অ-সহসম্বন্ধ

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

অ-সহসম্বন্ধ : বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা

ভূমিকা

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর জগতে, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং পোর্টফোলিও diversifications অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে, অ-সহসম্বন্ধ (Non-correlation) একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। অ-সহসম্বন্ধ বলতে বোঝায় দুটি সম্পদ বা অ্যাসেট-এর দামের মধ্যে কোনো পরিসংখ্যানগত সম্পর্ক না থাকা। অর্থাৎ, একটি সম্পদের দাম বাড়লে অন্যটির দাম বাড়ার বা কমার কোনো নির্দিষ্ট প্রবণতা নেই। এই ধারণাটি বাইনারি অপশন ট্রেডারদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী, কারণ এটি তাদের ঝুঁকি কমাতে এবং সম্ভাব্য লাভ বাড়াতে সাহায্য করে।

অ-সহসম্বন্ধের মূল ভিত্তি

সহসম্বন্ধ (Correlation) পরিমাপ করা হয় -১ থেকে +১ এর মধ্যে একটি সংখ্যা দিয়ে।

  • +১ মানে হলো দুটি সম্পদ সম্পূর্ণরূপে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কিত (Perfectly positively correlated)। একটি বাড়লে অন্যটিও বাড়বে।
  • -১ মানে হলো দুটি সম্পদ সম্পূর্ণরূপে নেতিবাচকভাবে সম্পর্কিত (Perfectly negatively correlated)। একটি বাড়লে অন্যটি কমবে।
  • ০ মানে হলো দুটি সম্পদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই (No correlation)।

অ-সহসম্বন্ধ বলতে বোঝায় এই সহসম্বন্ধের মান ০ এর কাছাকাছি। তবে, বাস্তবে একেবারে নিখুঁত অ-সহসম্বন্ধ খুঁজে পাওয়া কঠিন।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অ-সহসম্বন্ধের গুরুত্ব

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ, ট্রেডাররা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে তা নিয়ে বাজি ধরে। যদি ট্রেডার দুটি এমন সম্পদ নির্বাচন করে যাদের মধ্যে উচ্চ সহসম্বন্ধ রয়েছে, তাহলে একটি ট্রেডে ক্ষতি হলে অন্য ট্রেডেও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে সামগ্রিক পোর্টফোলিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অন্যদিকে, যদি ট্রেডার দুটি অ-সহসম্বন্ধ সম্পদ নির্বাচন করে, তাহলে একটি ট্রেডে ক্ষতি হলেও অন্য ট্রেডটি লাভের মুখ দেখতে পারে। এটি সামগ্রিক ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

উদাহরণস্বরূপ, ধরা যাক একজন ট্রেডার সোনা এবং পেট্রোল-এর উপর বাইনারি অপশন ট্রেড করছেন। সাধারণত, এই দুটি সম্পদের মধ্যে খুব বেশি সহসম্বন্ধ থাকে না। যদি কোনো কারণে সোনার দাম বাড়ে, কিন্তু পেট্রলের দাম একই থাকে বা কমে যায়, তাহলে ট্রেডার উভয় ট্রেডেই লাভ করতে পারে।

অ-সহসম্বন্ধ খুঁজে বের করার উপায়

অ-সহসম্বন্ধ সম্পদ খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে:

১. ঐতিহাসিক ডেটা বিশ্লেষণ: ঐতিহাসিক ডেটা বিশ্লেষণ করে দুটি সম্পদের দামের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা যায়। এর জন্য পরিসংখ্যানিক সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে।

২. বিভিন্ন অ্যাসেট ক্লাসের মিশ্রণ: বিভিন্ন ধরনের অ্যাসেট ক্লাস (যেমন: স্টক, বন্ড, মুদ্রা, কমোডিটি)-এর মধ্যে সাধারণত কম সহসম্বন্ধ থাকে। তাই, বিভিন্ন অ্যাসেট ক্লাসের সম্পদ নির্বাচন করে একটি diversifed পোর্টফোলিও তৈরি করা যেতে পারে।

৩. ভৌগোলিক বৈচিত্র্য: বিভিন্ন দেশের বাজার-এর মধ্যে সহসম্বন্ধ কম থাকতে পারে। তাই, বিভিন্ন দেশের সম্পদ নির্বাচন করে ট্রেড করা যেতে পারে।

৪. শিল্পখাত বিশ্লেষণ: বিভিন্ন শিল্পখাত-এর মধ্যে সাধারণত কম সহসম্বন্ধ থাকে। উদাহরণস্বরূপ, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক কম।

অ-সহসম্বন্ধ কৌশল

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অ-সহসম্বন্ধ কৌশলগুলি নিম্নরূপ:

১. পেয়ার ট্রেডিং (Pair Trading): এই কৌশলে দুটি সম্পর্কিত কিন্তু বিপরীতমুখী সম্পদের উপর একই সাথে ট্রেড করা হয়। যখন একটি সম্পদের দাম বাড়ে, তখন অন্যটির দাম কমার সম্ভাবনা থাকে।

২. পোর্টফোলিও ডাইভার্সিফিকেশন (Portfolio Diversification): বিভিন্ন অ-সহসম্বন্ধ সম্পদের সমন্বয়ে একটি পোর্টফোলিও তৈরি করা হয়। এর ফলে সামগ্রিক ঝুঁকি কমে যায়।

৩. ইন্ডেক্স ট্রেডিং (Index Trading): কোনো নির্দিষ্ট সূচক (যেমন: S&P 500)-এর উপর ট্রেড করা হয়। সূচকের মধ্যে বিভিন্ন খাতের সম্পদ অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা সহসম্বন্ধ কমাতে সাহায্য করে।

৪. অপশন স্প্রেড (Option Spread): বিভিন্ন স্ট্রাইক প্রাইস এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখের অপশন ব্যবহার করে একটি স্প্রেড তৈরি করা হয়। এটি ঝুঁকি কমাতে এবং সম্ভাব্য লাভ বাড়াতে সাহায্য করে।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং অ-সহসম্বন্ধ

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে সম্পদের দামের গতিবিধি এবং প্রবণতা নির্ণয় করা যায়। অ-সহসম্বন্ধ সম্পদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে।

  • মুভিং এভারেজ (Moving Average): মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে দামের গড় প্রবণতা নির্ণয় করা যায়।
  • রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স (RSI): RSI ব্যবহার করে একটি সম্পদের অতিরিক্ত ক্রয় বা অতিরিক্ত বিক্রয়ের অবস্থা নির্ণয় করা যায়।
  • MACD: MACD ব্যবহার করে দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা যায়।

ভলিউম বিশ্লেষণ এবং অ-সহসম্বন্ধ

ভলিউম বিশ্লেষণ ব্যবহার করে একটি সম্পদের ট্রেডিং ভলিউম এবং বাজারের আগ্রহ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অ-সহসম্বন্ধ সম্পদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভলিউম বিশ্লেষণ সাহায্য করতে পারে।

  • অন ব্যালেন্স ভলিউম (OBV): OBV ব্যবহার করে ভলিউম এবং দামের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা যায়।
  • ভলিউম ওয়েটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP): VWAP ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গড় দাম নির্ণয় করা যায়।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং অ-সহসম্বন্ধ

অ-সহসম্বন্ধ কৌশলগুলি ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, তবে এটি সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকি দূর করতে পারে না। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করা উচিত:

১. স্টপ-লস অর্ডার (Stop-Loss Order): একটি নির্দিষ্ট মূল্যে পৌঁছালে ট্রেড স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

২. টেক-প্রফিট অর্ডার (Take-Profit Order): একটি নির্দিষ্ট মূল্যে পৌঁছালে ট্রেড স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে লাভ নিশ্চিত করে।

৩. পজিশন সাইজিং (Position Sizing): প্রতিটি ট্রেডে বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ করা।

৪. লিভারেজ (Leverage): লিভারেজ ব্যবহার করে লাভের সম্ভাবনা বাড়ানো যায়, তবে এটি ঝুঁকিও বাড়ায়।

অ-সহসম্বন্ধের সীমাবদ্ধতা

অ-সহসম্বন্ধ সবসময় স্থির থাকে না। বাজারের পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কারণে দুটি সম্পদের মধ্যে সহসম্বন্ধের মাত্রা পরিবর্তিত হতে পারে। তাই, নিয়মিতভাবে পোর্টফোলিও নিরীক্ষণ করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা উচিত।

উপসংহার

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অ-সহসম্বন্ধ একটি শক্তিশালী ধারণা। এটি ট্রেডারদের ঝুঁকি কমাতে, পোর্টফোলিও diversifed করতে এবং সম্ভাব্য লাভ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে, অ-সহসম্বন্ধ কৌশলগুলি ব্যবহারের আগে বাজারের গতিবিধি এবং ঝুঁকি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। এছাড়াও, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ভলিউম বিশ্লেষণ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নিয়মগুলি অনুসরণ করা জরুরি।

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер