জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে জাবি) বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা বিভাগের সাভার উপজেলায় অবস্থিত। জাবি শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এটি একটি সংস্কৃতি, একটি ইতিহাস এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি।

ইতিহাস

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-এর প্রেক্ষাপটে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নির্দেশে ১৯৭০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তবে, মুক্তিযুদ্ধের কারণে কার্যক্রম শুরু হতে বিলম্ব হয়। ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। নামকরণ করা হয় জাহাঙ্গীর নামক মুঘল সম্রাটের নামানুসারে, যিনি শিল্পকলা ও সংস্কৃতি ভালোবাসতেন।

প্রতিষ্ঠার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছিল প্রধান। পরবর্তীতে বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসায় প্রশাসন, আইন, এবং অন্যান্য অনুষদ যুক্ত হয়।

অবস্থান ও ক্যাম্পাস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ২০০ একর জমিতে বিস্তৃত। এর মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ এটিকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সন্নিকটে অবস্থিত। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ, পুকুর, এবং প্রচুর গাছপালা যা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করে।

ক্যাম্পাসের উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:

নতুন ক্যাম্পাস: এখানে আধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন দেখা যায়।
পুরনো ক্যাম্পাস: ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যপূর্ণ ভবনগুলো এখানে অবস্থিত।
ছাত্রাবাস এলাকা: শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে এখানে।
শিক্ষক আবাসিক এলাকা: শান্ত ও সবুজ পরিবেশে শিক্ষকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার: এখানে বিশাল সংখ্যক বই, জার্নাল ও অন্যান্য পাঠ্য উপকরণ রয়েছে।
ঝর্ণা ঝিল: এটি শিক্ষার্থীদের কাছে একটি জনপ্রিয় স্থান।

অনুষদ ও বিভাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে আটটি অনুষদ এবং বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। প্রতিটি অনুষদ নিজস্ব ক্ষেত্রে শিক্ষা ও গবেষণার মান বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। নিচে অনুষদ এবং বিভাগগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো:

অনুষদ ও বিভাগ
কলা ও মানবিক অনুষদ	বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, দর্শন, প্রত্নতত্ত্ব, সংগীত, নাট্যকলা, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগ।
বিজ্ঞান অনুষদ	গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব বিভাগ।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ	অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজবিজ্ঞান, লোক প্রশাসন বিভাগ।
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ	ব্যবসায় প্রশাসন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগ।
প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ	কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, পুরকৌশল, স্থাপত্য বিভাগ।
আইন অনুষদ	আইন ও বিচার বিভাগ।
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ	(বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন)
চারুকলা অনুষদ	চিত্রकला, ভাস্কর্য, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ।

শিক্ষাব্যবস্থা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়। এখানে ক্রেডিট ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়। প্রতিটি বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং শিক্ষকগণ তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন।

স্নাতক (সম্মান): সাধারণত ৪ বছর মেয়াদী।
স্নাতকোত্তর: ১-২ বছর মেয়াদী।
পিএইচডি: গবেষণার উপর ভিত্তি করে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

শিক্ষার্থী জীবন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জীবন অত্যন্ত vibrant এবং শিক্ষাবান্ধব। এখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিতর্ক ক্লাব, এবং অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রম রয়েছে। শিক্ষার্থীরা এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের talent বিকাশ করার সুযোগ পায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু): এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন: সংগীত, নাটক, নৃত্য, এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
debate club: বিতর্ক এবং আলোচনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে critical thinking skills উন্নত করে।
স্কাউটিং এবং বিএনসিসি: শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্বগুণাবলী বিকাশে সহায়ক।

গবেষণা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান। এখানে বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিতভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে।

গবেষণা কেন্দ্রসমূহ: জনসংখ্যা গবেষণা কেন্দ্র, পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্র, ভাষা গবেষণা কেন্দ্র ইত্যাদি।
জার্নাল: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জার্নাল একটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা।

উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহু গুণীজন graduate হয়েছেন, যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: বাংলাদেশ-এর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
আহমদ ছফা: বিখ্যাত লেখক ও বুদ্ধিজীবী।
মতিউর রহমান: বিখ্যাত সাংবাদিক।
ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী: বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ভাষা বিজ্ঞানী।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে আরও উন্নত শিক্ষা ও গবেষণার মান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

নতুন অনুষদ ও বিভাগ চালু করা: বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
গবেষণার জন্য আরও funding: শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার জন্য আরও বেশি funding-এর ব্যবস্থা করা হবে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সহযোগিতা বাড়ানো হবে।
ডিজিটালাইজেশন: শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে সম্পর্ক (বিশেষ সংযোজন)

যদিও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে জড়িত নয়, তবে এখানকার অর্থনীতি, পরিসংখ্যান, এবং গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে আগ্রহী হতে পারে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি আর্থিক বিনিয়োগ কৌশল, যেখানে বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের মূল্য বাড়বে নাকি কমবে তা অনুমান করে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের কিছু মৌলিক ধারণা:

কল অপশন (Call Option): যদি বিনিয়োগকারী মনে করেন যে সম্পদের মূল্য বাড়বে। (Option trading)
পুট অপশন (Put Option): যদি বিনিয়োগকারী মনে করেন যে সম্পদের মূল্য কমবে। (Trading strategies)
পেইআউট (Payout): সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করলে বিনিয়োগকারী যে পরিমাণ অর্থ লাভ করেন। (Risk management)
এক্সপায়ারি টাইম (Expiry Time): একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা, যার মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করতে হয়। (Technical analysis)

এই ধরনের ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি, তাই শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে ভালোভাবে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। Fundamental analysis, chart patterns, এবং candlestick patterns সম্পর্কে ধারণা রাখা দরকার। এছাড়াও, volume analysis এবং moving averages এর মতো technical indicators ব্যবহার করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

দাবিত্যাগ: বাইনারি অপশন ট্রেডিং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং এতে মূলধন হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে বিনিয়োগ করার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ