাজের গ্রিক পাণ্ডুলিপিগুলোর সাথে পরিচিত হন, যা তার চিন্তাধারার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। ১২৫৬ থেকে ১২৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি কলোন এবং প্যারিসে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে তিনি ইতালিতে বিভিন্ন মঠ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

অ্যাকুইনাসের সবচেয়ে বিখ্যাত কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সুম্মা থিওলজিকা (Summa Theologica)। এটি ধর্মতত্ত্বের একটি বিশাল সংগ্রহ, যেখানে তিনি যুক্তি ও বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বর, সৃষ্টি, মানুষ এবং নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এছাড়াও তিনি সুম্মা কন্ট্রা জেন্টাইলস (Summa Contra Gentiles) এবং ডিস্পুটেশনস অন দ্য পাওয়ার অফ গড (Disputationes on the Power of God) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন।

দর্শন

থমাস অ্যাকুইনাসের দর্শন অ্যারিস্টটলের দর্শনের উপর ভিত্তি করে গঠিত, তবে তিনি এটিকে খ্রিস্টীয় ধর্মতত্ত্বের সাথে সমন্বিত করেন। তাঁর দর্শনের মূল বিষয়গুলো হলো:

  • ঈশ্বর সম্পর্কিত ধারণা: অ্যাকুইনাস ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করার জন্য পাঁচটি যুক্তি উপস্থাপন করেন, যা পঞ্চম পথ (Five Ways) নামে পরিচিত। এই যুক্তিগুলো মহাবিশ্বের কার্যকারণ, পরিবর্তন, সম্ভাবনা, এবং উদ্দেশ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। তিনি ঈশ্বরের প্রকৃতিকে সরল, শাশ্বত এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেন।
  • প্রাকৃতিক আইন: অ্যাকুইনাস প্রাকৃতিক আইনের ধারণা দেন, যা ঈশ্বরের শাশ্বত আইনের অংশ। এই আইন মানুষের স্বভাবের মধ্যে প্রোথিত এবং যুক্তির মাধ্যমে উপলব্ধি করা যায়। প্রাকৃতিক আইন অনুসারে, মানুষের উচিত ন্যায় ও কল্যাণের পথে চলা।
  • মানুষের আত্মা: অ্যাকুইনাস মনে করতেন মানুষের আত্মা শরীর থেকে আলাদা এবং এটি অবিনশ্বর। তিনি আত্মার তিনটি ক্ষমতা উল্লেখ করেছেন: বুদ্ধি, ইচ্ছা এবং স্মৃতি।
  • নৈতিকতা: অ্যাকুইনাসের নৈতিকতা মূলত অ্যারিস্টটলের গুণাবলী (Virtues) তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে গঠিত। তিনি নৈতিকতার চারটি প্রধান গুণ উল্লেখ করেছেন: প্রজ্ঞা, ন্যায়বিচার, সাহস এবং সংযম।
  • সরকারের ধারণা: অ্যাকুইনাস সরকারের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেছেন এবং বলেছেন যে সরকারের কাজ হলো জনগণের কল্যাণে কাজ করা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।

ধর্মতত্ত্ব

থমাস অ্যাকুইনাস খ্রিস্টীয় ধর্মতত্ত্বের একজন গুরুত্বপূর্ণ ভাষ্যকার ছিলেন। তিনি ধর্মীয় বিশ্বাস এবং যুক্তির মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করেন। তাঁর ধর্মতত্ত্বের মূল বিষয়গুলো হলো:

  • ত্রিত্ববাদ: অ্যাকুইনাস ত্রিত্ববাদের মতবাদকে সমর্থন করেন, যা অনুসারে ঈশ্বর এক সত্তা হলেও তিনি তিনটি ব্যক্তিতে বিদ্যমান: পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মা।
  • যিশুর মানবতা ও ঐশ্বরিকতা: তিনি যিশুকে সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বর এবং সম্পূর্ণরূপে মানুষ হিসেবে বিশ্বাস করতেন।
  • স্যাক্রামেন্ট: অ্যাকুইনাস সাতটি স্যাক্রামেন্টের (যেমন, বাপ্তিস্ম, ইউক্যারিষ্ট, ইত্যাদি) গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন এবং এগুলোকে ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভের উপায় হিসেবে বর্ণনা করেন।
  • শেষ বিচার: তিনি শেষ বিচারের ধারণা দেন, যেখানে ঈশ্বরের বিচার অনুযায়ী মানুষের কর্মের ফল নির্ধারিত হবে।

প্রভাব

থমাস অ্যাকুইনাসের দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব মধ্যযুগ এবং পরবর্তীকালে পশ্চিমা চিন্তাধারার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর কাজ খ্রিস্টীয় ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি এবং আইন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আজও প্রাসঙ্গিক।

  • স্কলাস্টিক দর্শন: অ্যাকুইনাস স্কলাস্টিক দর্শনের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত, যা মধ্যযুগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচলিত ছিল।
  • আইন ও রাজনীতি: তাঁর প্রাকৃতিক আইনের ধারণা আধুনিক আইন ও রাজনৈতিক চিন্তাধারার ভিত্তি স্থাপন করেছে।

গুরুত্বপূর্ণ রচনাবলী

  • সুμμα থিওলজিকা (Summa Theologica)
  • সুμμα কন্ট্রা জেন্টাইলস (Summa Contra Gentiles)
  • ডিস্পুটেশনস অন দ্য পাওয়ার অফ গড (Disputationes on the Power of God)
  • অন দ্য ইটারনাল ল (On the Eternal Law)
  • দ্য ট্রিটিজ অন দ্য প্রিন্সিপাল ভার্চুস (The Treatise on the Principal Virtues)

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে প্রাসঙ্গিকতা

যদিও থমাস অ্যাকুইনাস সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং নিয়ে আলোচনা করেননি, তবে তাঁর দর্শন এবং যুক্তিবাদী পদ্ধতি এই ক্ষেত্রে কিছু মূল্যবান ধারণা দিতে পারে।

  • ঝুঁকি মূল্যায়ন: অ্যাকুইনাসের প্রাকৃতিক আইনের ধারণা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে সাহায্য করতে পারে। কোনো বিনিয়োগে প্রবেশ করার আগে সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং লাভের হিসাব করা উচিত।
  • নৈতিক বিবেচনা: অ্যাকুইনাসের নৈতিকতা বিনিয়োগকারীদের সৎ এবং ন্যায়সঙ্গত উপায়ে ট্রেড করতে উৎসাহিত করে। কোনো ধরনের প্রতারণা বা অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকা উচিত।
  • দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা: অ্যাকুইনাসের শাশ্বত আইনের ধারণা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে। শুধুমাত্র স্বল্পমেয়াদী লাভের দিকে না ঝুঁকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা উচিত।
থমাস অ্যাকুইনাসের কাজের তালিকা
কাজ প্রকাশনার বছর বিষয়বস্তু
Summa Theologica ১২৬৮-১২৭১ ধর্মতত্ত্বের বিশাল সংগ্রহ
Summa Contra Gentiles ১২৫৯-১২৬৪ অবিশ্বাসী এবং ইহুদিদের কাছে খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের ব্যাখ্যা
Disputationes on the Power of God ১২৫৮-১২৬১ ঈশ্বরের ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা
On the Eternal Law ১২৫৮-১২৬১ শাশ্বত আইন এবং প্রাকৃতিক আইনের ধারণা
The Treatise on the Principal Virtues ১২৬৭-১২৬৯ প্রধান গুণাবলী নিয়ে আলোচনা

আরও দেখুন

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер