জাতিকেন্দ্রিকতা
জাতিকেন্দ্রিকতা : একটি বিস্তারিত আলোচনা
ভূমিকা
জাতিকেন্দ্রিকতা (Ethnocentrism) একটি জটিল সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক ধারণা। এটি এমন একটি প্রবণতা যেখানে কোনো ব্যক্তি বা জাতিগোষ্ঠী নিজেদের সংস্কৃতি, বিশ্বাস এবং মূল্যবোধকে অন্য সংস্কৃতি থেকে শ্রেষ্ঠ মনে করে। এই ধারণাটি সংস্কৃতি এবং সমাজবিজ্ঞান-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জাতিকেন্দ্রিকতা প্রায়শই পক্ষপাতদুষ্টতা এবং বৈষম্য-এর জন্ম দেয়। এই নিবন্ধে জাতিকেন্দ্রিকতার বিভিন্ন দিক, এর কারণ, প্রভাব এবং কীভাবে এটি মোকাবেলা করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
জাতিকেন্দ্রিকতার সংজ্ঞা
জাতিকেন্দ্রিকতা হলো নিজের জাতি বা সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে অন্য সংস্কৃতিকে বিচার করার প্রবণতা। এর মাধ্যমে অন্য সংস্কৃতিকে নিজেদের সংস্কৃতির মাপকাঠিতে মূল্যায়ন করা হয় এবং প্রায়শই সেটিকে inferior বা নিকৃষ্ট মনে করা হয়। এটি একটি সর্বজনীন মানবিক বৈশিষ্ট্য, যা সব সংস্কৃতিতেই দেখা যায়।
জাতিকেন্দ্রিকতার প্রকারভেদ
জাতিকেন্দ্রিকতাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করা যায়। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকার আলোচনা করা হলো:
- সাংস্কৃতিক জাতিকেন্দ্রিকতা: যখন কোনো জাতি বা গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে অন্যের চেয়ে উন্নত মনে করে, তখন তাকে সাংস্কৃতিক জাতিকেন্দ্রিকতা বলা হয়।
- ভাষাগত জাতিকেন্দ্রিকতা: এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট ভাষার ব্যবহারকারীদের অন্য ভাষার ব্যবহারকারীদের তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করা হয়।
- আচরণগত জাতিকেন্দ্রিকতা: এটি অন্যের আচরণ এবং রীতিনীতি বিচার করার একটি রূপ, যেখানে নিজের জাতির আচরণকে স্বাভাবিক এবং সঠিক বলে মনে করা হয়।
- বৌদ্ধিক জাতিকেন্দ্রিকতা: এই ক্ষেত্রে একটি জাতির বুদ্ধিমত্তা বা জ্ঞানকে অন্য জাতির চেয়ে বেশি মূল্যবান মনে করা হয়।
জাতিকেন্দ্রিকতার কারণ
জাতিকেন্দ্রিকতার পেছনে বহুবিধ কারণ বিদ্যমান। এর মধ্যে কিছু প্রধান কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
- সামাজিকীকরণ: শৈশবকালে পরিবার এবং সমাজের কাছ থেকে আমরা যে মূল্যবোধ ও বিশ্বাস অর্জন করি, তা জাতিকেন্দ্রিক ধারণার ভিত্তি তৈরি করে।
- নিরাপত্তা ও পরিচিতি: মানুষ সাধারণত তাদের পরিচিত সংস্কৃতিতে নিরাপদ বোধ করে। ভিন্ন সংস্কৃতিতে গিয়ে তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারে, যা জাতিকেন্দ্রিকতাকে বাড়িয়ে তোলে।
- আত্মপরিচয়: নিজের জাতি বা সংস্কৃতির প্রতি আনুগত্যবোধ মানুষকে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় দেয়। এই পরিচয় রক্ষার তাগিদে অনেক সময় জাতিকেন্দ্রিকতা দেখা যায়।
- ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: উপনিবেশবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাস জাতিকেন্দ্রিকতাকে উস্কে দিতে পারে।
জাতিকেন্দ্রিকতার প্রভাব
জাতিকেন্দ্রিকতার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটো দিকই রয়েছে।
ইতিবাচক প্রভাব:
- গোষ্ঠী সংহতি: জাতিকেন্দ্রিকতা একটি জাতির মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি করতে পারে।
- সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ: এটি নিজ নিজ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ সংরক্ষণে উৎসাহিত করে।
- জাতীয়তাবোধ: জাতিকেন্দ্রিকতা জাতীয়তাবোধকে শক্তিশালী করে, যা দেশের উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
নেতিবাচক প্রভাব:
- জাতিগত সংঘাত: জাতিকেন্দ্রিকতা বিভিন্ন জাতির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও সংঘাতের সৃষ্টি করতে পারে।
- বৈষম্য: এটি জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ইত্যাদি ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক আচরণকে উৎসাহিত করে।
- stereotypes: জাতিকেন্দ্রিকতা অন্যের সম্পর্কে ভুল ধারণা বা stereotype তৈরি করতে পারে।
- xenophobia: এটি বিদেশিদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের জন্ম দিতে পারে।
- মানবাধিকার লঙ্ঘন: চরম জাতিকেন্দ্রিকতা মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণ হতে পারে।
জাতিকেন্দ্রিকতা মোকাবেলা করার উপায়
জাতিকেন্দ্রিকতা একটি ক্ষতিকর প্রবণতা। এটি মোকাবেলা করার জন্য কিছু কার্যকর উপায় নিচে দেওয়া হলো:
- শিক্ষা: শিক্ষাব্যবস্থায় বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
- সাংস্কৃতিক বিনিময়: বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক আদান-প্রদান বাড়ানো উচিত।
- গণমাধ্যমের ভূমিকা: গণমাধ্যমকে সংবেদনশীল এবং নিরপেক্ষভাবে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে তথ্য পরিবেশন করতে হবে।
- সহনশীলতা ও সম্মান: অন্যের সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীলতা ও সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।
- আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগ: বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করা উচিত।
- আত্ম-সচেতনতা: নিজের জাতিকেন্দ্রিক ধারণাগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সেগুলো পরিবর্তনের চেষ্টা করা উচিত।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে জাতিকেন্দ্রিকতার সম্পর্ক (রূপক অর্থে)
যদিও বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং জাতিকেন্দ্রিকতা সরাসরি সম্পর্কিত নয়, তবে একটি রূপক সম্পর্ক স্থাপন করা যেতে পারে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ, একজন ট্রেডারকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে, এই দুটি বিকল্পের মধ্যে একটি বেছে নিতে হয়। এখানে, ট্রেডার প্রায়শই তার নিজস্ব বিশ্লেষণ এবং পূর্বাভাসের উপর নির্ভর করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়, এবং অন্যান্য বিশ্লেষণের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে।
এই বিষয়টি জাতিকেন্দ্রিকতার মতোই। যেখানে একজন ব্যক্তি নিজের সংস্কৃতি বা বিশ্বাসকে শ্রেষ্ঠ মনে করে অন্য সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ সফল হতে হলে, বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বাজারের বিশ্লেষণ করা এবং ঝুঁকি মূল্যায়ন করা জরুরি। অন্যথায়, শুধুমাত্র নিজের ধারণার উপর নির্ভর করলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ সফল হওয়ার জন্য টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ: এই পদ্ধতিতে ঐতিহাসিক মূল্য এবং ভলিউম ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতের মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। এর জন্য বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন, যেমন – Head and Shoulders, Double Top, Double Bottom, Moving Averages, Fibonacci Retracement ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
- ভলিউম বিশ্লেষণ: ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি এবং বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। On Balance Volume (OBV), Volume Weighted Average Price (VWAP) ইত্যাদি নির্দেশক ব্যবহার করে ভলিউম বিশ্লেষণ করা হয়।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:
- স্টপ-লস অর্ডার: এই অর্ডারের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট মূল্যে পৌঁছালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেড বন্ধ হয়ে যায়, যা সম্ভাব্য ক্ষতি সীমিত করে।
- পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন: বিভিন্ন সম্পদে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি কমানো যায়।
- লিভারেজ নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত লিভারেজ ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- সঠিক ট্রেডিং প্ল্যান: একটি সুনির্দিষ্ট ট্রেডিং প্ল্যান অনুসরণ করা উচিত, যেখানে ঝুঁকির মাত্রা এবং লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করা থাকবে।
মানসিক প্রস্তুতি
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ মানসিক প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারা একজন ট্রেডারের জন্য অপরিহার্য। অতিরিক্ত লোভ বা ভয়ের কারণে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
উপসংহার
জাতিকেন্দ্রিকতা একটি জটিল সামাজিক সমস্যা, যা ব্যক্তি ও সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শিক্ষা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং সহনশীলতার মাধ্যমে এই প্রবণতা মোকাবেলা করা সম্ভব। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রেও, শুধুমাত্র নিজের ধারণার উপর নির্ভর না করে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ভলিউম বিশ্লেষণ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সফল ট্রেডিং করা সম্ভব।
আরও জানতে:
- জাতি
- সংস্কৃতি
- সমাজবিজ্ঞান
- পক্ষপাতদুষ্টতা
- বৈষম্য
- stereotypes
- xenophobia
- মানবাধিকার
- Head and Shoulders
- Double Top
- Double Bottom
- Moving Averages
- Fibonacci Retracement
- On Balance Volume (OBV)
- Volume Weighted Average Price (VWAP)
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
| সংস্কৃতি | উদাহরণ | প্রভাব |
| খাদ্য | কোনো জাতি তাদের খাবারকে অন্য জাতির খাবারের চেয়ে ভালো মনে করে। | অন্যের খাবারের প্রতি অশ্রদ্ধা, খাদ্য অপচয়। |
| পোশাক | নিজের দেশের পোশাককে অন্যের পোশাকের চেয়ে বেশি মার্জিত মনে করা। | অন্যের সংস্কৃতিকে inferior মনে করা। |
| ভাষা | মাতৃভাষাকে অন্য ভাষার চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করা। | যোগাযোগের বাধা, ভুল বোঝাবুঝি। |
| রীতিনীতি | নিজের জাতির রীতিনীতিকে অন্যের চেয়ে সঠিক মনে করা। | সামাজিক সংঘাত, অসহযোগিতা। |
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
