জন অ্যাডামস
জন অ্যাডামস
জন অ্যাডামস (অক্টোবর ৩০, ১৭৩৫ – জুলাই ৪, ১৮২৬) ছিলেন একজন আমেরিকান আইনজীবী, রাজনীতিবিদ এবং কূটনীতিবিদ যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন (১৭৯৭-১৮০১)। তিনি আমেরিকান বিপ্লব-এর একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রের অন্যতম স্বাক্ষরকারী। অ্যাডামস ছিলেন একজন ফেডারেলিস্ট এবং তার রাষ্ট্রপতি পদকালে তিনি ফ্রান্সের সাথে Quasi-War নামক একটি অঘোষিত নৌযুদ্ধ পরিচালনা করেন।
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
জন অ্যাডামস ১৭৩৫ সালের অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখে ব্রেইনট্রি, ম্যাসাচুসেটস-এ জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা স্যামুয়েল অ্যাডামস ছিলেন একজন কৃষক ও ডিকন। জন হার্ভার্ড কলেজ থেকে ১৭৫৪ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ১৭৫८ সালে তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
রাজনৈতিক জীবন
অ্যাডামসের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় আমেরিকান বিপ্লব-এর প্রেক্ষাপটে। তিনি ব্রিটিশ সরকারের নীতির তীব্র বিরোধিতা করেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন প্রধান সংগঠক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৭৭৪ সালে তিনি প্রথম কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস-এ ম্যাসাচুসেটসের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন।
স্বাধীনতা ঘোষণা প্রণয়নে অ্যাডামসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি টমাস জেফারসনের সাথে এই ঐতিহাসিক দলিলটি লেখার কাজে সহযোগিতা করেন। বিপ্লবের সময় তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন, যার মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স-এ একজন কূটনীতিকের দায়িত্ব।
রাষ্ট্রপতি পদ
১৭৯৬ সালে জন অ্যাডামস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করেন এবং ১৭৯৭ থেকে ১৮০১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার রাষ্ট্রপতি পদকালে তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ফ্রান্সের সাথে Quasi-War।
ফ্রান্সের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণ ছিল জ্যাঁ-ব্যাপ্টিস্ত বার্নাভ-এর ঘটনা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষতা নীতি। অ্যাডামস যুদ্ধের পরিবর্তে কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটি সীমিত নৌযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে। এই যুদ্ধটি এডামস-জেফারসন চুক্তি-এর মাধ্যমে শেষ হয়।
অ্যাডামসের প্রশাসন এলিয়েন এবং সেডিশন আইন প্রণয়ন করে, যা সমালোচকদের দ্বারা তীব্রভাবে নিন্দিত হয়েছিল। এই আইনগুলি রাজনৈতিক ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়।
| বছর | ঘটনা |
| ১৭৭৪ | প্রথম কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস-এ যোগদান |
| ১৭৭৬ | স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর |
| ১৭৮৩ | প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর করেন |
| ১৭৮৯ | প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট |
| ১৭৯৭-১৮০১ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি |
রাষ্ট্রপতি হিসেবে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ
- Quasi-War : ফ্রান্সের সাথে অঘোষিত নৌযুদ্ধ পরিচালনা করেন।
- এলিয়েন এবং সেডিশন আইন : এই আইনগুলির মাধ্যমে রাজনৈতিক সমালোচকদের দমন করার চেষ্টা করেন।
- নৌবাহিনী তৈরি : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
- শান্তিপূর্ণ সমাধান : ফ্রান্সের সাথে যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করেন।
উত্তরাধিকার এবং মূল্যায়ন
জন অ্যাডামস ছিলেন একজন জটিল ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একজন দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ এবং নীতিবান রাজনীতিবিদ, কিন্তু একই সাথে তিনি ছিলেন কিছুটা একগুঁয়ে এবং অসামাজিক। তার রাষ্ট্রপতি পদকালে তিনি বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সর্বদা দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন।
অ্যাডামস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন নায়ক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেশের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
জন অ্যাডামস ১৭৬৪ সালে অ্যাবিগেইল স্মিথকে বিয়ে করেন। তাদের পাঁচ সন্তান ছিল, যাদের মধ্যে জন কুইন্সি অ্যাডামস পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হন।
অ্যাডামস এবং অ্যাবিগেইলের মধ্যেকার চিঠিগুলি তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার মূল্যবান দলিল। এই চিঠিগুলি থেকে তাদের গভীর ভালোবাসা, বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জানা যায়।
জন অ্যাডামসের অবদান
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা : তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
- গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির গঠনে তার অবদান ছিল।
- আইন ও বিচার : তিনি আইন ও বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করেন।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক : তিনি ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
জন অ্যাডামস সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী
- রাজনৈতিক দর্শন : অ্যাডামস ছিলেন একজন ফেডারেলিস্ট এবং তিনি একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে ছিলেন।
- আইনগত চিন্তাভাবনা : তিনি আইনের শাসনের ওপর জোর দিতেন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতেন।
- শিক্ষার গুরুত্ব : অ্যাডামস শিক্ষার গুরুত্বের ওপর বিশেষ জোর দিতেন এবং জ্ঞানার্জনের প্রতি উৎসাহিত করতেন।
- ধর্মীয় বিশ্বাস : তিনি একজন ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন এবং তার ধর্মীয় বিশ্বাস তার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করত।
অ্যাডামসের চিন্তাধারা ও আধুনিক রাজনীতি
জন অ্যাডামসের রাজনৈতিক চিন্তাধারা আধুনিক রাজনীতিতেও প্রাসঙ্গিক। তার গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে ধারণাগুলি আজও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
- গণতন্ত্রের ধারণা : অ্যাডামসের গণতন্ত্রের ধারণা ছিল প্রতিনিধিত্বমূলক এবং তিনি জনগণের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিতেন।
- আইনের শাসন : তিনি বিশ্বাস করতেন যে আইনের শাসন ছাড়া কোনো সমাজ সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে না।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক : তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্কে শান্তি ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিতেন।
জন অ্যাডামসের জীবন ও কর্মের ওপর রচিত গ্রন্থাবলী
জন অ্যাডামসের জীবন ও কর্মের ওপর অসংখ্য গ্রন্থ রচিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
- The Life of John Adams by John T. Morse
- John Adams by David McCullough
- American Sphinx: The Character of John Adams by Joseph J. Ellis
- Founding Brothers: The Revolutionary Generation by Joseph J. Ellis
আরও কিছু তথ্য
- জন অ্যাডামস ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট।
- তিনি ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
- অ্যাডামস ১৮২৬ সালের জুলাই মাসের ৪ তারিখে মারা যান, একই দিনে তার বন্ধু এবং প্রতিদ্বন্দ্বী টমাস জেফারসনও মারা যান।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সংযোগ
যদিও জন অ্যাডামসের জীবন এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং সরাসরি সম্পর্কিত নয়, তবে তার কিছু নীতি এবং কৌশল ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।
- ঝুঁকি মূল্যায়ন : অ্যাডামস যেমন রাজনৈতিক ঝুঁকি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নিতেন, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও ঝুঁকি মূল্যায়ন করা জরুরি।
- দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা : তিনি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতেন, যা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
- নিয়ম মেনে চলা : তিনি আইনের শাসনের ওপর জোর দিতেন, তেমনি ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রেও নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত।
- বৈচিত্র্যকরণ : যদিও সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় যে বৈচিত্র্যকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে বিভিন্ন অ্যাসেটে বিনিয়োগ করে পোর্টফোলিওকে বৈচিত্র্যময় করা উচিত।
- ধৈর্য : অ্যাডামসের রাজনৈতিক জীবন ধৈর্য্যের পরিচয় দেয়। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়েও ধৈর্য ধরে সঠিক সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
এখানে কিছু অতিরিক্ত লিঙ্ক দেওয়া হলো:
- টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
- ভলিউম বিশ্লেষণ
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
- মানি ম্যানেজমেন্ট
- বাইনারি অপশন কৌশল
- ট্রেডিং সাইকোলজি
- ফিনান্সিয়াল মার্কেট
- অর্থনৈতিক সূচক
- ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন
- মুভিং এভারেজ
- আরএসআই (Relative Strength Index)
- MACD (Moving Average Convergence Divergence)
- বলিঙ্গার ব্যান্ড
- ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট
- ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম
- ব্রোকার নির্বাচন
- ডেমো অ্যাকাউন্ট
- বাইনারি অপশন টার্মিনোলজি
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান
- ফেডারেলিস্ট পার্টি
অন্য.
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
