জ্যাকসন পোলক

জ্যাকসন পোলক (Jackson Pollock, জন্মকাল ২৮ জানুয়ারি, ১৯১২ – ১১ আগস্ট, ১৯৫৬) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন প্রভাবশালী মার্কিন চিত্রশিল্পী। তিনি অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজম আন্দোলনের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। পোলকের উদ্ভাবনী চিত্র অঙ্কন কৌশল এবং বৃহৎ আকারের ক্যানভাসে রঙের ব্যবহার তাকে আধুনিক শিল্পের ইতিহাসে এক স্বতন্ত্র স্থান দিয়েছে।

জীবনী

পোলকের জন্ম ১৯১২ সালে ওয়াইওমিং-এর কডি শহরে। তার পরিবার পরবর্তীতে অ্যারিজোনা ও ক্যালিফোর্নিয়াতে বসবাস করে। পোলক প্রথমে লস অ্যাঞ্জেলেস-এর ম্যানুয়াল আর্টস হাই স্কুলে এবং পরে নিউ ইয়র্ক শহরের আর্ট স্টুডেন্টস লিগ-এ পড়াশোনা করেন। এই সময়ে তিনি টমাস হার্ট বেনটন-এর মতো শিল্পীদের দ্বারা প্রভাবিত হন। ১৯৩০-এর দশকে তিনি রিজিওনালিস্ট ঘরানার ছবি আঁকতে শুরু করেন, যেখানে আমেরিকান জীবনের গ্রামীণ দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হতো।

পোলকের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসে ১৯৪০-এর দশকে। এই সময়ে তিনি অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট-এর দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং নতুন নতুন কৌশল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। তিনি ক্যানভাসটিকে মেঝেতে রেখে তার উপর রং ফোঁটা ফোঁটা করে ফেলতে শুরু করেন, যা ‘ড্রিপ পেইন্টিং’ নামে পরিচিত। এই কৌশলটি তাকে দ্রুত পরিচিতি এনে দেয় এবং তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন।

পোলকের ব্যক্তিগত জীবন ছিলTurbulent। তিনি অ্যালকোহল-এর প্রতি আসক্ত ছিলেন এবং মানসিক অবসাদে ভুগতেন। ১৯৫৬ সালে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।

শিল্পকর্মের বৈশিষ্ট্য

জ্যাকসন পোলকের শিল্পকর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

অ্যাবস্ট্রাকশন : পোলকের ছবিগুলোতে কোনো নির্দিষ্ট বস্তু বা দৃশ্যেরrepresentation থাকে না। তিনি রং, রেখা এবং টেক্সচারের মাধ্যমে আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশ করতেন।
ড্রিপ পেইন্টিং : এটি পোলকের সবচেয়ে বিখ্যাত কৌশল। এই পদ্ধতিতে তিনি ক্যানভাসকে মেঝেতে রেখে রং ফোঁটা ফোঁটা করে ফেলতেন, স্প্ল্যাটার করতেন এবং ছিটাতেন।
বৃহৎ আকার : পোলক সাধারণত খুব বড় আকারের ক্যানভাস ব্যবহার করতেন, যা দর্শকদের ছবিটির মধ্যে নিমজ্জিত হওয়ার অনুভূতি দিত।
অল-ওভার কম্পোজিশন : তার ছবিগুলোতে কোনো নির্দিষ্ট ফোকাল পয়েন্ট থাকে না। পুরো ক্যানভাস জুড়েই রঙের বিন্যাস সমানভাবে ছড়িয়ে থাকে।
স্বয়ংক্রিয়তা : পোলক বিশ্বাস করতেন যে শিল্পকর্ম তৈরি করার সময় সচেতন মনকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত নয়। তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে রং ফোঁটা ফোঁটা করে ফেলতে দিতেন, যা তার অবচেতন মনের প্রকাশ ছিল।

উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম

পোলকের উল্লেখযোগ্য কিছু শিল্পকর্মের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:

জ্যাকসন পোলকের উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম
শিল্পকর্মের নাম	বছর	বর্তমান অবস্থান
She Wolf	১৯২৭	private collection
Guardians of the Seed	১৯৩৪	private collection
Number 1, 1950 (Lavender Mist)	১৯৫০	ন্যাশনাল গ্যালারি অফ আর্ট, ওয়াশিংটন, ডি.সি.
Number 1, 1950 (Autumn Rhythm (Number 30, 1950))	১৯৫০	মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউ ইয়র্ক
Number 1, 1951 (Blue Poles)	১৯৫১	ন্যাশনাল গ্যালারি অফ অস্ট্রেলিয়া, ক্যানবেরা
Convergence	১৯৫২	অ্যালবার্টিনা, ভিয়েনা
Silver Cloud	১৯৫৩	মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট, নিউ ইয়র্ক

পোলকের কৌশল এবং প্রভাব

পোলকের কৌশল আধুনিক শিল্পের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তিনি সুরিয়ালিজম এবং এক্সপ্রেশনিজম-এর ধারণাগুলো ব্যবহার করে নতুন একটি শৈলী তৈরি করেন। তার কাজের মাধ্যমে শিল্পীরা ক্যানভাসের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে এবং নতুন মাধ্যম ও কৌশল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে উৎসাহিত হন।

পোলকের ‘ড্রিপ পেইন্টিং’ কৌশলটি অ্যাকশন পেইন্টিং নামেও পরিচিত, যেখানে ছবি আঁকার প্রক্রিয়াটি শিল্পের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই কৌশলটি হার্ভেস্টর এবং উইলিয়াম ডি কুননিং-এর মতো অন্যান্য শিল্পীদের প্রভাবিত করে।

পোলকের কাজের মাধ্যমে মার্কিন শিল্প আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি লাভ করে এবং নিউ ইয়র্ক আধুনিক শিল্পের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

পোলকের কাজের সমালোচনা

পোলকের কাজ সমালোচকদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। কেউ কেউ তার কাজকে এলোমেলো এবং অর্থহীন বলে সমালোচনা করেন, আবার কেউ কেউ তার উদ্ভাবনী কৌশল এবং আবেগের গভীরতার প্রশংসা করেন।

সমালোচকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন ক্লেমেন্ট গ্রিনবার্গ, যিনি পোলকের কাজের পক্ষে জোরালো সমর্থন করেছিলেন, এবং রবার্ট রোজেনব্লুম, যিনি পোলকের কাজের কিছু দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে জ্যাকসন পোলকের শৈলীর সম্পর্ক

যদিও আপাতদৃষ্টিতে জ্যাকসন পোলকের চিত্রকলার সাথে বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর কোনো সম্পর্ক নেই, তবে উভয় ক্ষেত্রেই কিছু মৌলিক মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ঝুঁকি গ্রহণ : পোলক তার ক্যানভাসে রং ছিটানোর সময় একটি নির্দিষ্ট ঝুঁকি নিতেন, কারণ তিনি আগে থেকে ফলাফল সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন না। একইভাবে, বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা অনুমান করে ঝুঁকি গ্রহণ করেন।
স্বতঃস্ফূর্ততা : পোলকের শিল্পকর্মে স্বতঃস্ফূর্ততা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তিনি কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই রং ফোঁটা ফোঁটা করে ফেলতে দিতেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং বাজারের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে হয়।
বিন্যাস : পোলকের ছবিগুলোতে রঙের একটি জটিল বিন্যাস দেখা যায়, যেখানে প্রতিটি ফোঁটা একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন তৈরি করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর এবং চার্ট প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ট্রেড করার জন্য একটি বিন্যাস তৈরি করা হয়।
সম্ভাব্যতা : পোলকের প্রতিটি কাজ একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি করে, যেখানে রং এবং টেক্সচারের অপ্রত্যাশিত সংমিশ্রণ দেখা যায়। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-ও সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, যেখানে বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট ঘটনার ঘটার সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করে ট্রেড করেন।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রে ভলিউম বিশ্লেষণ, ট্রেন্ড লাইন, মুভিং এভারেজ, আরএসআই, MACD, ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট, ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, বোলিঙ্গার ব্যান্ডস, স্টোকাস্টিক অসিলেটর, এলিয়ট ওয়েভ থিওরি, ডাউন ট্রেন্ড, আপট্রেন্ড, সাইডওয়েজ মার্কেট, সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স, ব্রেকআউট, রিভার্সাল, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পুশ অপশন, পুল অপশন ইত্যাদি কৌশলগুলো ব্যবহার করা হয়। এই কৌশলগুলো পোলকের কাজের মতোই একটি জটিল বিন্যাস তৈরি করে, যেখানে সাফল্যের সম্ভাবনা নির্ভর করে সঠিক বিশ্লেষণের উপর।

উপসংহার

জ্যাকসন পোলক ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পী। তার উদ্ভাবনী কৌশল এবং আবেগময় চিত্রকর্ম আধুনিক শিল্পের ধারাকে নতুন পথে চালিত করেছে। পোলকের কাজ আজও শিল্পপ্রেমীদের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয় এবং অনুপ্রেরণাদায়ক।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ