গিটল্যাব ভিডিও টিউটোরিয়াল

ভূমিকা

গিটল্যাব (GitLab) একটি শক্তিশালী এবং বহুল ব্যবহৃত ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম। এটি মূলত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজে ব্যবহৃত হয়, তবে বর্তমানে বিভিন্ন প্রোজেক্টের কোড ব্যবস্থাপনার জন্য এটি খুবই জনপ্রিয়। গিটল্যাব শুধুমাত্র কোড হোস্ট করার প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ ডেভঅপস (DevOps) প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। এই প্ল্যাটফর্মটিতে রয়েছে কোড রিপোজিটরি, ইস্যু ট্র্যাকিং, কন্টিনিউয়াস ইন্টিগ্রেশন (CI), কন্টিনিউয়াস ডেলিভারি (CD) এবং আরও অনেক সুবিধা। গিটল্যাব শেখা নতুন ডেভেলপারদের জন্য যেমন জরুরি, তেমনই অভিজ্ঞ ডেভেলপারদের জন্য প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে সহায়ক। এই নিবন্ধে, গিটল্যাব ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে, যা নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য একটি পরিপূর্ণ টিউটোরিয়াল হিসেবে কাজ করবে।

গিটল্যাব এর মূল ধারণা

গিটল্যাব ব্যবহার করার আগে এর কিছু মৌলিক ধারণা সম্পর্কে জানা দরকার। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা আলোচনা করা হলো:

রিপোজিটরি (Repository): এটি হলো আপনার প্রোজেক্টের ফাইল এবং ফোল্ডারের সংগ্রহস্থল। গিটল্যাব সার্ভারে এই রিপোজিটরি তৈরি করা হয়।
কমিট (Commit): যখন আপনি আপনার কোডে কোনো পরিবর্তন করেন এবং তা রিপোজিটরিতে সংরক্ষণ করতে চান, তখন কমিট করা হয়। প্রতিটি কমিটের সাথে একটি বার্তা (message) যুক্ত থাকে, যা পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে।
ব্রাঞ্চ (Branch): ব্রাঞ্চ হলো রিপোজিটরির একটি স্বতন্ত্র শাখা। এটি আপনাকে মূল কোডবেস থেকে আলাদাভাবে কাজ করতে দেয়। নতুন ফিচার তৈরি বা বাগ ফিক্স করার জন্য ব্রাঞ্চ ব্যবহার করা হয়।
মার্জ রিকোয়েস্ট (Merge Request): যখন আপনি কোনো ব্রাঞ্চের কাজ শেষ করেন এবং তা মূল কোডবেসের সাথে যুক্ত করতে চান, তখন একটি মার্জ রিকোয়েস্ট তৈরি করা হয়।
ফর্ক (Fork): ফর্ক হলো অন্য কারো রিপোজিটরির একটি কপি, যা আপনি আপনার নিজের অ্যাকাউন্টে তৈরি করেন। এটি আপনাকে মূল প্রোজেক্টে অবদান রাখতে সাহায্য করে।
ক্লোন (Clone): ক্লোন হলো আপনার লোকাল মেশিনে রিপোজিটরির একটি কপি তৈরি করা।

গিটল্যাব অ্যাকাউন্ট তৈরি এবং সেটআপ

গিটল্যাব ব্যবহার শুরু করার জন্য প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।

১. গিটল্যাবের ওয়েবসাইটে যান: [[1]] ২. "Register" অথবা "Sign up" অপশনে ক্লিক করুন। ৩. আপনার নাম, ইমেইল ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। ৪. অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর, আপনার প্রোফাইল সেটআপ করুন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য যোগ করুন।

অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর, আপনার লোকাল মেশিনে গিট ইনস্টল করা থাকতে হবে। গিট ইনস্টল করার জন্য, আপনি অফিসিয়াল গিট ওয়েবসাইট থেকে আপনার অপারেটিং সিস্টেমের জন্য উপযুক্ত সংস্করণটি ডাউনলোড করতে পারেন: [[2]]

গিট ইনস্টল করার পর, আপনাকে গিটল্যাবের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। এর জন্য, আপনার গিটল্যাব অ্যাকাউন্টে একটি ব্যক্তিগত অ্যাক্সেস টোকেন (Personal Access Token) তৈরি করতে হবে।

১. গিটল্যাব অ্যাকাউন্টে লগইন করুন। ২. "User Settings" এ যান। ৩. "Access Tokens" নির্বাচন করুন। ৪. একটি নতুন টোকেন তৈরি করুন এবং প্রয়োজনীয় স্কোপ (scope) নির্বাচন করুন। ৫. টোকেনটি নিরাপদে সংরক্ষণ করুন।

গিটল্যাব রিপোজিটরি তৈরি

গিটল্যাব অ্যাকাউন্টে লগইন করার পর, আপনি একটি নতুন রিপোজিটরি তৈরি করতে পারেন।

১. "Create new project" অপশনে ক্লিক করুন। ২. প্রোজেক্টের নাম এবং বিবরণ লিখুন। ৩. রিপোজিটরি ভিজিবিলিটি (visibility) নির্বাচন করুন (Public বা Private)। ৪. "Initialize repository with a README" অপশনটি নির্বাচন করুন। ৫. "Create project" অপশনে ক্লিক করুন।

নতুন রিপোজিটরি তৈরি হয়ে গেলে, আপনি আপনার লোকাল মেশিনে এটি ক্লোন করতে পারেন।

```bash git clone <repository_url> ```

এখানে `<repository_url>` হলো আপনার গিটল্যাব রিপোজিটরির URL।

বেসিক গিট কমান্ড

গিটল্যাব ব্যবহার করার জন্য কিছু বেসিক গিট কমান্ড জানা জরুরি। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড আলোচনা করা হলো:

git init: নতুন গিট রিপোজিটরি তৈরি করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
git add: ফাইলের পরিবর্তনগুলো স্টেজিং এরিয়াতে যুক্ত করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
git commit: স্টেজিং এরিয়াতে থাকা পরিবর্তনগুলো রিপোজিটরিতে সংরক্ষণ করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
git push: লোকাল রিপোজিটরি থেকে গিটল্যাব রিপোজিটরিতে পরিবর্তনগুলো আপলোড করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
git pull: গিটল্যাব রিপোজিটরি থেকে লোকাল রিপোজিটরিতে পরিবর্তনগুলো ডাউনলোড করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
git branch: নতুন ব্রাঞ্চ তৈরি বা বিদ্যমান ব্রাঞ্চগুলো দেখার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
git checkout: একটি নির্দিষ্ট ব্রাঞ্চে সুইচ করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।
git merge: একটি ব্রাঞ্চের পরিবর্তনগুলো অন্য ব্রাঞ্চের সাথে যুক্ত করার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়।

ব্রাঞ্চিং এবং মার্জিং

গিটল্যাবে ব্রাঞ্চিং এবং মার্জিং একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আপনাকে সমান্তরালভাবে কাজ করতে এবং কোডবেসকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

নতুন ব্রাঞ্চ তৈরি করার জন্য:

```bash git branch <branch_name> ```

ব্রাঞ্চে সুইচ করার জন্য:

```bash git checkout <branch_name> ```

ব্রাঞ্চের কাজ শেষ হয়ে গেলে, এটিকে মূল ব্রাঞ্চের সাথে মার্জ করার জন্য একটি মার্জ রিকোয়েস্ট তৈরি করতে হবে। গিটল্যাবে মার্জ রিকোয়েস্ট তৈরি করার জন্য, প্রথমে আপনার ব্রাঞ্চটি গিটল্যাব রিপোজিটরিতে পুশ করুন। তারপর গিটল্যাব ওয়েবসাইটে গিয়ে মার্জ রিকোয়েস্ট তৈরি করুন।

গিটল্যাব CI/CD

গিটল্যাব CI/CD (কন্টিনিউয়াস ইন্টিগ্রেশন/কন্টিনিউয়াস ডেলিভারি) একটি শক্তিশালী বৈশিষ্ট্য, যা আপনাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার কোড পরীক্ষা এবং স্থাপনা করতে সাহায্য করে।

গিটল্যাব CI/CD ব্যবহার করার জন্য, আপনাকে একটি `.gitlab-ci.yml` ফাইল তৈরি করতে হবে। এই ফাইলে আপনার CI/CD পাইপলাইনের সংজ্ঞা দেওয়া থাকে।

এখানে একটি সাধারণ `.gitlab-ci.yml` ফাইলের উদাহরণ দেওয়া হলো:

```yaml stages:

 - test
 - deploy

test:

 stage: test
 script:
   - echo "Running tests..."
   - # আপনার পরীক্ষার কমান্ড এখানে লিখুন

deploy:

 stage: deploy
 script:
   - echo "Deploying to production..."
   - # আপনার স্থাপনার কমান্ড এখানে লিখুন
 only:
   - main

```

এই ফাইলে, `stages` অংশে আপনার পাইপলাইনের বিভিন্ন পর্যায় উল্লেখ করা হয়েছে। `test` এবং `deploy` হলো দুটি পর্যায়। প্রতিটি পর্যায়ে `script` অংশে কমান্ড লেখা হয়, যা সেই পর্যায়ে চালানো হবে। `only` অংশে উল্লেখ করা হয়েছে যে কোন ব্রাঞ্চে এই পাইপলাইনটি চলবে।

গিটল্যাব ইস্যু ট্র্যাকিং

গিটল্যাব ইস্যু ট্র্যাকিং আপনাকে আপনার প্রোজেক্টের বাগ এবং ফিচার অনুরোধগুলি ট্র্যাক করতে সাহায্য করে। আপনি ইস্যু তৈরি করতে পারেন, সেগুলোতে মন্তব্য করতে পারেন এবং সেগুলোকে বিভিন্ন মাইলস্টোনে যুক্ত করতে পারেন।

ইস্যু তৈরি করার জন্য, আপনার গিটল্যাব রিপোজিটরিতে যান এবং "Issues" ট্যাবে ক্লিক করুন। তারপর "New issue" অপশনে ক্লিক করে একটি নতুন ইস্যু তৈরি করুন।

গিটল্যাব উইকি

গিটল্যাব উইকি আপনাকে আপনার প্রোজেক্টের ডকুমেন্টেশন তৈরি এবং পরিচালনা করতে সাহায্য করে। আপনি উইকি পেজ তৈরি করতে পারেন, সেগুলোতে টেক্সট এবং ইমেজ যোগ করতে পারেন এবং সেগুলোকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সাজাতে পারেন।

উইকি ব্যবহার করার জন্য, আপনার গিটল্যাব রিপোজিটরিতে যান এবং "Wiki" ট্যাবে ক্লিক করুন। তারপর "Create new page" অপশনে ক্লিক করে একটি নতুন উইকি পেজ তৈরি করুন।

গিটল্যাব এর উন্নত বৈশিষ্ট্যসমূহ

গিটল্যাব রানার (GitLab Runner): গিটল্যাব রানার হলো একটি অ্যাপ্লিকেশন, যা আপনার CI/CD পাইপলাইন চালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। আপনি আপনার নিজের রানার তৈরি করতে পারেন অথবা গিটল্যাবের শেয়ার্ড রানার ব্যবহার করতে পারেন।
গিটল্যাব কন্টেইনার রেজিস্ট্রি (GitLab Container Registry): গিটল্যাব কন্টেইনার রেজিস্ট্রি আপনাকে ডকার ইমেজ সংরক্ষণ এবং পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
গিটল্যাব মনিটরিং (GitLab Monitoring): গিটল্যাব মনিটরিং আপনাকে আপনার অ্যাপ্লিকেশন এবং অবকাঠামো নিরীক্ষণ করতে সাহায্য করে।
গিটল্যাব সিকিউরিটি স্ক্যানিং (GitLab Security Scanning): গিটল্যাব সিকিউরিটি স্ক্যানিং আপনাকে আপনার কোডে নিরাপত্তা ত্রুটি খুঁজে বের করতে সাহায্য করে।

উপসংহার

গিটল্যাব একটি শক্তিশালী এবং বহুমুখী প্ল্যাটফর্ম, যা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজকে সহজ করে তোলে। এই টিউটোরিয়ালে, গিটল্যাবের মূল ধারণা, অ্যাকাউন্ট তৈরি, রিপোজিটরি তৈরি, বেসিক গিট কমান্ড, ব্রাঞ্চিং, মার্জিং, CI/CD, ইস্যু ট্র্যাকিং এবং উইকি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই জ্ঞান ব্যবহার করে, আপনি আপনার প্রোজেক্টের জন্য গিটল্যাব ব্যবহার শুরু করতে পারেন এবং এর সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারেন। এছাড়াও, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ এর মতো বিষয়গুলো ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট লাইফসাইকেল সম্পর্কে আরও জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিট (Git) সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য, এই লিঙ্কটি দেখুন। ভার্সন কন্ট্রোল এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। ডেভঅপস সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। কন্টিনিউয়াস ইন্টিগ্রেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। কন্টিনিউয়াস ডেলিভারি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিটল্যাব CI/CD সম্পর্কে আরও জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিটল্যাব রানার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিটল্যাব কন্টেইনার রেজিস্ট্রি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিটল্যাব মনিটরিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিটল্যাব সিকিউরিটি স্ক্যানিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। ব্রাঞ্চিং স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। মার্জ রিকোয়েস্ট কিভাবে তৈরি করতে হয় জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিট কমান্ড এর সম্পূর্ণ তালিকা দেখতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। গিটল্যাব ডকুমেন্টেশন এর জন্য, এই লিঙ্কটি দেখুন। সোর্স কোড ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। কোড রিভিউ এর গুরুত্ব জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। অ্যাজাইল ডেভেলপমেন্ট এর সাথে গিটল্যাবের ব্যবহার জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। স্ক্রাম মেথডোলজি সম্পর্কে জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন। কানবান বোর্ড কিভাবে ব্যবহার করতে হয় জানতে, এই লিঙ্কটি দেখুন।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ