গ্রীক সভ্যতা
গ্রীক সভ্যতা
ভূমিকা: গ্রীক সভ্যতা মানব ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা। প্রায় ৩০০০ বছর ধরে এর বিকাশ ঘটেছে এবং এটি পশ্চিমা সংস্কৃতি, রাজনীতি, দর্শন, বিজ্ঞান এবং শিল্পের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এই সভ্যতা শুধু প্রাচীন গ্রিসের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এর প্রভাব সুদূর প্রাচ্য পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। গ্রীকদের উদ্ভাবনী চিন্তা, গণতান্ত্রিক আদর্শ এবং শিল্পকলা আজও বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
ভূগোল ও পরিবেশ: প্রাচীন গ্রিস ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরে অবস্থিত ছিল। এর উত্তরে বলকান পর্বতমালা, পশ্চিমে আড্রিয়াটিক সাগর এবং দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর অবস্থিত। গ্রিসের ভূ-প্রকৃতি মূলত পার্বত্য এবং এখানে উর্বর সমভূমি কম ছিল। এই ভৌগোলিক কারণে গ্রীকরা ছোট ছোট নগররাষ্ট্র বা ‘পোলিস’-এ বিভক্ত হয়ে বসবাস করত। এদের মধ্যে এথেন্স, স্পার্টা, কোরিন্থ এবং [[থেবস] ] উল্লেখযোগ্য। গ্রিসের জলবায়ু ছিল মৃদু এবং অনুকূল, যা কৃষিকাজ ও জীবনযাত্রার জন্য সহায়ক ছিল।
সময়কাল: গ্রীক সভ্যতার সময়কালকে সাধারণত তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়:
- মিনিয়ান সভ্যতা (খ্রিস্টপূর্ব ২৭০০-১৫০০): এটি ক্রিট দ্বীপের কেন্দ্রিক সভ্যতা, যা প্রাসাদভিত্তিক সংস্কৃতি ও উন্নত নগর পরিকল্পনার জন্য পরিচিত।
- মাইসেনীয় সভ্যতা (খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০-১১০০): এটি মূল ভূখণ্ডের গ্রিসে বিকাশ লাভ করে এবং যুদ্ধপ্রিয় সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। ট্রয় যুদ্ধের কাহিনী এই যুগের সাথে সম্পর্কিত।
- ক্লাসিক্যাল গ্রিস (খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-৩২৩): এটি গ্রীক সভ্যতার স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচিত। এই সময়ে গণতন্ত্র, দর্শন, বিজ্ঞান, শিল্পকলা এবং সাহিত্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটে।
রাজনৈতিক কাঠামো: প্রাচীন গ্রিসের রাজনৈতিক কাঠামো ছিল অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ। প্রতিটি নগররাষ্ট্র ছিল স্বাধীন এবং নিজস্ব রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনুসরণ করত।
- রাজতন্ত্র: কিছু নগররাষ্ট্রে রাজা বা বাদশার শাসন ছিল।
- অলিগার্কি: কোনো কোনো নগররাষ্ট্রে মুষ্টিমেয় ধনী ও অভিজাত শ্রেণির শাসন প্রচলিত ছিল।
- টাইরানি: কিছু নগররাষ্ট্রে স্বৈরাচারী বা টাইরেন্টের শাসন দেখা যায়।
- গণতন্ত্র: এথেন্সে খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটে, যেখানে নাগরিকরা সরাসরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিত। পেরিক্লিস-এর সময়ে এথেন্স গণতন্ত্রের শীর্ষে পৌঁছেছিল।
সামাজিক কাঠামো: গ্রীক সমাজে শ্রেণীভেদ ছিল সুস্পষ্ট।
- নাগরিক: নগররাষ্ট্রের পূর্ণ অধিকার ভোগী পুরুষরা নাগরিক হিসেবে গণ্য হত।
- মেটিক: বিদেশি বণিক ও কারিগররা মেটিক নামে পরিচিত ছিল এবং তারা সীমিত অধিকার ভোগ করত।
- দাস: দাসরা সমাজের সর্বনিম্ন স্তরের মানুষ ছিল এবং তাদের কোনো অধিকার ছিল না।
অর্থনীতি: গ্রীক অর্থনীতি মূলত কৃষি, বাণিজ্য এবং হস্তশিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিল। জলবায়ু অনুকূল হওয়ায় জলপাই, আঙুর, শস্য এবং সবজি উৎপাদিত হত। গ্রীকরা দক্ষ নাবিক ও বণিক ছিল এবং তারা ভূমধ্যসাগরের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্য করত। কলোনি স্থাপনের মাধ্যমে তারা বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করেছিল।
ধর্ম ও পুরাণ: গ্রীক ধর্ম ছিল বহুঈশ্বরবাদী। গ্রীকরা বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করত, যাদের প্রত্যেকের নিজস্ব ক্ষমতা ও বৈশিষ্ট্য ছিল।
- জিউস: দেবতাদের রাজা এবং আকাশ ও বজ্রের দেবতা।
- পোসাইডন: সমুদ্রের দেবতা।
- হেরা: বিবাহ ও পরিবারের দেবী।
- অ্যাথেনা: জ্ঞান, বুদ্ধি ও যুদ্ধের দেবী।
- অ্যাপোলো: সঙ্গীত, কবিতা ও সূর্যের দেবতা।
- আর্টেমিস: শিকার ও চন্দ্রের দেবী।
গ্রীক পুরাণে দেব-দেবীদের কাহিনী, বীরত্বগাথা এবং সৃষ্টিতত্ত্ব বর্ণিত আছে। হোমার-এর ইলিয়াড ও ওডিসি এবং হেসিওড-এর থিওগনি গ্রীক পুরাণের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
দর্শন: গ্রীক দর্শন পশ্চিমা দর্শনের ভিত্তি স্থাপন করেছে। গ্রীক দার্শনিকরা যুক্তি, বুদ্ধি এবং সমালোচনামূলক চিন্তার মাধ্যমে জ্ঞানার্জনের চেষ্টা করতেন।
- সক্রেটিস: তিনি প্রশ্ন করার মাধ্যমে জ্ঞানার্জনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।
- প্লেটো: তিনি ‘আইডিয়া’র তত্ত্বের প্রবক্তা এবং ‘রিপাবলিক’ নামক গ্রন্থে আদর্শ রাষ্ট্রের ধারণা দেন।
- অ্যারিস্টটল: তিনি যুক্তিবিদ্যা, বিজ্ঞান, রাজনীতি এবং নীতিশাস্ত্রের উপর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: গ্রীকরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও অনেক অগ্রগতি লাভ করেছিল।
- গণিত: পিথাগোরাস এবং ইউক্লিড-এর অবদান উল্লেখযোগ্য।
- জ্যোতির্বিজ্ঞান: অ্যারিস্টারকাস প্রথম সৌরকেন্দ্রিক মডেল প্রস্তাব করেন।
- চিকিৎসাবিজ্ঞান: হিপোক্রেটিস-কে আধুনিক চিকিৎসার জনক বলা হয়।
- প্রকৌশল: গ্রীকরা উন্নতমানের রাস্তাঘাট, সেতু এবং জল সরবরাহ ব্যবস্থা নির্মাণ করেছিলেন।
শিল্পকলা ও স্থাপত্য: গ্রীক শিল্পকলা ও স্থাপত্য আজও বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
- ভাস্কর্য: গ্রীক ভাস্কররা মানবদেহকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম ছিলেন।
- স্থাপত্য: গ্রীক মন্দিরগুলি তাদের স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত। পারθενন এথেন্সের সবচেয়ে বিখ্যাত মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম।
- মৃৎশিল্প: গ্রীক মৃৎশিল্পীরা সুন্দর ও আকর্ষণীয় নকশার মৃৎপাত্র তৈরি করতেন।
সাহিত্য: গ্রীক সাহিত্য পশ্চিমা সাহিত্যের অন্যতম প্রাচীন এবং প্রভাবশালী ধারা।
- মহাকাব্য: হোমার-এর ইলিয়াড ও ওডিসি গ্রীক মহাকাব্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
- নাটক: গ্রীক নাট্যকাররা ট্র্যাজেডি ও কমেডি নামক দুটি প্রধান ধারায় নাটক রচনা করতেন। এস্কিলাস, সোফোক্লিস এবং ইউরিপিডিস ছিলেন বিখ্যাত ট্র্যাজেডি নাট্যকার। অ্যারিস্টোফেনেস ছিলেন বিখ্যাত কমেডি নাট্যকার।
- ইতিহাস: হেরোডোটাস-কে ইতিহাসের জনক বলা হয়। থুসিডাইডিস পেলোপনেশীয় যুদ্ধের ইতিহাস রচনা করেন।
শিক্ষা: প্রাচীন গ্রিসে শিক্ষার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এথেন্সে ব্যক্তিগত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষা দেওয়া হত। স্পার্টায় সামরিক প্রশিক্ষণ ছিল শিক্ষার প্রধান অংশ। প্লেটো-র প্রতিষ্ঠিত একাডেমি এবং অ্যারিস্টটল-এর লাইসিয়াম ছিল বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সামরিক কৌশল: গ্রীক নগররাষ্ট্রগুলো প্রায়শই নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করত। স্পার্টানরা তাদের সামরিক দক্ষতার জন্য বিখ্যাত ছিল। ফ্যালাঞ্জ নামক কৌশল তারা ব্যবহার করত, যেখানে পদাতিক সেনারা সারিবদ্ধভাবে যুদ্ধ করত। নৌযুদ্ধে এথেন্সের দক্ষতা ছিল উল্লেখযোগ্য। সালামিস-এর যুদ্ধ গ্রীকদের নৌ-শক্তির প্রমাণ দেয়।
পতন: গ্রীক সভ্যতার পতন বিভিন্ন কারণে হয়েছিল। নগররাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ক্রমাগত যুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক সংকট গ্রীক শক্তিকে দুর্বল করে দেয়। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ সালে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট-এর মৃত্যুর পর গ্রীক সাম্রাজ্য ভেঙে যায় এবং রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায়।
উত্তরাধিকার: গ্রীক সভ্যতা পশ্চিমা সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছে। এর রাজনৈতিক ধারণা, দার্শনিক চিন্তা, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, শিল্পকলা এবং সাহিত্য আজও বিশ্বজুড়ে অনুপ্রেরণা যোগায়। গণতন্ত্র, যুক্তিবিদ্যা, বিজ্ঞান, এবং শিল্পকলার মতো বিষয়গুলোতে গ্রীকদের অবদান অনস্বীকার্য।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সংযোগ: যদিও গ্রীক সভ্যতা এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং সরাসরি সম্পর্কিত নয়, তবে কিছু মৌলিক ধারণা এখানে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: গ্রীকরা যুদ্ধের ময়দানে কৌশলগত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিত। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিহার্য।
- সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণ: গ্রীক দার্শনিকরা সম্ভাবনা এবং যুক্তির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও মার্কেট অ্যানালাইসিস করে সাফল্যের সম্ভাবনা যাচাই করা হয়।
- দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা: গ্রীকরা দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা করত। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা উচিত।
- বৈচিত্র্যকরণ: গ্রীক অর্থনীতি বিভিন্ন খাতের উপর নির্ভরশীল ছিল। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনা উচিত।
টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এবং ভলিউম বিশ্লেষণ:
- ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন: বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়।
- মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে ট্রেন্ড নির্ধারণ করা যায়।
- আরএসআই (রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স): আরএসআই ব্যবহার করে ওভারবট এবং ওভারসোল্ড অবস্থা নির্ণয় করা যায়।
- MACD (মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স): MACD ব্যবহার করে বাজারের মোমেন্টাম বোঝা যায়।
- ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করা যায়।
- ভলিউম ইন্ডিকেটর: ভলিউম ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে বাজারের শক্তি এবং দুর্বলতা বোঝা যায়।
- বলিঙ্গার ব্যান্ড: বলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহার করে বাজারের ভোলাটিলিটি পরিমাপ করা যায়।
- স্টোকাস্টিক অসিলেটর: স্টোকাস্টিক অসিলেটর ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
- এল্ডার স্ক্রোল: এল্ডার স্ক্রোল ব্যবহার করে বাজারের ট্রেন্ড এবং রিভার্সাল চিহ্নিত করা যায়।
- প্যারাবলিক সার: প্যারাবলিক সার ব্যবহার করে সম্ভাব্য ব্রেকআউট পয়েন্ট সনাক্ত করা যায়।
- ইচি cloud: ইচি cloud ব্যবহার করে সাপোর্ট, রেজিস্ট্যান্স এবং ট্রেন্ডের দিক নির্ণয় করা যায়।
- এডিএক্স (এভারেজ ডিরেকশনাল ইন্ডেক্স): এডিএক্স ব্যবহার করে বাজারের ট্রেন্ডের শক্তি পরিমাপ করা যায়।
- সিসিআই (কমোডিটি চ্যানেল ইন্ডেক্স): সিসিআই ব্যবহার করে বাজারের সাইক্লিক মুভমেন্ট বোঝা যায়।
- ডিএমএ (ডাইরেকশনাল মুভিং এভারেজ): ডিএমএ ব্যবহার করে বাজারের দিক এবং গতিবিধি বিশ্লেষণ করা যায়।
- ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (ভিডব্লিউএপি): ভিডব্লিউএপি ব্যবহার করে গড় মূল্য এবং বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়।
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
