ইভনিং স্টার প্যাটার্ন

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

ইভনিং স্টার প্যাটার্ন

ইভনিং স্টার (Evening Star) একটি বহুল পরিচিত ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন যা টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস-এ ব্যবহৃত হয়। এটি একটি বিয়ারিশ রিভার্সাল প্যাটার্ন, অর্থাৎ ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ড-এর সমাপ্তি এবং দাম কমার পূর্বাভাস দেয়। এই প্যাটার্নটি তিনটি ক্যান্ডেলস্টিক দিয়ে গঠিত হয় এবং এটি ফিনান্সিয়াল মার্কেট-এ গুরুত্বপূর্ণ সংকেত প্রদান করে।

গঠন

ইভনিং স্টার প্যাটার্ন গঠিত হওয়ার জন্য তিনটি ধারাবাহিক ক্যান্ডেলস্টিক প্রয়োজন:

১. প্রথম ক্যান্ডেলস্টিক: একটি বড় আকারের বুলিশ ক্যান্ডেলস্টিক (সাধারণত সবুজ বা সাদা)। এটি আপট্রেন্ডের ধারাবাহিকতা নির্দেশ করে। এই ক্যান্ডেলস্টিকটির শরীর (body) বেশ লম্বা হয়, যা বাজারের শক্তিশালী ক্রয়চাপের ইঙ্গিত দেয়।

২. দ্বিতীয় ক্যান্ডেলস্টিক: একটি ছোট আকারের ক্যান্ডেলস্টিক, যা বুলিশ বা বিয়ারিশ হতে পারে। এই ক্যান্ডেলস্টিকটির শরীর প্রথম ক্যান্ডেলস্টিক থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হয়। এটি বাজারের গতি কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এই ক্যান্ডেলস্টিকটিকে ‘স্টার’ বলা হয়, কারণ এটি প্রথম ও তৃতীয় ক্যান্ডেলস্টিক দুটির মাঝে অবস্থান করে এবং এদের থেকে ছোট হয়। এটি প্রাইস অ্যাকশন-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

৩. তৃতীয় ক্যান্ডেলস্টিক: একটি বড় আকারের বিয়ারিশ ক্যান্ডেলস্টিক (সাধারণত লাল বা কালো)। এই ক্যান্ডেলস্টিকটির শরীর প্রথম ক্যান্ডেলস্টিকটিকে ছাড়িয়ে যায়। এটি শক্তিশালী বিক্রয়চাপের ইঙ্গিত দেয় এবং ডাউনট্রেন্ডের শুরু নির্দেশ করে।

বৈশিষ্ট্য

  • আপট্রেন্ডের পরে গঠিত হয়: ইভনিং স্টার প্যাটার্ন সবসময় একটি আপট্রেন্ডের পরে দেখা যায়।
  • তিনটি ক্যান্ডেলস্টিক: এই প্যাটার্নটি তিনটি ক্যান্ডেলস্টিক দ্বারা গঠিত, যেখানে দ্বিতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটি ছোট হয়।
  • বিয়ারিশ সংকেত: এটি একটি শক্তিশালী বিয়ারিশ সংকেত, যা দাম কমার পূর্বাভাস দেয়।
  • ভলিউম: সাধারণত, দ্বিতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটিতে ভলিউম কম থাকে এবং তৃতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটিতে ভলিউম বৃদ্ধি পায়।

ব্যাখ্যা

প্রথম ক্যান্ডেলস্টিকটি বাজারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে নির্দেশ করে। এরপর দ্বিতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটি তৈরি হয়, যা বাজারের গতি কমে যাওয়া বা অনিশ্চয়তা নির্দেশ করে। এই ক্যান্ডেলস্টিকটি ছোট হওয়ার কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরি হয়। সবশেষে, তৃতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটি শক্তিশালী বিক্রয়চাপের মাধ্যমে দামকে নিচে নামিয়ে আনে, যা ডাউনট্রেন্ডের সূচনা করে।

ট্রেডিং কৌশল

ইভনিং স্টার প্যাটার্ন শনাক্ত করার পর বাইনারি অপশন ট্রেডাররা নিম্নলিখিত কৌশল অবলম্বন করতে পারেন:

  • পুট অপশন কেনা: যখন ইভনিং স্টার প্যাটার্ন গঠিত হয়, তখন পুট অপশন কেনা যেতে পারে। এর মাধ্যমে দাম কমলে লাভ করা সম্ভব।
  • কল অপশন বিক্রি করা: যদি ট্রেডার মনে করেন যে দাম কমবে, তবে তিনি কল অপশন বিক্রি করতে পারেন।
  • স্টপ-লস অর্ডার: ঝুঁকির পরিমাণ কমাতে স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করা উচিত। তৃতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটির নিচে স্টপ-লস সেট করা যেতে পারে।
  • লক্ষ্য নির্ধারণ: লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। পূর্বের সাপোর্ট লেভেল বা অন্য কোনো টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে লক্ষ্য নির্ধারণ করা যেতে পারে।

উদাহরণ

ধরা যাক, একটি শেয়ারের দাম लगातार বাড়ছে। প্রথম ক্যান্ডেলস্টিকটি একটি বড় সবুজ ক্যান্ডেল, যার ক্লোজিং প্রাইস 100 টাকা। দ্বিতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটি একটি ছোট লাল ক্যান্ডেল, যার ক্লোজিং প্রাইস 102 টাকা। তৃতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটি একটি বড় লাল ক্যান্ডেল, যার ক্লোজিং প্রাইস 95 টাকা। এই ক্ষেত্রে, ইভনিং স্টার প্যাটার্ন গঠিত হয়েছে, যা দাম কমার পূর্বাভাস দিচ্ছে।

ইভনিং স্টার প্যাটার্নের উদাহরণ
রঙ | ক্লোজিং প্রাইস | সবুজ | 100 টাকা | লাল | 102 টাকা | লাল | 95 টাকা |

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

ইভনিং স্টার প্যাটার্ন একটি শক্তিশালী সংকেত হলেও, এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই প্যাটার্নটিকে অন্যান্য টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর-এর সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও, নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা জরুরি:

  • ফলস সিগন্যাল: অনেক সময় এই প্যাটার্ন ভুল সংকেত দিতে পারে।
  • বাজারের প্রেক্ষাপট: বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করা উচিত।
  • ভলিউম নিশ্চিতকরণ: ভলিউম বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া উচিত যে প্যাটার্নটি শক্তিশালী কিনা।
  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ট্রেডিংয়ের সময় সবসময় ঝুঁকির কথা মাথায় রাখা উচিত এবং স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করা উচিত।

অন্যান্য ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন

ইভনিং স্টার ছাড়াও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন রয়েছে, যা ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্যাটার্ন-এর উদাহরণ দেওয়া হলো:

  • মর্নিং স্টার: এটি ইভনিং স্টারের বিপরীত, যা ডাউনট্রেন্ডের পরে আপট্রেন্ডের পূর্বাভাস দেয়।
  • ডজি: এটি বাজারের অনিশ্চয়তা নির্দেশ করে।
  • hammer: এটি ডাউনট্রেন্ডের শেষে সম্ভাব্য রিভার্সাল সংকেত দেয়।
  • hanging man: এটি আপট্রেন্ডের শেষে সম্ভাব্য রিভার্সাল সংকেত দেয়।
  • engulfing pattern: এটি একটি শক্তিশালী রিভার্সাল প্যাটার্ন।
  • piercing pattern : এটি একটি বুলিশ রিভার্সাল প্যাটার্ন।
  • dark cloud cover: এটি একটি বিয়ারিশ রিভার্সাল প্যাটার্ন।

টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর

ইভনিং স্টার প্যাটার্নকে আরও নিশ্চিত করার জন্য কিছু টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা যেতে পারে:

  • মুভিং এভারেজ (Moving Average): মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে ট্রেন্ডের দিক নির্ণয় করা যায়।
  • আরএসআই (Relative Strength Index): আরএসআই ব্যবহার করে ওভারবট (overbought) এবং ওভারসোল্ড (oversold) অবস্থা জানা যায়।
  • এমএসিডি (Moving Average Convergence Divergence): এমএসিডি ব্যবহার করে ট্রেন্ডের শক্তি এবং দিক নির্ণয় করা যায়।
  • বলিঙ্গার ব্যান্ড (Bollinger Bands): বলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহার করে দামের অস্থিরতা (volatility) পরিমাপ করা যায়।
  • ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement): ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করা যায়।

ভলিউম বিশ্লেষণ

ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইভনিং স্টার প্যাটার্নের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা যায়। যদি দ্বিতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটিতে ভলিউম কম থাকে এবং তৃতীয় ক্যান্ডেলস্টিকটিতে ভলিউম বৃদ্ধি পায়, তবে এটি একটি শক্তিশালী বিয়ারিশ সংকেত।

উপসংহার

ইভনিং স্টার প্যাটার্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস টুল, যা ট্রেডারদের আপট্রেন্ডের সমাপ্তি এবং ডাউনট্রেন্ডের শুরু সম্পর্কে পূর্বাভাস দিতে পারে। তবে, এই প্যাটার্নটিকে অন্যান্য ইন্ডিকেটর এবং বিশ্লেষণের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করা উচিত। যথাযথ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং ট্রেডিং কৌশল অবলম্বন করে এই প্যাটার্ন থেকে লাভবান হওয়া সম্ভব।

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер