আবাসিক

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

আবাসন ব্যবস্থা

আবাসন মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম। খাদ্য, বস্ত্রের মতো মানুষের জীবনধারণের জন্য একটি নিরাপদ ও স্থায়ী আবাসস্থল প্রয়োজন। সময়ের সাথে সাথে মানুষের আবাসনের ধরণ এবং নির্মাণশৈলীতে পরিবর্তন এসেছে। আধুনিক বিশ্বে আবাসন শুধু একটি আশ্রয়স্থল নয়, এটি মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই নিবন্ধে আবাসনের বিভিন্ন দিক, প্রকারভেদ, বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

আবাসনের ধারণা

আবাসন বলতে সাধারণত কোনো ব্যক্তি বা পরিবারের বসবাসের জন্য নির্মিত কাঠামোকে বোঝায়। এটি প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম হতে পারে। মানুষের আদিম যুগে গুহা ছিল প্রথম আশ্রয়স্থল। এরপর মানুষ বাঁশ, কাঠ, পাথর ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ঘর তৈরি করতে শুরু করে। সময়ের সাথে সাথে ইট, সিমেন্ট, রড এবং অন্যান্য আধুনিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে টেকসই ও আরামদায়ক আবাসন তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।

আবাসনের প্রকারভেদ

আবাসন বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, যা নির্ভর করে নির্মাণশৈলী, মালিকানা, এবং ব্যবহারের উদ্দেশ্যের উপর। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:

১. নিজস্ব আবাসন: এই ধরনের আবাসনের মালিকানা ব্যবহারকারীর নিজের হাতে থাকে। এটি সাধারণত বাড়ি, ফ্ল্যাট, বা জমির উপর নির্মিত হতে পারে। নিজস্ব আবাসনে ব্যবহারকারী নিজের পছন্দ অনুযায়ী পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারে।

২. ভাড়া আবাসন: এই ধরনের আবাসনের মালিকানা অন্য কারো হাতে থাকে এবং ব্যবহারকারী মাসিক বা বাৎসরিক ভাড়ার মাধ্যমে এটি ব্যবহার করে। অ্যাপার্টমেন্ট, বাড়ি বা গেস্ট হাউস সাধারণত ভাড়া আবাসনের অন্তর্ভুক্ত।

৩. সরকারি আবাসন: সরকার কর্তৃক নির্মিত বা অধিগ্রহণকৃত আবাসন, যা নির্দিষ্ট শর্তে নাগরিকদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়। নিম্ন আয়ের পরিবার এবং সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই ধরনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকে।

৪. বস্তি বা ঝুপড়ি: সাধারণত শহরের আশেপাশে স্বল্প আয়ের মানুষেরা এটি তৈরি করে বসবাস করে। এগুলিতে প্রায়শই নিয়মিত নাগরিক সুবিধা থাকে না।

৫. গ্রামীণ আবাসন: গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারীদের জন্য নির্মিত আবাসন, যা সাধারণত স্থানীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়।

আবাসন নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণ

আবাসন নির্মাণে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়। এদের মধ্যে কিছু প্রধান উপকরণ হলো:

  • ইট: ইট একটি বহুল ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী, যা মাটি পুড়িয়ে তৈরি করা হয়।
  • সিমেন্ট: সিমেন্ট কংক্রিটের প্রধান উপাদান, যা নির্মাণ কাঠামোকে মজবুত করে।
  • রড: রড কংক্রিটের মধ্যে ব্যবহার করা হয়, যা কাঠামোকে অতিরিক্ত শক্তি যোগায়।
  • কাঠ: কাঠ প্রাচীনকাল থেকে আবাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
  • বাঁশ: বাঁশ পরিবেশবান্ধব এবং সহজে পাওয়া যায়, তাই এটি গ্রামীণ আবাসনে ব্যবহৃত হয়।
  • কংক্রিট: কংক্রিট সিমেন্ট, বালি, পাথর এবং পানির মিশ্রণে তৈরি হয়, যা আধুনিক নির্মাণের ভিত্তি।
  • টিন: টিন সাধারণত ছাদ এবং অন্যান্য অংশে ব্যবহৃত হয়।

আবাসনের গুরুত্ব

আবাসন মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:

বাংলাদেশের আবাসন পরিস্থিতি

বাংলাদেশে আবাসন একটি জটিল সমস্যা। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, urban migration, এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সকলের জন্য উপযুক্ত আবাসনের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

  • শহরাঞ্চলে আবাসন সংকট: ঢাকা, চট্টগ্রাম এর মতো বড় শহরগুলোতে জনসংখ্যার তুলনায় আবাসনের সংখ্যা অপ্রতুল। ফলে এখানে বাড়ির দাম অনেক বেশি এবং সাধারণ মানুষের জন্য আবাসন কেনা বা ভাড়া নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
  • গ্রামাঞ্চলে আবাসন: গ্রামাঞ্চলে সাধারণত আবাসনের সমস্যা তেমন প্রকট নয়, তবে দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য ভালো মানের আবাসনের অভাব রয়েছে।
  • বস্তি সমস্যা: শহরাঞ্চলগুলোতে বস্তির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ বসবাস করছে।

আবাসন সমস্যার সমাধান

আবাসন সমস্যার সমাধানে সরকার এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিছু সম্ভাব্য সমাধান নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • পরিকল্পিত নগরায়ণ: শহরাঞ্চলগুলোতে পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে জনসংখ্যার ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং সকলের জন্য আবাসনের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
  • ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা: জমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং কৃষি জমি নষ্ট না করে আবাসনের জন্য উপযুক্ত জমি চিহ্নিত করতে হবে।
  • নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ: নির্মাণ সামগ্রীর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, যাতে আবাসন নির্মাণ খরচ কমানো যায়।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

আবাসন খাতে ভবিষ্যতে কিছু চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, যা মোকাবেলা করা জরুরি।

  • জনসংখ্যা বৃদ্ধি: জনসংখ্যার ক্রমাগত বৃদ্ধি আবাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
  • Urban Sprawl : শহরের অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আবাসনের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেবে।

উপসংহার

আবাসন একটি মৌলিক অধিকার এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এর গুরুত্ব অপরিহার্য। সরকার এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সকলের জন্য উপযুক্ত আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব। ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে একটি টেকসই আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা মানুষের জীবনকে আরও সুন্দর ও নিরাপদ করবে।

আবাসনের প্রকারভেদ
প্রকার বৈশিষ্ট্য সুবিধা অসুবিধা
নিজস্ব আবাসন মালিকানা ব্যবহারকারীর নিজের ইচ্ছামতো পরিবর্তন করা যায় নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি
ভাড়া আবাসন মালিকানা অন্যের কম খরচে থাকা যায় পরিবর্তন করার সুযোগ কম
সরকারি আবাসন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত স্বল্প মূল্যে পাওয়া যায় নির্দিষ্ট শর্ত থাকে
বস্তি বা ঝুপড়ি স্বল্প আয়ের মানুষের তৈরি দ্রুত তৈরি করা যায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা কম
গ্রামীণ আবাসন স্থানীয় উপকরণে তৈরি পরিবেশবান্ধব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা কম

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер