জাতিসংঘের শিশু তহবিল

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (United Nations Children's Fund), যা সাধারণভাবে ইউনিসেফ (UNICEF) নামে পরিচিত, জাতিসংঘের একটি বিশেষ সংস্থা। এটি বিশ্বের শিশুদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, তাদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের সামগ্রিক কল্যাণে কাজ করে। ১৯৪৬ সালে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত শিশুদের সাহায্য করার জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে এর কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত হয়েছে এবং বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিশু অধিকার সংস্থা হিসেবে পরিচিত।

প্রতিষ্ঠা ও পটভূমি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের শিশুরা খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত ছিল। এই পরিস্থিতিতে ১৯৪৬ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শিশু জরুরি তহবিল (United Nations International Children's Emergency Fund) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। প্রাথমিকভাবে এর উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের সহায়তা করা। ১৯৫৩ সালে এই তহবিলের কার্যক্রম স্থায়ী করা হয় এবং নাম পরিবর্তন করে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (United Nations Children's Fund) রাখা হয়। এর সদর দপ্তর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে অবস্থিত।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

ইউনিসেফের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো হলো:

  • শিশুদের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা: শিশুদের জন্ম, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা।
  • শিশুদের বিকাশ ও শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা: প্রতিটি শিশুর জন্য মানসম্মত শিক্ষা, খেলাধুলা এবং বিকাশের সুযোগ তৈরি করা।
  • শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা: শিশু নির্যাতন, শোষণ, সহিংসতা এবং যেকোনো ধরনের ঝুঁকি থেকে শিশুদের রক্ষা করা।
  • শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা: শিশুদের মতামত ও অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দেওয়া এবং তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা।
  • বৈষম্য দূর করা: জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ বা অন্য কোনো কারণে শিশুদের মধ্যে বৈষম্য দূর করা।

কার্যক্রম

ইউনিসেফ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • স্বাস্থ্যসেবা : ইউনিসেফ শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য কাজ করে। এটি মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নেও সহায়তা করে। স্বাস্থ্যখাত-এর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সহায়তা প্রদান করে।
  • পুষ্টি : শিশুদের অপুষ্টি দূর করার জন্য ইউনিসেফ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করে এবং পুষ্টি বিষয়ক শিক্ষা প্রদান করে।
  • শিক্ষা : ইউনিসেফ বিদ্যালয় স্থাপন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করে। শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত করার জন্য সংস্থাটি বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়।
  • জল ও স্যানিটেশন : নিরাপদ পানীয় জল এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার অভাবে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ইউনিসেফ এই সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
  • শিশু সুরক্ষা : ইউনিসেফ শিশু নির্যাতন, মানব পাচার এবং অন্যান্য ধরনের শোষণ থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে।
  • মানবাধিকার : ইউনিসেফ শিশুদের মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতন করে এবং তাদের অধিকার আদায়ে সহায়তা করে।
  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতিতে ইউনিসেফ শিশুদের খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।
ইউনিসেফের কার্যক্রমের ক্ষেত্রসমূহ
ক্ষেত্র কার্যক্রম
স্বাস্থ্য টিকাদান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা
পুষ্টি পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ, পুষ্টি শিক্ষা
শিক্ষা বিদ্যালয় স্থাপন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
জল ও স্যানিটেশন নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহ, স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন
শিশু সুরক্ষা শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, মানব পাচার রোধ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাদ্য, আশ্রয় ও জরুরি সহায়তা প্রদান

অর্থায়ন

ইউনিসেফের অর্থায়ন মূলত বিভিন্ন উৎস থেকে আসে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অনুদান
  • বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার অনুদান
  • ব্যক্তিগত অনুদান
  • বিভিন্ন তহবিল এবং অনুদান কর্মসূচি

ইউনিসেফ তার তহবিলের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।

সাফল্য ও প্রভাব

ইউনিসেফ বিগত কয়েক দশকে শিশুদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য হলো:

  • শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস: ইউনিসেফের টিকাদান কর্মসূচির ফলে শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
  • স্কুলে ভর্তির হার বৃদ্ধি: ইউনিসেফের শিক্ষা কার্যক্রমের ফলে অনেক বেশি শিশু স্কুলে যেতে পারছে।
  • অপুষ্টির হার হ্রাস: ইউনিসেফের পুষ্টি কার্যক্রমের ফলে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার কমেছে।
  • নিরাপদ পানীয় জলের সুবিধা বৃদ্ধি: ইউনিসেফের জল ও স্যানিটেশন কার্যক্রমের ফলে অনেক বেশি মানুষ নিরাপদ পানীয় জলের সুবিধা পাচ্ছে।
  • শিশু সুরক্ষার উন্নতি: ইউনিসেফের শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের ফলে শিশু নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বেড়েছে।

সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ

ইউনিসেফকে বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:

  • অর্থের অভাব : ইউনিসেফের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের অভাব প্রায়ই দেখা যায়।
  • রাজনৈতিক অস্থিরতা : বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ইউনিসেফের কার্যক্রমকে ব্যাহত করে।
  • দুর্যোগ : প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি ইউনিসেফের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।
  • কোভিড-১৯ মহামারী : কোভিড-১৯ মহামারী শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং ইউনিসেফের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
  • জলবায়ু পরিবর্তন : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিশুদের জীবন ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

ইউনিসেফ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) অর্জনে ইউনিসেফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য নির্ধারিত SDG লক্ষ্যগুলো অর্জনে ইউনিসেফ বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • SDG 1: দারিদ্র্য বিমোচন
  • SDG 2: ক্ষুধা মুক্তি
  • SDG 3: সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ
  • SDG 4: মানসম্মত শিক্ষা
  • SDG 5: লিঙ্গ সমতা
  • SDG 6: নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন
  • SDG 8: শোভন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
  • SDG 10: বৈষম্য হ্রাস
  • SDG 16: শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান

ইউনিসেফের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ইউনিসেফ ভবিষ্যতে শিশুদের জন্য আরও উন্নত ও টেকসই কর্মসূচি গ্রহণ করার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন।
  • জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
  • দুর্যোগ মোকাবিলায় শিশুদের জন্য আরও কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
  • মানবাধিকার ও শিশু অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
  • অপুষ্টি দূরীকরণে নতুন কৌশল অবলম্বন করা।
  • দারিদ্র্য বিমোচনে শিশুদের পরিবারকে সহায়তা করা।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এর সাথে সম্পর্ক (নোট)

যদিও ইউনিসেফ সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে জড়িত নয়, তবে সংস্থাটির আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং তহবিল সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন আর্থিক বাজারের জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল আর্থিক বিনিয়োগ কৌশল। এখানে কিছু বিষয় আলোচনা করা হলো:

  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা : ইউনিসেফের বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জ্ঞান থাকা দরকার। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি হতে পারে।
  • বাজার বিশ্লেষণ : বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা এবং বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
  • পোর্টফোলিওDiversification : বিনিয়োগের পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনা জরুরি।
  • ভলিউম বিশ্লেষণ : বাজারের ভলিউম এবং ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। ভলিউম বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।
  • কৌশলগত ট্রেডিং : বিভিন্ন ট্রেডিং কৌশল অবলম্বন করে মুনাফা অর্জন করা যেতে পারে। যেমন - স্ট্র্যাডল কৌশল, বাটারফ্লাই কৌশল ইত্যাদি।
  • মানি ম্যানেজমেন্ট : পুঁজি ব্যবস্থাপনার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
  • চার্ট প্যাটার্ন : বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন (যেমন: হেড অ্যান্ড শোল্ডার, ডাবল টপ, ডাবল বটম) চিহ্নিত করতে পারা।
  • ইন্ডিকেটর : বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর (যেমন: মুভিং এভারেজ, আরএসআই, এমএসিডি) ব্যবহার করে বাজারের পূর্বাভাস দেওয়া।
  • ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ : অর্থনৈতিক সূচক এবং কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ করা।
  • অপশন চেইন বিশ্লেষণ : অপশন চেইনের ডেটা বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য লাভ-ক্ষতির হিসাব করা।
  • টাইম ডিকে : সময়ের সাথে সাথে অপশনের মূল্যের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা।
  • ইম্প্লাইড ভলাটিলিটি : অপশনের অন্তর্নিহিত অস্থিরতা পরিমাপ করা।
  • গ్రీকস : অপশনের সংবেদনশীলতা পরিমাপ করা (যেমন: ডেল্টা, গামা, থিটা, ভেগা)।
  • আউট অফ দ্য মানি (OTM) অপশন : স্ট্রাইক মূল্য বর্তমান বাজার মূল্যের বাইরে থাকলে সেই অপশনগুলো বিশ্লেষণ করা।
  • ইন দ্য মানি (ITM) অপশন : স্ট্রাইক মূল্য বর্তমান বাজার মূল্যের মধ্যে থাকলে সেই অপশনগুলো বিশ্লেষণ করা।

এই বিষয়গুলো ইউনিসেফের আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করতে পারে।

উপসংহার

ইউনিসেফ বিশ্বের শিশুদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সংস্থাটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ইউনিসেফ তার লক্ষ্য অর্জনে অবিচল রয়েছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা দারিদ্র্য শিক্ষা স্বাস্থ্য শিশু অধিকার জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер