ডক্টর স্টিভেন এल्डर
ডক্টর স্টিভেন এल्डर
ডক্টর স্টিভেন এल्डर একজন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ, ফিনান্সিয়াল মার্কেট বিশেষজ্ঞ এবং ট্রেডিং সাইকোলজির অগ্রণী প্রবক্তা। তিনি বিশেষ করে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ এর উপর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এल्डर তাঁর কর্মজীবনে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর লেখা বই এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রম ট্রেডারদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই নিবন্ধে ডক্টর স্টিভেন এल्डারের জীবন, কর্ম এবং ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে তাঁর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ধারণাগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
জীবন এবং কর্মজীবন স্টিভেন এल्डर ১৯৫২ সালে নিউ ইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনান্স নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে দর্শন (Ph.D) ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করার পর তিনি ফিনান্সিয়াল মার্কেটে যোগদান করেন এবং একজন সফল ট্রেডার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন হেজ ফান্ড এবং বিনিয়োগ সংস্থার সাথে কাজ করেছেন।
ডক্টর এल्डर শুধুমাত্র একজন সফল ট্রেডার ছিলেন না, তিনি একজন নিবেদিত শিক্ষক এবং লেখকও ছিলেন। তিনি সারা বিশ্বে ট্রেডিং এবং বিনিয়োগের উপর সেমিনার ও কর্মশালা পরিচালনা করেছেন। তাঁর লেখা বেশ কয়েকটি বই ট্রেডারদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ধারণা এবং কৌশল ডক্টর স্টিভেন এल्डर ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুন ধারণা এবং কৌশল প্রবর্তন করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
১. মার্কেট সাইকোলজি (Market Psychology): এल्डर বিশ্বাস করতেন যে ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে মানুষের মনস্তত্ত্ব একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি ট্রেডারদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করতেন। তাঁর মতে, ভয় এবং লোভ - এই দুটি প্রধান আবেগ ট্রেডারদের ভুল পথে পরিচালিত করতে পারে। ট্রেডিং সাইকোলজি ভালোভাবে বুঝতে পারলে একজন ট্রেডার সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
২. ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস (Volume Spread Analysis): ডক্টর এल्डারের সবচেয়ে বিখ্যাত অবদানগুলোর মধ্যে একটি হলো ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস। এই কৌশলটি ভলিউম এবং প্রাইস এর মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে মার্কেটের গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করে। ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিসের মূল ধারণা হলো, যখন দাম এবং ভলিউম উভয়ই বৃদ্ধি পায়, তখন এটি একটি শক্তিশালী বুলিশ সংকেত এবং যখন দাম বৃদ্ধি পায় কিন্তু ভলিউম কমে যায়, তখন এটি একটি দুর্বল বুলিশ সংকেত।
| ভলিউম স্প্রেড ! ব্যাখ্যা | দাম এবং ভলিউম দুটোই বাড়ছে, বুলিশ সংকেত | দাম এবং ভলিউম দুটোই কমছে, বিয়ারিশ সংকেত | দাম বাড়ছে কিন্তু ভলিউম স্থিতিশীল, নিরপেক্ষ সংকেত | ভলিউম বাড়ছে কিন্তু দাম স্থিতিশীল, সম্ভাব্য বুলিশ সংকেত |
|---|
৩. ফোরসিজড মুভমেন্ট (Forced Movement): এल्डर "ফোরসিজড মুভমেন্ট" নামক একটি ধারণার প্রবর্তন করেন, যা মার্কেটের শক্তিশালী গতিবিধি চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। যখন মার্কেটে বড় ধরনের গ্যাপ তৈরি হয় এবং ভলিউম বৃদ্ধি পায়, তখন এটিকে ফোরসিজড মুভমেন্ট বলা হয়। এই ধরনের মুভমেন্ট সাধারণত একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের সূচনা করে। গ্যাপ ট্রেডিং কৌশল ব্যবহার করে এই মুভমেন্টের সুবিধা নেওয়া যায়।
৪. রিলেটিভ স্ট্রেংথ (Relative Strength): ডক্টর এल्डर রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইনডেক্স (RSI) এর ব্যবহারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। RSI একটি মোমেন্টাম নির্দেশক যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেয়ারের দামের পরিবর্তনের হার পরিমাপ করে। এর মাধ্যমে অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির পরিস্থিতি চিহ্নিত করা যায়।
৫. টাইম প্রাইস ট্রেন্ড (Time, Price, and Volume): এल्डर মনে করতেন যে সফল ট্রেডিংয়ের জন্য সময়, দাম এবং ভলিউম - এই তিনটি উপাদানের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা জরুরি। তিনি এই তিনটি উপাদানের সমন্বিত বিশ্লেষণের মাধ্যমে মার্কেটের ভবিষ্যৎ গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পেতে উৎসাহিত করতেন।
৬. এल्डर রুলস (Elder Rules): ডক্টর এल्डर তিনটি মূল নিয়ম তৈরি করেন যা ট্রেডারদের এন্ট্রি এবং এক্সিট পয়েন্ট নির্ধারণে সাহায্য করে:
- প্রথম নিয়ম: ট্রেন্ডের নিশ্চিতকরণ (Confirm the Trend)।
- দ্বিতীয় নিয়ম: ক্লাস্টার বিশ্লেষণ (Analyze Clusters)।
- তৃতীয় নিয়ম: ক্রিটিক্যাল জোন চিহ্নিতকরণ (Identify Critical Zones)।
ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন এবং চার্ট প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে এই নিয়মগুলো কাজে লাগানো যায়।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ডক্টর এल्डারের কৌশল ডক্টর স্টিভেন এल्डারের কৌশলগুলো বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। বাইনারি অপশন ট্রেডিং হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে, সেই বিষয়ে পূর্বাভাস দেওয়া। এখানে ডক্টর এल्डারের কিছু কৌশল কিভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে তা আলোচনা করা হলো:
১. ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস: বাইনারি অপশনে ট্রেড করার সময়, ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে মার্কেটের গতিবিধি বোঝা যায়। উদাহরণস্বরূপ, যদি দেখা যায় যে দাম বাড়ছে এবং ভলিউমও বাড়ছে, তাহলে একটি কল অপশন (Call Option) কেনা যেতে পারে। বিপরীতে, যদি দাম কমতে থাকে এবং ভলিউমও কমতে থাকে, তাহলে একটি পুট অপশন (Put Option) কেনা যেতে পারে।
২. ফোরসিজড মুভমেন্ট: ফোরসিজড মুভমেন্ট চিহ্নিত করে বাইনারি অপশনে দ্রুত ট্রেড করা যেতে পারে। যখন মার্কেটে বড় গ্যাপ তৈরি হয়, তখন সেই দিকের অপশনটি বেছে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৩. রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইনডেক্স (RSI): RSI ব্যবহার করে ওভারবট (Overbought) এবং ওভারসোল্ড (Oversold) পরিস্থিতি চিহ্নিত করা যায়। যদি RSI ৭০-এর উপরে যায়, তাহলে এটি ওভারবট পরিস্থিতি নির্দেশ করে এবং পুট অপশন কেনার সুযোগ তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে, যদি RSI ৩০-এর নিচে নেমে যায়, তাহলে এটি ওভারসোল্ড পরিস্থিতি নির্দেশ করে এবং কল অপশন কেনার সুযোগ তৈরি হতে পারে।
৪. মার্কেট সাইকোলজি: বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। ডক্টর এल्डर মনে করতেন, ট্রেডারদের উচিত ঠান্ডা মাথায় এবং যুক্তিপূর্ণভাবে ট্রেড করা। ভয় বা লোভের বশে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management) ডক্টর স্টিভেন এल्डर সবসময় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিতেন। তিনি মনে করতেন, ট্রেডিংয়ে সফল হতে হলে যথাযথ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করা জরুরি। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো:
- ছোট বিনিয়োগ: প্রতিটি ট্রেডে আপনার মোট মূলধনের একটি ছোট অংশ বিনিয়োগ করুন।
- স্টপ লস (Stop Loss) ব্যবহার: যদিও বাইনারি অপশনে স্টপ লস সরাসরি ব্যবহার করা যায় না, তবে আপনি আপনার ট্রেডিং কৌশল এমনভাবে তৈরি করতে পারেন যাতে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ট্রেড হেরে গেলে আপনি ট্রেডিং বন্ধ করে দেন।
- বৈচিত্র্যকরণ (Diversification): বিভিন্ন ধরনের সম্পদে বিনিয়োগ করুন, যাতে কোনো একটি সম্পদের দাম কমলেও আপনার সামগ্রিক বিনিয়োগে বড় ধরনের প্রভাব না পড়ে।
- মানসিক শৃঙ্খলা: আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ট্রেডিংয়ের নিয়মকানুন মেনে চলুন।
শিক্ষা এবং বই ডক্টর স্টিভেন এल्डर বেশ কিছু মূল্যবান বই লিখেছেন, যা ট্রেডারদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু বই হলো:
- Trading for a Living: Psychology, Trading Tactics, Money Management
- The New Science of Technical Analysis
- Future Tools
- Market Psychology
এই বইগুলোতে তিনি ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন দিক, যেমন - টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ভলিউম বিশ্লেষণ, মার্কেট সাইকোলজি এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
উপসংহার ডক্টর স্টিভেন এल्डर ছিলেন একজন অসাধারণ অর্থনীতিবিদ এবং ফিনান্সিয়াল মার্কেট বিশেষজ্ঞ। তাঁর দেওয়া ধারণা এবং কৌশলগুলো ট্রেডারদের জন্য আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে ভলিউম স্প্রেড অ্যানালাইসিস এবং মার্কেট সাইকোলজির উপর তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রেও তাঁর কৌশলগুলো ব্যবহার করে সফল হওয়া সম্ভব। তবে, মনে রাখতে হবে যে ট্রেডিংয়ে ঝুঁকি রয়েছে এবং সফল হতে হলে যথাযথ জ্ঞান, দক্ষতা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।
ট্রেডিং কৌশল ফিনান্সিয়াল মার্কেট বিনিয়োগ টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর মার্কেট বিশ্লেষণ ঝুঁকি মূল্যায়ন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম অর্থনৈতিক সূচক শেয়ার বাজার বন্ড মার্কেট ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট কমোডিটি মার্কেট ডেরিভেটিভস ফিউচারস ট্রেডিং অপশন ট্রেডিং মার্জিন ট্রেডিং পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা আর্থিক পরিকল্পনা বিনিয়োগ ব্যাংক হেজ ফান্ড মিউচুয়াল ফান্ড
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
