টেস্ট-driven ডেভেলপমেন্ট

টেস্ট-চালিত উন্নয়ন

টেস্ট-চালিত উন্নয়ন (Test-driven development বা TDD) একটি সফটওয়্যার উন্নয়ন প্রক্রিয়া যেখানে কোড লেখার আগে ইউনিট টেস্ট লেখা হয়। এটি একটি পুনরাবৃত্তিমূলক প্রক্রিয়া, যেখানে নতুন বৈশিষ্ট্য তৈরি করার সময় বা বিদ্যমান কোডে পরিবর্তন করার সময় প্রথমে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা তৈরি করা হয়, তারপর সেই পরীক্ষাগুলি পাশ করার জন্য ন্যূনতম পরিমাণ কোড লেখা হয়। এই প্রক্রিয়াটি নিশ্চিত করে যে কোডটি প্রত্যাশিতভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতে কোনো পরিবর্তন করা হলে তা যেন বিদ্যমান কার্যকারিতা নষ্ট না করে।

টিডিডি-র মূল নীতি

টিডিডি তিনটি প্রধান নীতি অনুসরণ করে:

• লাল-সবুজ-রিবন (Red-Green-Refactor): এটি টিডিডি চক্রের মূল ভিত্তি।

   *   লাল (Red): প্রথমে একটি স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা লিখুন যা ব্যর্থ হবে। কারণ, এখনো কোনো কোড নেই যা এই পরীক্ষাটি পাশ করতে পারবে। এই ধাপটি নিশ্চিত করে যে পরীক্ষাটি সঠিকভাবে কাজ করছে এবং ব্যর্থ হওয়ার কারণটি যৌক্তিক।
   *   সবুজ (Green): এরপর, ন্যূনতম পরিমাণ কোড লিখুন যা পরীক্ষাটিকে পাশ করবে। এখানে লক্ষ্য হল দ্রুত একটি কার্যকরী সমাধান তৈরি করা, কোডের গুণমান বা কার্যকারিতা নিয়ে চিন্তা না করা।
   *   রিবন (Refactor): সবশেষে, কোডটিকে পরিমার্জন করুন। কোডের গঠন উন্নত করুন, অপ্রয়োজনীয় অংশগুলি সরিয়ে ফেলুন এবং এটিকে আরও সহজবোধ্য করুন। এই সময় পরীক্ষাগুলি নিশ্চিত করবে যে পরিমার্জনের ফলে কোডের কার্যকারিতা পরিবর্তিত হয়নি।

• প্রথমে পরীক্ষা, পরে কোড: টিডিডি-র মূল ধারণা হল কোড লেখার আগে পরীক্ষা লেখা। এটি ডেভেলপারদেরকে তাদের কোডের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আগে থেকে ভাবতে বাধ্য করে এবং ভুল ডিজাইন এড়াতে সাহায্য করে।

• ছোট এবং স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা: টিডিডি-তে লেখা পরীক্ষাগুলি ছোট এবং স্বয়ংক্রিয় হওয়া উচিত। প্রতিটি পরীক্ষা একটি নির্দিষ্ট কার্যকারিতা যাচাই করবে এবং খুব দ্রুত চালানো যাবে।

টিডিডি-র সুবিধা

• উচ্চ কোয়ালিটি কোড: টিডিডি কোডের গুণমান উন্নত করে। পরীক্ষার মাধ্যমে কোডের প্রতিটি অংশ যাচাই করা হয় বলে ত্রুটিগুলি দ্রুত ধরা পড়ে এবং সমাধান করা যায়।
• কম ডিবাগিং: যেহেতু কোড লেখার আগেই পরীক্ষা লেখা হয়, তাই ডিবাগিংয়ের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায়।
• সহজ রক্ষণাবেক্ষণ: টিডিডি-র মাধ্যমে তৈরি করা কোড সহজে বোঝা যায় এবং পরিবর্তন করা যায়। পরীক্ষাগুলি নিশ্চিত করে যে পরিবর্তনের ফলে অন্য কোনো অংশে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
• ভালো ডিজাইন: টিডিডি ডেভেলপারদেরকে ভালো ডিজাইন করতে উৎসাহিত করে। কোড লেখার আগে পরীক্ষার কথা চিন্তা করলে একটি সুস্পষ্ট এবং কার্যকরী ডিজাইন তৈরি করা সহজ হয়।
• আত্মবিশ্বাস: টিডিডি ডেভেলপারদের তাদের কোড সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। পরীক্ষাগুলি নিশ্চিত করে যে কোডটি সঠিকভাবে কাজ করছে, তাই পরিবর্তনের সময় ঝুঁকি কম থাকে।
• ডকুমেন্টেশন: স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষাগুলি কার্যকরী ডকুমেন্টেশন হিসাবে কাজ করে, যা কোডের উদ্দেশ্য এবং ব্যবহারবিধি ব্যাখ্যা করে।

টিডিডি-র অসুবিধা

• সময়সাপেক্ষ: টিডিডি-তে কোড লেখার আগে পরীক্ষা লিখতে হয়, যা উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে।
• শেখার кривая: টিডিডি শিখতে এবং অভ্যস্ত হতে সময় লাগে। ডেভেলপারদেরকে পরীক্ষার কাঠামো এবং পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হয়।
• অতিরিক্ত জটিলতা: কিছু ক্ষেত্রে, টিডিডি কোডকে অতিরিক্ত জটিল করে তুলতে পারে, বিশেষ করে যদি পরীক্ষাগুলি সঠিকভাবে লেখা না হয়।
• পুরানো কোডের জন্য কঠিন: টিডিডি পুরনো কোডের জন্য প্রয়োগ করা কঠিন হতে পারে, যেখানে কোনো পরীক্ষা নেই।

টিডিডি কিভাবে কাজ করে? একটি উদাহরণ

ধরা যাক, আমরা একটি সহজ ফাংশন তৈরি করতে চাই যা দুটি সংখ্যা যোগ করে। টিডিডি ব্যবহার করে এটি কিভাবে করা যায় তার একটি উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:

১. লাল: প্রথমে, আমরা একটি পরীক্ষা লিখি যা যাচাই করবে যে ফাংশনটি দুটি সংখ্যা যোগ করে সঠিক ফলাফল দেয়।

``` assertEquals(5, add(2, 3)); ```

এই পরীক্ষাটি ব্যর্থ হবে, কারণ `add` ফাংশনটি এখনো তৈরি করা হয়নি।

২. সবুজ: এরপর, আমরা `add` ফাংশনটি তৈরি করি যা পরীক্ষাটিকে পাশ করবে।

``` function add(a, b) {

 return a + b;

} ```

এখন পরীক্ষাটি পাশ করবে।

৩. রিবন: সবশেষে, আমরা কোডটিকে পরিমার্জন করি। এই ক্ষেত্রে, কোডটি ইতিমধ্যেই সহজ এবং সুস্পষ্ট, তাই কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই।

এইভাবে, টিডিডি চক্রটি পুনরাবৃত্তি হয়। প্রতিটি নতুন বৈশিষ্ট্য বা পরিবর্তনের জন্য, আমরা প্রথমে পরীক্ষা লিখি, তারপর কোড লিখি এবং সবশেষে কোডটিকে পরিমার্জন করি।

টিডিডি-র জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জাম

বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষার জন্য টিডিডি সমর্থন করে এমন অনেক সরঞ্জাম রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় সরঞ্জাম হলো:

• JUnit: জাভা-র জন্য একটি জনপ্রিয় ইউনিট টেস্টিং ফ্রেমওয়ার্ক। (জাভা)
• NUnit: ডট নেট-এর জন্য একটি ইউনিট টেস্টিং ফ্রেমওয়ার্ক। (ডট নেট)
• pytest: পাইথনের জন্য একটি শক্তিশালী টেস্টিং ফ্রেমওয়ার্ক। (পাইথন)
• RSpec: রুবি-র জন্য একটি আচরণ-চালিত উন্নয়ন (BDD) ফ্রেমওয়ার্ক। (রুবি)
• Mockito: জাভা-র জন্য একটি মকিং ফ্রেমওয়ার্ক, যা পরীক্ষার সময় নির্ভরতাগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত হয়। (মকিং)

টিডিডি এবং অন্যান্য উন্নয়ন পদ্ধতি

• স্ক্রাম (Scrum): টিডিডি স্ক্রামের সাথে খুব ভালোভাবে কাজ করে। স্ক্রামের প্রতিটি স্প্রিন্টে, ডেভেলপাররা টিডিডি ব্যবহার করে নতুন বৈশিষ্ট্য তৈরি করতে পারে। (স্ক্রাম)
• কানবান (Kanban): টিডিডি কানবানের সাথেও ব্যবহার করা যেতে পারে। কানবানের ক্রমাগত ডেলিভারি প্রক্রিয়ায়, টিডিডি কোডের গুণমান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। (কানবান)
• আচরণ-চালিত উন্নয়ন (BDD): বিডিডি টিডিডি-র একটি সম্প্রসারিত রূপ, যেখানে পরীক্ষাগুলি ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা হয়। (আচরণ-চালিত উন্নয়ন)

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে টিডিডি-র সম্পর্ক

যদিও টিডিডি মূলত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের একটি পদ্ধতি, এর মূলনীতিগুলি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। এখানে, "কোড" হল আপনার ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি এবং "টেস্ট" হল আপনার ব্যাকটেস্টিং এবং পেপার ট্রেডিং ফলাফল।

• লাল: একটি ট্রেডিং কৌশল তৈরি করুন এবং ঐতিহাসিক ডেটার উপর ব্যাকটেস্ট করুন। যদি ফলাফল হতাশাজনক হয়, তবে কৌশলটি "ব্যর্থ" হয়েছে।
• সবুজ: কৌশলটিকে সামান্য পরিবর্তন করুন যতক্ষণ না এটি ঐতিহাসিক ডেটাতে লাভজনক ফলাফল দেয়।
• রিবন: কৌশলটিকে অপ্টিমাইজ করুন এবং বিভিন্ন বাজারের পরিস্থিতিতে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করুন।

এইভাবে, টিডিডি-র নীতিগুলি ব্যবহার করে, আপনি একটি নির্ভরযোগ্য এবং লাভজনক ট্রেডিং কৌশল তৈরি করতে পারেন।

টিডিডি-র উন্নত ধারণা

• মকিং (Mocking): মকিং হল পরীক্ষার সময় নির্ভরতাগুলি প্রতিস্থাপন করার একটি কৌশল। এটি আপনাকে অন্যান্য অংশের উপর নির্ভর না করে একটি নির্দিষ্ট অংশের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে দেয়। (মকিং)
• স্টাবিং (Stubbing): স্টাবিং হল মকিংয়ের একটি সরল রূপ, যেখানে আপনি একটি নির্ভরতার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করেন।
• ডাবল (Doubles): ডাবল হল মকিং এবং স্টাবিংয়ের একটি সাধারণ শব্দ, যা পরীক্ষার সময় ব্যবহৃত হয়।
• কভারেজ (Coverage): কোড কভারেজ হল আপনার কোডের কত শতাংশ পরীক্ষা দ্বারা আচ্ছাদিত হয়েছে তার একটি পরিমাপ। উচ্চ কভারেজ মানে আপনার কোডের বেশিরভাগ অংশ পরীক্ষা করা হয়েছে। (কোড কভারেজ)
• ফিউচার্স ট্রেডিং (Futures Trading): টিডিডি কৌশলগুলি ফিউচার্স ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেতে পারে, যেখানে ঐতিহাসিক ডেটা বিশ্লেষণ করে ট্রেডিং অ্যালগরিদম তৈরি করা হয়। (ফিউচার্স ট্রেডিং)
• টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ (Technical Analysis): টিডিডি-র মাধ্যমে তৈরি করা ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজিগুলি টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা যেতে পারে। (টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ)
• ভলিউম বিশ্লেষণ (Volume Analysis): ভলিউম বিশ্লেষণের ফলাফলগুলি টিডিডি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই করা যেতে পারে। (ভলিউম বিশ্লেষণ)
• ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management): টিডিডি-র মাধ্যমে তৈরি করা ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজিগুলিতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নিয়মগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। (ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা)
• পোর্টফোলিও অপটিমাইজেশন (Portfolio Optimization): টিডিডি কৌশলগুলি পোর্টফোলিও অপটিমাইজেশনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। (পোর্টফোলিও অপটিমাইজেশন)
• অ্যালগরিদমিক ট্রেডিং (Algorithmic Trading): টিডিডি অ্যালগরিদমিক ট্রেডিং সিস্টেমের উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (অ্যালগরিদমিক ট্রেডিং)

উপসংহার

টেস্ট-চালিত উন্নয়ন একটি শক্তিশালী পদ্ধতি যা উচ্চ মানের কোড তৈরি করতে, ডিবাগিং কমাতে এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজ করতে সাহায্য করে। যদিও এটি শিখতে এবং প্রয়োগ করতে কিছুটা সময় লাগে, তবে এর সুবিধাগুলি দীর্ঘমেয়াদে অনেক বেশি। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মতো ক্ষেত্রগুলোতেও টিডিডি-র নীতিগুলি প্রয়োগ করে নির্ভরযোগ্য এবং লাভজনক কৌশল তৈরি করা সম্ভব।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ