ডেরিভ অপশন
ডেরিভ অপশন : একটি বিস্তারিত আলোচনা
ভূমিকা
ডেরিভ অপশন হলো একটি জনপ্রিয় অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক উপকরণ ট্রেড করার সুযোগ রয়েছে। এটি মূলত বাইনারি অপশন, ফরেন এক্সচেঞ্জ (ফোরেক্স), সিএফডি (Contrac for Difference) এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং-এর জন্য পরিচিত। ডেরিভ অপশন-এর বিশেষত্ব হলো এর ব্যবহারবান্ধব ইন্টারফেস এবং শিক্ষানবিসদের জন্য সহজলভ্য ট্রেডিং পরিবেশ। এই নিবন্ধে, ডেরিভ অপশন-এর বিভিন্ন দিক, ট্রেডিং কৌশল, ঝুঁকি এবং সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
ডেরিভ অপশন প্ল্যাটফর্মের পরিচিতি
ডেরিভ অপশন হলো একটি অনলাইন ব্রোকার যা ডেরিভেটিভস ট্রেডিং-এর সুযোগ প্রদান করে। এটি ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ডেরিভ অপশন বিভিন্ন দেশের আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্বারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং নিয়ন্ত্রিত। এর প্রধান কার্যালয় মাল্টাতে অবস্থিত।
ডেরিভ অপশন-এর বৈশিষ্ট্য
- ব্যবহারবান্ধব প্ল্যাটফর্ম: ডেরিভ অপশন-এর ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মটি খুবই সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত।
- বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং উপকরণ: এখানে বাইনারি অপশন, ফোরেক্স, সিএফডি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করা যায়।
- কমminimum deposit: ডেরিভ অপশন-এ খুব অল্প পরিমাণ অর্থ দিয়ে ট্রেডিং শুরু করা যায়।
- উচ্চ payout: এই প্ল্যাটফর্মে payout-এর পরিমাণ বেশ আকর্ষণীয়।
- শিক্ষামূলক উপকরণ: ডেরিভ অপশন ট্রেডারদের জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক উপকরণ সরবরাহ করে, যেমন - টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ-এর টিউটোরিয়াল, ওয়েবিনার এবং ট্রেডিং কৌশল।
- 24/7 গ্রাহক পরিষেবা: ডেরিভ অপশন সপ্তাহে সাত দিন, চব্বিশ ঘণ্টা গ্রাহক পরিষেবা প্রদান করে।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং
বাইনারি অপশন হলো ডেরিভ অপশন প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেডিং উপকরণগুলির মধ্যে একটি। এখানে, ট্রেডাররা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের (যেমন - মুদ্রা যুগল, স্টক, কমোডিটি) দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা অনুমান করে ট্রেড করে।
- কল অপশন (Call Option): যদি ট্রেডার মনে করেন যে সম্পদের দাম বাড়বে, তাহলে তিনি কল অপশন নির্বাচন করেন।
- পুট অপশন (Put Option): যদি ট্রেডার মনে করেন যে সম্পদের দাম কমবে, তাহলে তিনি পুট অপশন নির্বাচন করেন।
যদি ট্রেডারের অনুমান সঠিক হয়, তবে তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ পান। আর যদি ভুল হয়, তবে তিনি তার বিনিয়োগের পরিমাণ হারান।
ফোরেক্স ট্রেডিং
ফোরেক্স বা ফরেন এক্সচেঞ্জ হলো বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক বাজার। ডেরিভ অপশন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন মুদ্রা যুগল ট্রেড করার সুযোগ রয়েছে। ফোরেক্স ট্রেডিং-এ, ট্রেডাররা একটি মুদ্রার বিপরীতে অন্য মুদ্রা কেনাবেচা করে লাভ করার চেষ্টা করে।
সিএফডি ট্রেডিং
সিএফডি (Contrac for Difference) হলো একটি ডেরিভেটিভ চুক্তি, যা ট্রেডারদের কোনো সম্পদের দামের পার্থক্য থেকে লাভ করার সুযোগ দেয়। ডেরিভ অপশন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের সিএফডি ট্রেড করা যায়, যেমন - স্টক, ইন্ডেক্স, কমোডিটি ইত্যাদি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং
ক্রিপ্টোকারেন্সি বর্তমানে একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ মাধ্যম। ডেরিভ অপশন প্ল্যাটফর্মে বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েন-এর মতো বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করা যায়।
ডেরিভ অপশন-এ ট্রেডিং কৌশল
ডেরিভ অপশন প্ল্যাটফর্মে সফল ট্রেডিং-এর জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা জরুরি। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল আলোচনা করা হলো:
- বেসিক টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ: চার্ট এবং ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বোঝা এবং সেই অনুযায়ী ট্রেড করা।
- ট্রেন্ড ফলোয়িং: বাজারের আপট্রেন্ড বা ডাউনট্রেন্ড অনুসরণ করে ট্রেড করা।
- ব্রেকআউট ট্রেডিং: যখন কোনো সম্পদের দাম একটি নির্দিষ্ট স্তর অতিক্রম করে, তখন ট্রেড করা।
- রিভার্সাল ট্রেডিং: বাজারের গতিবিধি পরিবর্তনের পূর্বাভাস দিয়ে ট্রেড করা।
- মার্টিংগেল কৌশল: প্রতিবার ট্রেড করার সময় বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো, যাতে আগের লোকসান পুনরুদ্ধার করা যায়। (তবে এই কৌশলটি ঝুঁকিপূর্ণ)
- ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি স্তর ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করা।
- মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে বাজারের প্রবণতা নির্ণয় করা।
- আরএসআই (RSI): রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স ব্যবহার করে ওভারবট এবং ওভারসোল্ড পরিস্থিতি চিহ্নিত করা।
- এমএসিডি (MACD): মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বোঝা।
- বলিঙ্গার ব্যান্ড: বলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহার করে দামের অস্থিরতা পরিমাপ করা।
- ভলিউম বিশ্লেষণ: ভলিউম ডেটা ব্যবহার করে বাজারের শক্তি এবং দুর্বলতা নির্ণয় করা।
- ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন: ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট ব্যবহার করে বাজারের সম্ভাব্য গতিবিধি বোঝা।
- নিউজ ট্রেডিং: অর্থনৈতিক খবর এবং ঘটনার উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা।
- স্কাল্পিং: খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছোট ছোট লাভ করার জন্য ট্রেড করা।
- ডে ট্রেডিং: দিনের মধ্যে ট্রেড শুরু এবং শেষ করা।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
ডেরিভ অপশন ট্রেডিং-এ ঝুঁকি বিদ্যমান। তাই, ট্রেডিং করার সময় কিছু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করা উচিত:
- স্টপ-লস অর্ডার (Stop-loss order) ব্যবহার করা: এটি ট্রেডারের লোকসান সীমিত করতে সাহায্য করে।
- টেক-প্রফিট অর্ডার (Take-profit order) ব্যবহার করা: এটি ট্রেডারের লাভ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
- ছোট আকারের ট্রেড করা: প্রথমে ছোট আকারের ট্রেড করে অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত।
- পুরো বিনিয়োগ একসাথে ব্যবহার না করা: বিনিয়োগের একটি অংশ দিয়ে ট্রেড করা উচিত, যাতে লোকসান হলেও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি না হয়।
- মানসিক নিয়ন্ত্রণ রাখা: ট্রেডিং করার সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
ডেরিভ অপশন-এর সুবিধা
- সহজ ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাটফর্ম
- কমminimum deposit
- উচ্চ payout
- বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং উপকরণ
- শিক্ষামূলক উপকরণ
- 24/7 গ্রাহক পরিষেবা
ডেরিভ অপশন-এর অসুবিধা
- ঝুঁকি বিদ্যমান
- কিছু দেশে অবৈধ
- প্রতারণার সম্ভাবনা
উপসংহার
ডেরিভ অপশন একটি জনপ্রিয় এবং সুবিধাজনক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম। তবে, ট্রেডিং করার সময় ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সঠিক কৌশল অবলম্বন করা জরুরি। নতুন ট্রেডারদের জন্য, ডেরিভ অপশন-এর শিক্ষামূলক উপকরণ এবংডেমো অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত। মনে রাখতে হবে, ট্রেডিং একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং এতে লোকসানের সম্ভাবনা থাকে।
ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম।
| সুবিধা | অসুবিধা |
| ব্যবহারবান্ধব প্ল্যাটফর্ম | ঝুঁকি বিদ্যমান |
| কমminimum deposit | কিছু দেশে অবৈধ |
| উচ্চ payout | প্রতারণার সম্ভাবনা |
| বিভিন্ন ট্রেডিং উপকরণ | মানসিক চাপ |
| শিক্ষামূলক উপকরণ | আসক্তি তৈরি হতে পারে |
| 24/7 গ্রাহক পরিষেবা | ভুল সিদ্ধান্তের ঝুঁকি |
আরও জানতে:
- বাইনারি অপশন কৌশল
- ফোরেক্স ট্রেডিং টিপস
- সিএফডি ট্রেডিং গাইড
- ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ
- টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের মৌলিক ধারণা
- ভলিউম ভিত্তিক ট্রেডিং কৌশল
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
