কল এবং পুট অপশন

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

কল এবং পুট অপশন

অপশন ট্রেডিং একটি জটিল আর্থিক প্রক্রিয়া, যেখানে বিনিয়োগকারীরা কোনো নির্দিষ্ট সম্পদ (যেমন স্টক, কমোডিটি, কারেন্সি ইত্যাদি) একটি নির্দিষ্ট দামে ভবিষ্যতে কেনার বা বিক্রি করার অধিকার অর্জন করে। এই অধিকারটি শর্তসাপেক্ষ, এবং এর জন্য বিনিয়োগকারীকে একটি নির্দিষ্ট প্রিমিয়াম প্রদান করতে হয়। কল অপশন এবং পুট অপশন হল অপশন ট্রেডিং-এর দুটি প্রধান প্রকার। এই নিবন্ধে, আমরা কল এবং পুট অপশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

কল অপশন কি? কল অপশন ক্রেতাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট দামে কোনো সম্পদ কেনার অধিকার দেয়, কিন্তু কোনো বাধ্যবাধকতা দেয় না। এই নির্দিষ্ট দামকে স্ট্রাইক প্রাইস (Strike Price) বলা হয়। কল অপশন সাধারণত তখন কেনা হয়, যখন বিনিয়োগকারী মনে করেন যে সম্পদের দাম বাড়বে।

উদাহরণস্বরূপ, ধরা যাক একটি স্টকের বর্তমান দাম 100 টাকা। একজন বিনিয়োগকারী 110 টাকার স্ট্রাইক প্রাইসের একটি কল অপশন কিনলেন, যার প্রিমিয়াম 5 টাকা। যদি স্টকের দাম 110 টাকার উপরে যায়, তাহলে বিনিয়োগকারী অপশনটি ব্যবহার করে 110 টাকায় স্টকটি কিনতে পারবেন এবং বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন। অন্য দিকে, যদি স্টকের দাম 110 টাকার নিচে থাকে, তাহলে বিনিয়োগকারী অপশনটি ব্যবহার করবেন না এবং শুধুমাত্র প্রিমিয়াম হিসেবে দেওয়া 5 টাকাই হারাবেন।

পুট অপশন কি? পুট অপশন ক্রেতাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট দামে কোনো সম্পদ বিক্রি করার অধিকার দেয়, কিন্তু কোনো বাধ্যবাধকতা দেয় না। এই নির্দিষ্ট দামকেও স্ট্রাইক প্রাইস বলা হয়। পুট অপশন সাধারণত তখন কেনা হয়, যখন বিনিয়োগকারী মনে করেন যে সম্পদের দাম কমবে।

উদাহরণস্বরূপ, ধরা যাক একটি স্টকের বর্তমান দাম 100 টাকা। একজন বিনিয়োগকারী 90 টাকার স্ট্রাইক প্রাইসের একটি পুট অপশন কিনলেন, যার প্রিমিয়াম 5 টাকা। যদি স্টকের দাম 90 টাকার নিচে নেমে যায়, তাহলে বিনিয়োগকারী অপশনটি ব্যবহার করে 90 টাকায় স্টকটি বিক্রি করতে পারবেন এবং বাজারে কম দামে বিক্রি হওয়া থেকে বাঁচতে পারবেন। অন্য দিকে, যদি স্টকের দাম 90 টাকার উপরে থাকে, তাহলে বিনিয়োগকারী অপশনটি ব্যবহার করবেন না এবং শুধুমাত্র প্রিমিয়াম হিসেবে দেওয়া 5 টাকাই হারাবেন।

কল এবং পুট অপশনের মধ্যেকার মূল পার্থক্য

| বৈশিষ্ট্য | কল অপশন | পুট অপশন | |---|---|---| | অধিকার | সম্পদ কেনার অধিকার | সম্পদ বিক্রি করার অধিকার | | কখন কেনা হয় | যখন দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকে | যখন দাম কমার সম্ভাবনা থাকে | | স্ট্রাইক প্রাইস | বর্তমান দামের থেকে বেশি | বর্তমান দামের থেকে কম | | লাভ | দাম বাড়লে | দাম কমলে | | ক্ষতি | প্রিমিয়াম | প্রিমিয়াম |

অপশন ট্রেডিং-এর পরিভাষা

  • স্ট্রাইক প্রাইস (Strike Price): যে দামে অপশন ক্রেতা সম্পদ কিনতে বা বিক্রি করতে পারে।
  • প্রিমিয়াম (Premium): অপশন কেনার জন্য ক্রেতা যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করে।
  • মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ (Expiration Date): অপশনের সময়সীমা, যার মধ্যে অপশনটি ব্যবহার করতে হয়।
  • ইন-দ্য-মানি (In-the-Money): যখন অপশনটি ব্যবহার করলে লাভ হবে।
  • অ্যাট-দ্য-মানি (At-the-Money): যখন অপশনের স্ট্রাইক প্রাইস এবং সম্পদের বর্তমান দাম সমান হয়।
  • আউট-অফ-দ্য-মানি (Out-of-the-Money): যখন অপশনটি ব্যবহার করলে ক্ষতি হবে।
  • আমেরিকান অপশন (American Option): মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে যেকোনো সময় ব্যবহার করা যায়।
  • ইউরোপীয় অপশন (European Option): শুধুমাত্র মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখে ব্যবহার করা যায়।

অপশন ট্রেডিং কৌশল

বিভিন্ন ধরনের অপশন ট্রেডিং কৌশল রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীরা তাদের ঝুঁকি এবং লাভের সম্ভাবনা অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে। কিছু জনপ্রিয় কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • কভারড কল (Covered Call): নিজের কাছে থাকা স্টক বিক্রি করার জন্য কল অপশন বিক্রি করা।
  • প্রোটেক্টিভ পুট (Protective Put): স্টকের দাম কমার হাত থেকে বাঁচতে পুট অপশন কেনা।
  • স্ট্র্যাডল (Straddle): একই স্ট্রাইক প্রাইসের কল এবং পুট অপশন একসাথে কেনা।
  • স্ট্র্যাঙ্গল (Strangle): বিভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইসের কল এবং পুট অপশন একসাথে কেনা।
  • বাটারফ্লাই স্প্রেড (Butterfly Spread): তিনটি ভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইসের অপশন ব্যবহার করে একটি কৌশল তৈরি করা।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং অপশন ট্রেডিং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ অপশন ট্রেডিং-এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর, যেমন মুভিং এভারেজ (Moving Average), আরএসআই (RSI), এমএসিডি (MACD) ইত্যাদি ব্যবহার করে ভবিষ্যতের দামের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে, বিনিয়োগকারীরা কল বা পুট অপশন কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ভলিউম বিশ্লেষণ এবং অপশন ট্রেডিং ভলিউম বিশ্লেষণ অপশন ট্রেডিং-এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ভলিউম বৃদ্ধি বা হ্রাসের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়। যদি কোনো স্টকের ভলিউম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়, তবে এটি দামের বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অপশন ট্রেডিং-এ ঝুঁকি বিদ্যমান। বিনিয়োগকারীদের উচিত তাদের ঝুঁকি সহনশীলতা অনুযায়ী ট্রেড করা এবং স্টপ-লস (Stop-Loss) ব্যবহার করা। পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনা এবং অতিরিক্ত লিভারেজ (Leverage) ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সম্পর্ক বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি সরলীকৃত অপশন ট্রেডিং পদ্ধতি। এখানে, বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা অনুমান করেন। যদি অনুমান সঠিক হয়, তবে তারা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ পান, অন্যথায় তারা তাদের বিনিয়োগ হারান। কল এবং পুট অপশনের ধারণা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ভিত্তি।

অপশন ট্রেডিং-এর সুবিধা

  • কম বিনিয়োগে বেশি লাভের সুযোগ।
  • ঝুঁকি কমানোর সুযোগ।
  • বিভিন্ন ট্রেডিং কৌশল ব্যবহারের সুযোগ।
  • বাজারের উভয় দিকেই ট্রেড করার সুযোগ (দাম বাড়লেও, কমলেও)।

অপশন ট্রেডিং-এর অসুবিধা

  • জটিল প্রক্রিয়া।
  • উচ্চ ঝুঁকি।
  • সময়সীমা মেনে চলতে হয়।
  • প্রিমিয়াম হারানোর ঝুঁকি।

উপসংহার কল এবং পুট অপশন অপশন ট্রেডিং-এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অপশনগুলো ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিওকে সুরক্ষিত করতে এবং লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে পারেন। তবে, অপশন ট্রেডিং একটি জটিল প্রক্রিয়া, তাই এটি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নিয়মকানুন মেনে ট্রেড করা উচিত। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণ, লিভারেজ সম্পর্কে জ্ঞান রাখা অত্যাবশ্যক। এছাড়াও, বাজার বিশ্লেষণ, ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ, অর্থনৈতিক সূচক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অবগত থাকা ভালো।

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер