চিত্র:WHO headquarters Geneva.jpg
জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদর দপ্তর
thumb|300px|জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তর
ভূমিকা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization - WHO) জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা। এটি আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে অবস্থিত এই সংস্থার সদর দপ্তর জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ, গবেষণা পরিচালনা এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সহযোগিতা বৃদ্ধির কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। এই নিবন্ধে জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদর দপ্তরের ইতিহাস, গঠন, কার্যাবলী এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইতিহাস
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৮ সালে। এর পূর্বসূরী ছিল ১৯২৩ সালে গঠিত স্বাস্থ্য সংস্থা (Health Organization)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য সংস্থা গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৪৮ সালের ৭ই এপ্রিল, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্মেলনে মিলিত হয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সনদ স্বাক্ষর করে। এই সনদ অনুযায়ী, WHO-এর মূল লক্ষ্য ছিল "সকল মানুষের জন্য সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা"। জেনেভা শহরকে সদর দপ্তর হিসেবে বেছে নেওয়া হয়, কারণ এটি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এবং সুইজারল্যান্ড নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে।
গঠন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গঠন বেশ জটিল এবং এর মধ্যে বিভিন্ন স্তর বিদ্যমান। সংক্ষেপে এর গঠন নিম্নরূপ:
- বিশ্ব স্বাস্থ্য सभा (World Health Assembly): এটি WHO-এর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী অঙ্গ। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা এখানে মিলিত হন এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি ও বাজেট অনুমোদন করেন।
- নির্বাহী বোর্ড (Executive Board): এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য सभा-র একটি অংশ। নির্বাহী বোর্ড বিশ্ব স্বাস্থ্য सभा-র সেশনগুলোর মধ্যে কাজকর্ম পরিচালনা করে এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিগুলো বাস্তবায়নে সহায়তা করে।
- পরিচালন পর্ষদ (Secretariat): এটি WHO-এর প্রশাসনিক কাঠামো। এর প্রধান হলেন মহাপরিচালক (Director-General)। তিনি সংস্থার দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনা করেন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচিগুলো তত্ত্বাবধান করেন। বর্তমানে টেড্রোস আধানোম গেব্রেইয়ুস WHO-এর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
- আঞ্চলিক কার্যালয় (Regional Offices): WHO ছয়টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই কার্যালয়গুলো হলো:
* আফ্রিকা অঞ্চলীয় কার্যালয় (Regional Office for Africa) * আমেরিকা অঞ্চলীয় কার্যালয় (Regional Office for the Americas) * পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলীয় কার্যালয় (Regional Office for the Eastern Mediterranean) * ইউরোপীয় অঞ্চলীয় কার্যালয় (Regional Office for Europe) * দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলীয় কার্যালয় (Regional Office for South-East Asia) * পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলীয় কার্যালয় (Regional Office for the Western Pacific)
কার্যাবলী
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন ধরনের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রমে জড়িত। এর প্রধান কাজগুলো হলো:
- স্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি নির্ধারণ: WHO আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নীতি নির্ধারণ এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে স্বাস্থ্যখাতে সহায়তা প্রদান করে।
- গবেষণা ও উন্নয়ন: সংস্থাটি বিভিন্ন রোগ এবং স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে গবেষণা করে এবং নতুন প্রযুক্তি ও চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনে সহায়তা করে।
- রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ: WHO বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করে এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করে। এর মধ্যে এইচআইভি/এইডস, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, পোলিও এবং করোনাভাইরাস উল্লেখযোগ্য।
- স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য সরবরাহ: সংস্থাটি স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে এবং সদস্য রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য সহজলভ্য করে তোলে।
- স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ: WHO বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং তাদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে।
- জরুরি স্বাস্থ্য সহায়তা: প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে WHO দ্রুততার সাথে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় স্বাস্থ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়।
জেনেভার সদর দপ্তরের স্থাপত্য
জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদর দপ্তরের স্থাপত্যশৈলী আধুনিক এবং এটি আন্তর্জাতিক স্থাপত্যের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। ভবনটি বিভিন্ন অংশে বিভক্ত এবং এর প্রতিটি অংশ একটি নির্দিষ্ট কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। সদর দপ্তরের মূল ভবনটি ১৯৬৬ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে এটি কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। এই ভবনে একটি বিশাল কনফারেন্স হল, অফিস কক্ষ, লাইব্রেরি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এছাড়াও, সদর দপ্তরের আশেপাশে বেশ কয়েকটি বাগান এবং সবুজ স্থান রয়েছে, যা কর্মীদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে প্রাসঙ্গিকতা
বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি আর্থিক বিনিয়োগ পদ্ধতি। জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদর দপ্তরের কার্যাবলী এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক ঘটনার কারণে এই ট্রেডিং-এর সুযোগ তৈরি হতে পারে। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:
- মহামারী এবং স্বাস্থ্য সংকট: যখন কোনো মহামারী বা স্বাস্থ্য সংকট দেখা দেয়, তখন WHO-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই সময় WHO-এর বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং ঘোষণার ওপর ভিত্তি করে বাইনারি অপশন ট্রেডিং করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি WHO কোনো নতুন ভ্যাকসিন অনুমোদন করে, তবে ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে, সেই কোম্পানির শেয়ারের ওপর কল অপশন (Call Option) কেনা লাভজনক হতে পারে।
- রোগের প্রাদুর্ভাব: কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়লে, WHO দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। এই পরিস্থিতিতে, স্বাস্থ্য বিষয়ক সরঞ্জাম ও ঔষধ সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে, সেই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ওপর বাইনারি অপশন ট্রেড করা যেতে পারে।
- স্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি পরিবর্তন: WHO যদি কোনো স্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি পরিবর্তন করে, তবে এর প্রভাব বিভিন্ন কোম্পানির ওপর পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, তামাকের ব্যবহার কমাতে WHO নতুন কোনো নিয়ম জারি করলে, তামাক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কমতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, তামাক কোম্পানির শেয়ারের ওপর পুট অপশন (Put Option) কেনা লাভজনক হতে পারে।
- গবেষণা এবং উন্নয়ন: WHO বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণা করে এবং নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনে সহায়তা করে। যখন কোনো নতুন গবেষণা সফল হয়, তখন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে, সেই কোম্পানির শেয়ারের ওপর বাইনারি অপশন ট্রেড করা যেতে পারে।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ পদ্ধতি। এই ট্রেডিং করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে:
- বাজার বিশ্লেষণ: ট্রেড করার আগে বাজার ভালোভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে। WHO-এর ঘোষণা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক খবরের ওপর নজর রাখতে হবে।
- ঝুঁকি মূল্যায়ন: বিনিয়োগের আগে ঝুঁকির মাত্রা মূল্যায়ন করতে হবে। নিজের আর্থিক সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে বিনিয়োগ করা উচিত নয়।
- স্টপ-লস অর্ডার: স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে ঝুঁকি কমানো যায়।
- বৈচিত্র্যকরণ: পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনা উচিত, যাতে কোনো একটি ট্রেডের কারণে বড় ধরনের ক্ষতি না হয়।
- বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: অভিজ্ঞ ট্রেডার বা আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ (Technical Analysis) এবং ভলিউম বিশ্লেষণ (Volume Analysis) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ: এই পদ্ধতিতে ঐতিহাসিক মূল্য এবং ভলিউমের ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতের মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন, যেমন - হেড অ্যান্ড শোল্ডারস (Head and Shoulders), ডাবল টপ (Double Top), ডাবল বটম (Double Bottom) ইত্যাদি ব্যবহার করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, মুভিং এভারেজ (Moving Average), রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইনডেক্স (Relative Strength Index - RSI) এবং ম্যাকডি (Moving Average Convergence Divergence - MACD) এর মতো নির্দেশক ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস
- ভলিউম বিশ্লেষণ: ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা যায় যে একটি নির্দিষ্ট শেয়ার বা সম্পদে কত পরিমাণে কেনাবেচা হচ্ছে। যদি ভলিউম বৃদ্ধি পায়, তবে এটি বাজারের আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়। ভলিউম
গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্কসমূহ
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
- মহাপরিচালক
- এইচআইভি/এইডস
- যক্ষ্মা
- ম্যালেরিয়া
- পোলিও
- করোনাভাইরাস
- টেড্রোস আধানোম গেব্রেইয়ুস
- টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস
- ভলিউম
- কল অপশন
- পুট অপশন
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
- ফিনান্সিয়াল মার্কেট
- বিনিয়োগ
- স্টক মার্কেট
- মুভিং এভারেজ
- রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইনডেক্স
- ম্যাকডি
- চার্ট প্যাটার্ন
- সুইজারল্যান্ড
- জেনেভা
উপসংহার
জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদর দপ্তর আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যের কেন্দ্রবিন্দু। এর কার্যাবলী বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে, WHO-এর বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক ঘটনাগুলো বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করতে পারে। তবে, এই ট্রেডিং করার সময় ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সঠিক বিশ্লেষণ ও পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত।
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
