জাভাস্ক্রিপ্ট প্রোগ্রামিং ভাষা

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

জাভাস্ক্রিপ্ট প্রোগ্রামিং ভাষা

ভূমিকা

জাভাস্ক্রিপ্ট একটি বহুমাত্রিক এবং শক্তিশালী প্রোগ্রামিং ভাষা। এটি মূলত ওয়েব ডেভেলপমেন্টের জন্য তৈরি করা হলেও, বর্তমানে সার্ভার-সাইড প্রোগ্রামিং, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট এবং ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতেও ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯৯৫ সালে ব্রেডন আইচ এটি তৈরি করেন। জাভাস্ক্রিপ্ট ক্লায়েন্ট-সাইড স্ক্রিপ্টিংয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষাগুলির মধ্যে অন্যতম, যা ওয়েব পেজগুলিকে ইন্টারেক্টিভ এবং ডায়নামিক করে তোলে।

জাভাস্ক্রিপ্টের ইতিহাস

জাভাস্ক্রিপ্ট এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৫ সালে, নেটসস্কেপ নেভিগেটর ব্রাউজারের জন্য একটি স্ক্রিপ্টিং ভাষা হিসেবে। এর প্রাথমিক নাম ছিল ‘মউজা’ (Mocha), পরে ‘লাইভস্ক্রিপ্ট’ (LiveScript) নামকরণ করা হয়। পরবর্তীতে, সান মাইক্রোসিস্টেমসের জাভা ভাষার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ করার জন্য এর নাম পরিবর্তন করে জাভাস্ক্রিপ্ট রাখা হয়। তবে, জাভাস্ক্রিপ্ট এবং জাভা দুটি ভিন্ন ভাষা। সময়ের সাথে সাথে, জাভাস্ক্রিপ্ট ECMA International দ্বারা ECMAScript নামক একটি স্ট্যান্ডার্ডের অধীনে বিকশিত হয়েছে। ECMAScript এর বিভিন্ন সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে, যেমন ES5, ES6 (ES2015), ES7, ES8, এবং আরও নতুন সংস্করণ।

বৈশিষ্ট্যসমূহ

জাভাস্ক্রিপ্টের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • লাইটওয়েট স্ক্রিপ্টিং ভাষা: এটি একটি স্ক্রিপ্টিং ভাষা হওয়ায়, এটি সার্ভারে জটিল কম্পাইলেশন ছাড়াই সরাসরি ব্রাউজারে চালানো যায়।
  • বস্তু-ভিত্তিক প্রোগ্রামিং (Object-Oriented Programming): জাভাস্ক্রিপ্ট অবজেক্ট এবং ক্লাসের ধারণা সমর্থন করে। যদিও এটি সম্পূর্ণরূপে ক্লাস-ভিত্তিক নয়, তবে প্রোটোটাইপ-ভিত্তিক বস্তু-ভিত্তিক প্রোগ্রামিং সমর্থন করে।
  • ফাংশনাল প্রোগ্রামিং: জাভাস্ক্রিপ্ট ফাংশনকে প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে গণ্য করে, যা ফাংশনাল প্রোগ্রামিং প্যারাডাইম সমর্থন করে।
  • ডায়নামিক টাইপিং: ভেরিয়েবলের ডেটা টাইপ রানটাইমে নির্ধারিত হয়।
  • ইন্টারপ্রেটেড ভাষা: কোড কম্পাইল করার প্রয়োজন হয় না, ব্রাউজার সরাসরি কোড ইন্টারপ্রেট করে চালায়।
  • বহুমুখীতা: ফ্রন্ট-এন্ড এবং ব্যাক-এন্ড উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়। Node.js এর মাধ্যমে সার্ভার-সাইড প্রোগ্রামিং করা সম্ভব।
  • অ্যাসিঙ্ক্রোনাস প্রোগ্রামিং: অ্যাসিঙ্ক্রোনাস প্রোগ্রামিং এর জন্য কলব্যাক, প্রমিজ এবং অ্যাসিঙ্ক/অ্যাওয়েট এর মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

সিনট্যাক্স এবং মৌলিক ধারণা

জাভাস্ক্রিপ্টের সিনট্যাক্স সি-স্টাইল ভাষার মতো। নিচে কিছু মৌলিক ধারণা আলোচনা করা হলো:

  • ভেরিয়েবল: ভেরিয়েবল ঘোষণা করার জন্য `var`, `let`, এবং `const` ব্যবহার করা হয়। `var` ফাংশন-স্কোপড, `let` ব্লক-স্কোপড এবং `const` ধ্রুবক মান ঘোষণার জন্য ব্যবহৃত হয়।
ভেরিয়েবল ঘোষণা
ভেরিয়েবল টাইপ উদাহরণ বর্ণনা
var `var x = 10;` ফাংশন স্কোপড
let `let y = 20;` ব্লক স্কোপড
const `const z = 30;` ধ্রুবক, পরিবর্তন করা যায় না
  • ডেটা টাইপ: জাভাস্ক্রিপ্টে সাতটি প্রিম primitive ডেটা টাইপ রয়েছে: Number, String, Boolean, Null, Undefined, Symbol, এবং BigInt। এছাড়াও Object একটি গুরুত্বপূর্ণ ডেটা টাইপ।
  • অপারেটর: বিভিন্ন গাণিতিক, লজিক্যাল, এবং অ্যাসাইনমেন্ট অপারেটর রয়েছে। যেমন: `+`, `-`, `*`, `/`, `&&`, `||`, `=`, `+=`, ইত্যাদি।
  • কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট: `if`, `else if`, এবং `else` স্টেটমেন্ট ব্যবহার করে শর্তসাপেক্ষে কোড চালানো যায়।
  • লুপ: `for`, `while`, এবং `do...while` লুপ ব্যবহার করে পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ করা যায়।
  • ফাংশন: ফাংশন হলো কোডের ব্লক যা নির্দিষ্ট কাজ করে। ফাংশন ঘোষণা করার জন্য `function` কীওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়।

জাভাস্ক্রিপ্টে ফ্রেমওয়ার্ক এবং লাইব্রেরি

জাভাস্ক্রিপ্ট ডেভেলপারদের জন্য বিভিন্ন ফ্রেমওয়ার্ক এবং লাইব্রেরি রয়েছে, যা ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়াকে সহজ করে। এদের মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হলো:

  • React: একটি জনপ্রিয় ফ্রন্ট-এন্ড লাইব্রেরি যা ইউজার ইন্টারফেস তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • Angular: গুগল কর্তৃক ডেভেলপ করা একটি শক্তিশালী ফ্রেমওয়ার্ক, যা জটিল ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরির জন্য উপযুক্ত।
  • Vue.js: একটি প্রগতিশীল ফ্রেমওয়ার্ক, যা সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং দ্রুত ডেভেলপমেন্টের জন্য পরিচিত।
  • Node.js: একটি রানটাইম এনভায়রনমেন্ট যা সার্ভার-সাইড জাভাস্ক্রিপ্ট ডেভেলপমেন্টের সুযোগ দেয়।
  • jQuery: একটি দ্রুত, ছোট এবং বৈশিষ্ট্যযুক্ত জাভাস্ক্রিপ্ট লাইব্রেরি। এটি HTML ডকুমেন্ট ট্রাভার্সিং এবং ম্যানিপুলেশন, ইভেন্ট হ্যান্ডলিং, অ্যানিমেশন এবং Ajax এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • Express.js: Node.js এর জন্য একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক।

আধুনিক জাভাস্ক্রিপ্ট (ES6 এবং তার পরবর্তী সংস্করণসমূহ)

ECMAScript 2015 (ES6) জাভাস্ক্রিপ্টে নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করেছে, যা কোড লেখা এবং রক্ষণাবেক্ষণকে আরও সহজ করেছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:

  • অ্যারো ফাংশন: সংক্ষিপ্ত ফাংশন লেখার জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • ক্লাস: অবজেক্ট-ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের জন্য ক্লাসের ধারণা যুক্ত করা হয়েছে।
  • মডিউল: কোডকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করার জন্য মডিউল ব্যবহার করা হয়।
  • লেট এবং কনস্ট: ভেরিয়েবল ঘোষণার জন্য নতুন কীওয়ার্ড।
  • টেম্পলেট লিটারেল: স্ট্রিং ইন্টারপোলেশনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • ডিফল্ট প্যারামিটার: ফাংশনের প্যারামিটারে ডিফল্ট মান সেট করা যায়।
  • ডিস্ট্রাকচারিং: অবজেক্ট এবং অ্যারে থেকে ডেটা সহজে বের করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

জাভাস্ক্রিপ্টের ব্যবহারক্ষেত্র

জাভাস্ক্রিপ্টের বহুমুখী ব্যবহারের কিছু ক্ষেত্র নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: ফ্রন্ট-এন্ড এবং ব্যাক-এন্ড উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
  • মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট: React Native এবং Ionic এর মতো ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা যায়।
  • ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট: Electron এর মাধ্যমে ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা যায়।
  • গেম ডেভেলপমেন্ট: HTML5 ক্যানভাস এবং WebGL ব্যবহার করে ওয়েব-ভিত্তিক গেম তৈরি করা যায়।
  • সার্ভারলেস ফাংশন: AWS Lambda এবং Google Cloud Functions এর মতো প্ল্যাটফর্মে সার্ভারলেস ফাংশন তৈরি করা যায়।
  • ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন: D3.js এর মতো লাইব্রেরি ব্যবহার করে ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন করা যায়।

ব্রাউজার API এবং DOM ম্যানিপুলেশন

জাভাস্ক্রিপ্ট ব্রাউজারের API (Application Programming Interface) ব্যবহার করে ওয়েব পেজের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে। DOM (Document Object Model) হলো ওয়েব পেজের স্ট্রাকচার্ড রিপ্রেজেন্টেশন, যা জাভাস্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে পরিবর্তন করা যায়। DOM ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে ওয়েব পেজের কনটেন্ট, স্ট্রাকচার এবং স্টাইল পরিবর্তন করা সম্ভব।

ইভেন্ট হ্যান্ডলিং

জাভাস্ক্রিপ্ট ইভেন্ট হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ইন্টারঅ্যাকশনের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট রয়েছে, যেমন: ক্লিক, মাউসওভার, কীপ্রেস, ফর্ম সাবমিশন, ইত্যাদি। ইভেন্ট লিসেনার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ইভেন্টের জন্য ফাংশন কল করা যায়।

অ্যাসিঙ্ক্রোনাস জাভাস্ক্রিপ্ট

জাভাস্ক্রিপ্ট অ্যাসিঙ্ক্রোনাস প্রোগ্রামিং সমর্থন করে, যা নেটওয়ার্ক রিকোয়েস্ট বা অন্যান্য সময়সাপেক্ষ অপারেশনের সময় অ্যাপ্লিকেশনকে ব্লকিং থেকে রক্ষা করে। কলব্যাক, প্রমিজ এবং অ্যাসিঙ্ক/অ্যাওয়েট হলো অ্যাসিঙ্ক্রোনাস প্রোগ্রামিংয়ের জন্য ব্যবহৃত প্রধান কৌশল।

অ্যাসিঙ্ক্রোনাস প্রোগ্রামিং কৌশল
কৌশল বর্ণনা
কলব্যাক একটি ফাংশনকে অন্য ফাংশনের আর্গুমেন্ট হিসেবে পাস করা হয়।
প্রমিজ অ্যাসিঙ্ক্রোনাস অপারেশনের ফলাফল প্রতিনিধিত্ব করে।
অ্যাসিঙ্ক/অ্যাওয়েট প্রমিজের সাথে কাজ করার জন্য সহজ সিনট্যাক্স প্রদান করে।

জাভাস্ক্রিপ্টের ভবিষ্যৎ

জাভাস্ক্রিপ্ট ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। WebAssembly (Wasm) এবং নতুন ECMAScript স্ট্যান্ডার্ডগুলি জাভাস্ক্রিপ্টের কর্মক্ষমতা এবং ব্যবহারযোগ্যতা আরও উন্নত করবে। সার্ভারলেস কম্পিউটিং এবং IoT (Internet of Things) এর মতো নতুন প্রযুক্তিতে জাভাস্ক্রিপ্টের ব্যবহার বাড়ছে, যা এর ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে।

আরও জানতে

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер