গিট টিউটোরিয়াল
গিট টিউটোরিয়াল
গিট একটি শক্তিশালী ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম। এটি প্রোগ্রামিংয়ের জগতে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। গিট ব্যবহার করে আপনি আপনার কোডের পরিবর্তনগুলি ট্র্যাক করতে পারবেন, পুরোনো সংস্করণে ফিরে যেতে পারবেন এবং অন্যদের সাথে সহজে সহযোগিতা করতে পারবেন। এই টিউটোরিয়ালে, আমরা গিট এর মৌলিক বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
গিট কী?
গিট হলো একটি ডিসট্রিবিউটেড ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম। এর মানে হলো, প্রতিটি ডেভেলপার তাদের কম্পিউটারে প্রকল্পের সম্পূর্ণ ইতিহাস সংরক্ষণ করে। এটি সেন্ট্রালাইজড ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম থেকে আলাদা, যেখানে সমস্ত ফাইল একটি সেন্ট্রাল সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে।
গিট শুধুমাত্র কোড ট্র্যাক করার জন্য নয়, যেকোনো ধরনের টেক্সট ফাইলের পরিবর্তন ট্র্যাক করতে পারে। এটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাতিয়ার।
গিট এর সুবিধা
গিট ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ভার্সন কন্ট্রোল: গিট আপনার ফাইলের প্রতিটি পরিবর্তনের ইতিহাস রাখে, যা আপনাকে পুরোনো সংস্করণে ফিরে যেতে সাহায্য করে।
- ব্রাঞ্চিং এবং মার্জিং: আপনি মূল কোডবেস থেকে আলাদা হয়ে নতুন ফিচার নিয়ে কাজ করতে পারেন এবং পরে সেটিকে আবার মূল কোডের সাথে মার্জ করতে পারেন। গিট ব্রাঞ্চিং একটি শক্তিশালী ফিচার।
- সহযোগিতা: গিট টিমের সদস্যদের মধ্যে সহজে কোড শেয়ার এবং সহযোগিতা করার সুযোগ তৈরি করে। গিটহাব এবং বিটবাকেট এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলি এই সহযোগিতা আরও সহজ করে।
- ব্যাকআপ এবং পুনরুদ্ধার: গিট আপনার কোডের একটি নির্ভরযোগ্য ব্যাকআপ রাখে, যা ডেটা হারানোর ঝুঁকি কমায়।
- অফলাইন কাজ: যেহেতু গিট ডিসট্রিবিউটেড, তাই আপনি ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই কাজ করতে পারবেন।
গিট ইন্সটল করা
গিট ইন্সটল করার জন্য, আপনার অপারেটিং সিস্টেমের জন্য উপযুক্ত প্যাকেজটি ডাউনলোড করতে হবে। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ইন্সটলেশন লিঙ্ক দেওয়া হলো:
- উইন্ডোজ: [1]
- ম্যাকওএস: [2]
- লিনাক্স: আপনার ডিস্ট্রিবিউশনের প্যাকেজ ম্যানেজার ব্যবহার করে গিট ইন্সটল করতে পারেন। যেমন, উবুন্টুতে `sudo apt-get install git` কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
ইন্সটল করার পর, টার্মিনাল বা কমান্ড প্রম্পট ওপেন করে `git --version` লিখে নিশ্চিত হয়ে নিন যে গিট সঠিকভাবে ইন্সটল হয়েছে।
গিট এর মৌলিক কমান্ড
গিট ব্যবহারের জন্য কিছু মৌলিক কমান্ড জানা জরুরি। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড আলোচনা করা হলো:
- git init: নতুন গিট রিপোজিটরি তৈরি করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। এটি একটি নতুন `.git` ডিরেক্টরি তৈরি করে, যা রিপোজিটরির সমস্ত তথ্য সংরক্ষণ করে।
- git clone: একটি বিদ্যমান রিপোজিটরি কপি করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ: `git clone https://github.com/username/repository.git`
- git add: ফাইলের পরিবর্তনগুলি স্টেজিং এরিয়াতে যুক্ত করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। `git add .` কমান্ড দিয়ে রিপোজিটরির সমস্ত পরিবর্তিত ফাইল যুক্ত করা যায়।
- git commit: স্টেজিং এরিয়াতে থাকা পরিবর্তনগুলি রিপোজিটরিতে সংরক্ষণ করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। `git commit -m "commit message"` - এখানে "commit message" হলো পরিবর্তনের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। কমিট মেসেজ লেখার নিয়ম জানা গুরুত্বপূর্ণ।
- git status: রিপোজিটরির বর্তমান অবস্থা দেখার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। এটি দেখায় কোন ফাইলগুলি পরিবর্তিত হয়েছে, কোনগুলি স্টেজিং এরিয়াতে আছে এবং কোনগুলি কমিট করা হয়েছে।
- git log: কমিট হিস্টরি দেখার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। এটি প্রতিটি কমিটের আইডি, লেখক, তারিখ এবং মেসেজ দেখায়।
- git branch: ব্রাঞ্চ তৈরি এবং দেখার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। `git branch` কমান্ড দিয়ে বর্তমান ব্রাঞ্চের তালিকা দেখা যায়, এবং `git branch new-branch-name` কমান্ড দিয়ে নতুন ব্রাঞ্চ তৈরি করা যায়।
- git checkout: একটি নির্দিষ্ট ব্রাঞ্চে সুইচ করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। `git checkout branch-name` কমান্ড দিয়ে অন্য ব্রাঞ্চে যাওয়া যায়।
- git merge: একটি ব্রাঞ্চের পরিবর্তনগুলি অন্য ব্রাঞ্চে মার্জ করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। `git merge branch-name` কমান্ড দিয়ে বর্তমান ব্রাঞ্চে অন্য ব্রাঞ্চের পরিবর্তনগুলি যুক্ত করা যায়।
- git pull: রিমোট রিপোজিটরি থেকে সর্বশেষ পরিবর্তনগুলি ডাউনলোড করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। `git pull origin main` কমান্ড দিয়ে `origin` নামক রিমোট রিপোজিটরির `main` ব্রাঞ্চ থেকে পরিবর্তনগুলি ডাউনলোড করা যায়।
- git push: লোকাল রিপোজিটরির পরিবর্তনগুলি রিমোট রিপোজিটরিতে আপলোড করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। `git push origin main` কমান্ড দিয়ে `origin` নামক রিমোট রিপোজিটরির `main` ব্রাঞ্চে পরিবর্তনগুলি আপলোড করা যায়।
গিট ব্রাঞ্চিং
গিট ব্রাঞ্চিং হলো গিট এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। ব্রাঞ্চিং আপনাকে মূল কোডবেস থেকে আলাদা হয়ে নতুন ফিচার নিয়ে কাজ করতে দেয়। যখন আপনি একটি নতুন ফিচার নিয়ে কাজ শুরু করেন, তখন একটি নতুন ব্রাঞ্চ তৈরি করুন। এতে মূল কোডবেস স্থিতিশীল থাকবে এবং আপনি নিরাপদে নতুন পরিবর্তনগুলি পরীক্ষা করতে পারবেন।
ব্রাঞ্চ তৈরি করার জন্য `git branch new-branch-name` কমান্ড ব্যবহার করুন। ব্রাঞ্চে সুইচ করার জন্য `git checkout new-branch-name` কমান্ড ব্যবহার করুন। কাজ শেষ হয়ে গেলে, ব্রাঞ্চটি মূল কোডবেসের সাথে মার্জ করুন।
| কমান্ড | |
| `git branch` | |
| `git branch new-branch-name` | |
| `git checkout branch-name` | |
| `git merge branch-name` | |
| `git branch -d branch-name` |
গিট এবং রিমোট রিপোজিটরি
গিট সাধারণত রিমোট রিপোজিটরি যেমন গিটহাব, বিটবাকেট অথবা গিটল্যাব এর সাথে ব্যবহার করা হয়। রিমোট রিপোজিটরি হলো আপনার কোডের একটি অনলাইন ব্যাকআপ এবং এটি টিমের সদস্যদের সাথে সহযোগিতা করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় স্থান হিসেবে কাজ করে।
রিমোট রিপোজিটরি যুক্ত করার জন্য `git remote add origin repository-url` কমান্ড ব্যবহার করুন। `origin` হলো রিমোট রিপোজিটরির একটি নাম, আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী অন্য নামও দিতে পারেন।
কনফ্লিক্ট (Conflict) সমাধান
যখন আপনি এবং অন্য কেউ একই ফাইলের একই অংশে পরিবর্তন করেন, তখন মার্জ করার সময় কনফ্লিক্ট হতে পারে। গিট কনফ্লিক্টগুলো চিহ্নিত করে এবং আপনাকে সেগুলি সমাধান করতে বলে।
কনফ্লিক্ট সমাধানের জন্য, আপনাকে ফাইলটি খুলতে হবে এবং গিট কর্তৃক চিহ্নিত করা অংশগুলো ম্যানুয়ালি এডিট করতে হবে। কনফ্লিক্ট সমাধান করার পর, ফাইলটি সেভ করুন এবং `git add` ও `git commit` কমান্ড ব্যবহার করে পরিবর্তনগুলি কমিট করুন।
গিট ইগনোর (Ignore) ফাইল
কিছু ফাইল আছে যা আপনি গিট এর মাধ্যমে ট্র্যাক করতে চান না, যেমন লগ ফাইল, টেম্পোরারি ফাইল অথবা কনফিগারেশন ফাইল। এই ফাইলগুলোকে `.gitignore` ফাইলে উল্লেখ করে গিটকে সেগুলি ইগনোর করতে বলতে পারেন।
`.gitignore` ফাইলে প্রতিটি ফাইলের নাম অথবা প্যাটার্ন এক লাইনে লিখুন। উদাহরণস্বরূপ:
```
- .log
tmp/ config.ini ```
উন্নত গিট কমান্ড
- git rebase: কমিট হিস্টরি পরিবর্তন করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
- git stash: আপনার বর্তমান পরিবর্তনগুলি সাময়িকভাবে সংরক্ষণ করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
- git cherry-pick: একটি নির্দিষ্ট কমিট অন্য ব্রাঞ্চে যুক্ত করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
- git revert: একটি কমিটকে বাতিল করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
গিট ব্যবহার করে সহযোগিতা
গিট টিমের সদস্যদের মধ্যে কোড শেয়ার এবং সহযোগিতা করার জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। পুল রিকোয়েস্ট (Pull Request) ব্যবহার করে আপনি আপনার পরিবর্তনগুলি মূল কোডবেসে মার্জ করার জন্য অনুরোধ করতে পারেন। আপনার টিমের সদস্যরা আপনার কোড পর্যালোচনা করতে পারবে এবং মতামত দিতে পারবে।
গিট এর ব্যবহারিক প্রয়োগ
গিট শুধু সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন:
- ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট: ওয়েবসাইটের কনটেন্ট এবং ডিজাইন ট্র্যাক করার জন্য।
- ডকুমেন্টেশন: ডকুমেন্টের পরিবর্তনগুলি ট্র্যাক করার জন্য।
- কনফিগারেশন ম্যানেজমেন্ট: সার্ভার এবং অ্যাপ্লিকেশনের কনফিগারেশন ফাইল ট্র্যাক করার জন্য।
- ডেটা সায়েন্স: ডেটা বিশ্লেষণের কোড এবং ফলাফল ট্র্যাক করার জন্য।
রিসোর্স
- গিট অফিসিয়াল ডকুমেন্টেশন: [3]
- গিটহাব হেল্প: [4]
- বিটবাকেট ডকুমেন্টেশন: [5]
- গিট টিউটোরিয়াল (w3schools): [6]
এই টিউটোরিয়ালটি আপনাকে গিট এর মৌলিক বিষয়গুলো বুঝতে সাহায্য করবে। নিয়মিত অনুশীলন এবং ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি গিট এর আরও উন্নত ফিচারগুলো শিখতে পারবেন এবং আপনার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারবেন।
এই টিউটোরিয়ালে আমরা গিট এর প্রাথমিক বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। আরও জানতে, আপনি উপরের রিসোর্সগুলো অনুসরণ করতে পারেন। এছাড়াও, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ভলিউম বিশ্লেষণ, ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স, মুভিং এভারেজ, আরএসআই, এমএসিডি, বলিঙ্গার ব্যান্ড, ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট, ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন, বাইনারি অপশন, ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং ইত্যাদি বিষয়ে আরও জ্ঞান অর্জন করতে পারেন।
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
