উইলিয়াম পিটার ব্ল্যাটি
উইলিয়াম পিটার ব্ল্যাটি
উইলিয়াম পিটার ব্ল্যাটি (জন্ম ১৯৪০) একজন মার্কিন মনোবিজ্ঞানী যিনি অপরাধ মনোবিজ্ঞান এবং সিরিয়াল কিলারদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাজের জন্য পরিচিত। তিনি সিরিয়াল কিলিং-এর প্রোফাইলিং এবং শিকার নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করেছেন। ব্ল্যাটি বিশেষভাবে টেড বান্ডি, জেফরি ডাহমার এবং জন ওয়েইন গেসি-র মতো কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারদের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে সাক্ষাৎকার নিয়ে তাদের মানসিক অবস্থা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন।
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
উইলিয়াম ব্ল্যাটি ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ডক্টরেট শেষ করার পর, তিনি ফ্লোরিডাতে ফিরে যান এবং সেখানেই তার কর্মজীবন শুরু করেন।
কর্মজীবন
ব্ল্যাটি ফ্লোরিডা ডিপার্টমেন্ট অফ corrections-এ একজন মনোবিজ্ঞানী হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে তিনি অপরাধীদের মূল্যায়ন এবং পুনর্বাসনের কাজ করেন। ১৯৮০-এর দশকে, তিনি সিরিয়াল কিলারদের প্রোফাইলিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে মনোযোগ দেন এবং এই বিষয়ে এফবিআই-কে পরামর্শ দিতে শুরু করেন।
- সিরিয়াল কিলারদের প্রোফাইলিং: ব্ল্যাটি সিরিয়াল কিলারদের আচরণ, শিকার নির্বাচন এবং অপরাধের ধরণ বিশ্লেষণ করে তাদের প্রোফাইল তৈরি করতেন। এই প্রোফাইলগুলি তদন্তকারীদের সিরিয়াল কিলারদের শনাক্ত করতে এবং গ্রেপ্তার করতে সহায়ক হত।
- অপরাধী সাক্ষাৎকার: তিনি কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারদের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে সাক্ষাৎকার নিয়ে তাদের মানসিক অবস্থা, অপরাধের উদ্দেশ্য এবং ব্যক্তিগত ইতিহাস সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করেন।
- গবেষণা এবং প্রকাশনা: ব্ল্যাটি সিরিয়াল কিলিং এবং অপরাধী মনস্তত্ত্ব নিয়ে অসংখ্য গবেষণা প্রবন্ধ এবং বই লিখেছেন। তার কাজগুলি অপরাধ বিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়।
উল্লেখযোগ্য কাজ
উইলিয়াম ব্ল্যাটি তার কর্মজীবনে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজ নিচে উল্লেখ করা হলো:
- টেড বান্ডির সাথে সাক্ষাৎকার: ব্ল্যাটি টেড বান্ডি-র সাথে দীর্ঘ সময় ধরে সাক্ষাৎকার নিয়ে তার মানসিক অবস্থা এবং অপরাধের পেছনের কারণগুলো বোঝার চেষ্টা করেন। বান্ডি ছিল একজন সুদর্শন এবং ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তি, যে নারীদের ফাঁদে ফেলে তাদের হত্যা করত। ব্ল্যাটি বান্ডির ব্যক্তিত্বের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করতে সক্ষম হন।
- জেফরি ডাহমারের সাথে সাক্ষাৎকার: জেফরি ডাহমার ছিল একজন সিরিয়াল কিলার এবং নরখাদক। ব্ল্যাটি ডাহমারের সাথে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেন এবং তার বিকৃত মানসিকতা এবং অপরাধের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারেন। ডাহমারের ক্ষেত্রে, ব্ল্যাটি তার শৈশবের trauma এবং মানসিক অসুস্থতার প্রভাব বিশ্লেষণ করেন।
- জন ওয়েইন গেসির সাথে সাক্ষাৎকার: জন ওয়েইন গেসি ছিল ফ্লোরিডার একজন সিরিয়াল কিলার, যে কমপক্ষে পাঁচটি নারীকে হত্যা করেছিল। ব্ল্যাটি গেসির সাথেও সাক্ষাৎকার নিয়ে তার অপরাধের ধরণ এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন। গেসির ক্ষেত্রে, ব্ল্যাটি তার যৌন বিকৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রবণতা নিয়ে আলোচনা করেন।
ব্ল্যাটির তত্ত্ব এবং ধারণা
উইলিয়াম ব্ল্যাটি সিরিয়াল কিলিং নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব এবং ধারণা প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:
- শিকার নির্বাচন প্রক্রিয়া: ব্ল্যাটি মনে করেন যে সিরিয়াল কিলাররা সাধারণত নির্দিষ্ট ধরনের শিকার নির্বাচন করে। এই নির্বাচনের পেছনে তাদের ব্যক্তিগত পছন্দ, মানসিক চাহিদা এবং অপরাধের ধরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- অপরাধের মোডাস অপারেন্ডি (Modus Operandi): তিনি বলেন যে প্রতিটি সিরিয়াল কিলারের অপরাধের একটি বিশেষ ধরণ থাকে, যা তাদের ব্যক্তিত্ব এবং মানসিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটায়। এই মোডাস অপারেন্ডি তদন্তকারীদের কিলারকে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
- ক্ষমতার খেলা: ব্ল্যাটি মনে করেন যে সিরিয়াল কিলিং প্রায়শই ক্ষমতার খেলার একটি অংশ। কিলাররা তাদের শিকারের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে চায় এবং তাদের দুর্বলতা এবং অসহায়ত্ব উপভোগ করে।
- শৈশবের trauma-এর প্রভাব: তিনি বিশ্বাস করেন যে সিরিয়াল কিলারদের শৈশবের trauma এবং মানসিক আঘাত তাদের পরবর্তী জীবনে অপরাধী হয়ে উঠতে প্রভাবিত করে।
কৌশল এবং বিশ্লেষণ
উইলিয়াম ব্ল্যাটি বিভিন্ন অপরাধ তদন্ত কৌশল এবং বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- প্রোফাইলিং: অপরাধীর মানসিক এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে একটি প্রোফাইল তৈরি করা।
- ভৌগোলিক প্রোফাইলিং: অপরাধের স্থান এবং শিকারের ভৌগোলিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে অপরাধীর সম্ভাব্য বাসস্থান এবং কর্মক্ষেত্র নির্ণয় করা।
- অপরাধ দৃশ্য বিশ্লেষণ: অপরাধের স্থান ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে অপরাধীর কার্যকলাপ এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা।
- সাক্ষাত্কার কৌশল: অপরাধীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ সাক্ষাত্কার কৌশল ব্যবহার করা, যেমন র্যাপোর্ট তৈরি করা এবং মানসিক চাপ প্রয়োগ করা।
ব্ল্যাটির কাজ এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং
যদিও উইলিয়াম ব্ল্যাটি একজন মনোবিজ্ঞানী এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ, তার কাজ বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। তবে, তার প্রোফাইলিং এবং বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ঝুঁকি মূল্যায়ন: ব্ল্যাটির প্রোফাইলিং দক্ষতা ব্যবহার করে ট্রেডাররা বাজারের ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে পারে এবং সম্ভাব্য লাভজনক ট্রেড চিহ্নিত করতে পারে।
- প্যাটার্ন recognition: তিনি অপরাধের ধরণ এবং শিকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে প্যাটার্নগুলো চিহ্নিত করেন, তা বাজারের trend এবং price movement-এর প্যাটার্নগুলো বুঝতে সহায়ক হতে পারে।
- মানসিক অবস্থা বিশ্লেষণ: ট্রেডারদের মানসিক অবস্থা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা ট্রেডিংয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্ল্যাটির কাজ থেকে এই বিষয়ে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
- সিদ্ধান্ত গ্রহণ: দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ব্ল্যাটির বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ এবং ভলিউম বিশ্লেষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্ল্যাটির প্রোফাইলিং কৌশল এই বিশ্লেষণগুলোকে আরও উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে।
কৌশল | ব্ল্যাটির কাজের সাথে সম্পর্ক | বাজারের trend এবং price movement-এর প্যাটার্ন চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। অপরাধের ধরণ বিশ্লেষণের সাথে তুলনীয়। | | অর্থনৈতিক এবং আর্থিক ডেটা বিশ্লেষণ করে বাজারের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। অপরাধীর ব্যক্তিগত ইতিহাস এবং প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণের সাথে তুলনীয়। | | ট্রেডিং ভলিউমের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়। শিকার নির্বাচনের প্রক্রিয়ার সাথে তুলনীয়। | | সম্ভাব্য ঝুঁকি মূল্যায়ন করে ট্রেডিং কৌশল তৈরি করা হয়। অপরাধীর ঝুঁকির মাত্রা মূল্যায়নের সাথে তুলনীয়। | | ট্রেডারদের মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অপরাধীর মানসিক অবস্থা বোঝার সাথে তুলনীয়। | |
---|
সমালোচনা
উইলিয়াম ব্ল্যাটির কাজ কিছু সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন যে সিরিয়াল কিলারদের সাথে সাক্ষাৎকার নেওয়া এবং তাদের মানসিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করা তাদের অপরাধকে ন্যায্যতা দেওয়ার শামিল। আবার অনেকে তার তত্ত্বগুলোকে সরলীকরণ এবং generalisation-এর অভিযোগ করেন।
উত্তরাধিকার
এত সমালোচনার পরেও, উইলিয়াম ব্ল্যাটি অপরাধ মনোবিজ্ঞানের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হন। তার কাজ সিরিয়াল কিলিং নিয়ে গবেষণা এবং অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তিনি অপরাধ বিবর্তন এবং অপরাধ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
প্রকাশনা
উইলিয়াম ব্ল্যাটি বেশ কিছু বই এবং প্রবন্ধ লিখেছেন। তার উল্লেখযোগ্য কিছু প্রকাশনা হলো:
- The Wisdom of Evil (1980)
- Serial Killers (1991)
- Violent Emotions: Understanding the Psychology of Murder (1995)
ব্যক্তিগত জীবন
উইলিয়াম ব্ল্যাটি ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে। তিনি বর্তমানে ফ্লোরিডায় বসবাস করছেন এবং লেখালেখি ও পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
অপরাধ মনোবিজ্ঞান | সিরিয়াল কিলার | এফবিআই | অপরাধ তদন্ত | মনোবিজ্ঞান | টেড বান্ডি | জেফরি ডাহমার | জন ওয়েইন গেসি | টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ | ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ | ভলিউম বিশ্লেষণ | অপরাধ বিবর্তন | অপরাধ প্রতিরোধের | অপরাধ দৃশ্য বিশ্লেষণ | ভূগোলিক প্রোফাইলিং | সাক্ষাৎকার কৌশল | ঝুঁকি মূল্যায়ন | প্যাটার্ন recognition | মানসিক অবস্থা বিশ্লেষণ | সিদ্ধান্ত গ্রহণ
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ