অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি: একটি বিস্তারিত আলোচনা

ভূমিকা

অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। এর ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস এবং অসংখ্য অ্যাপ্লিকেশনের সহজলভ্যতা এটিকে এত জনপ্রিয় করে তুলেছে। তবে, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যের উপর নির্ভরশীল। এই তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, অ্যান্ড্রয়েড একটি শক্তিশালী অনুমতি ব্যবস্থা ব্যবহার করে। এই নিবন্ধে, আমরা অ্যান্ড্রয়েড অনুমতিগুলো কী, কেন এগুলো প্রয়োজন, কীভাবে এগুলো কাজ করে এবং একজন ব্যবহারকারী হিসেবে আপনার কীভাবে এগুলো পরিচালনা করতে হয় তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। এছাড়াও, বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের সাথে সম্পর্কিত কিছু বিষয় এখানে তুলে ধরা হবে, যেখানে ডেটা সুরক্ষা এবং অ্যাপ্লিকেশনের অনুমতির গুরুত্ব রয়েছে।

অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি কী?

অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডেটা বা ডিভাইসের কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্য ব্যবহারের আগে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে অনুমতি নেয়। এই অনুমতিগুলো ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা রক্ষা করতে সহায়ক। উদাহরণস্বরূপ, একটি অ্যাপ্লিকেশন যদি আপনার লোকেশন জানতে চায়, তবে সেটি প্রথমে আপনার কাছে লোকেশন ব্যবহারের অনুমতি চাইবে। আপনি অনুমতি দিলে তবেই অ্যাপ্লিকেশনটি আপনার লোকেশন ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারবে।

অনুমতির প্রকারভেদ

অ্যান্ড্রয়েড বিভিন্ন ধরনের অনুমতির প্রস্তাব করে, যেগুলোকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়:

১. সাধারণ অনুমতি (Normal Permissions): এই অনুমতিগুলো খুব বেশি সংবেদনশীল নয় এবং অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেওয়া হয়। এগুলোর জন্য ব্যবহারকারীর কোনো হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, ইন্টারনেট অ্যাক্সেস, ওয়াইফাই সংযোগ ইত্যাদি।

২. বিপজ্জনক অনুমতি (Dangerous Permissions): এই অনুমতিগুলো ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এবং ডিভাইসের স্বাভাবিক কার্যকারিতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এই অনুমতিগুলো ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীর সুস্পষ্ট সম্মতির প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, লোকেশন, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, কন্টাক্টস, স্টোরেজ ইত্যাদি।

৩. বিশেষ অনুমতি (Special Permissions): এই অনুমতিগুলো শুধুমাত্র সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন বা বিশেষ সুবিধা পাওয়া অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জন্য প্রযোজ্য। এই অনুমতিগুলো ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এবং সিস্টেমের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। উদাহরণস্বরূপ, সিস্টেম সেটিংস পরিবর্তন, অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করা ইত্যাদি।

অনুমতি কিভাবে কাজ করে?

অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি ব্যবস্থা রানটাইম অনুমতির উপর ভিত্তি করে তৈরি। এর মানে হলো, অ্যাপ্লিকেশন চালানোর সময় প্রয়োজন অনুযায়ী অনুমতি চাওয়া হয়। অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ (মার্শমেলো) থেকে এই রানটাইম অনুমতি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। আগে, অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার সময়ই সব অনুমতির জন্য ব্যবহারকারীকে জিজ্ঞাসা করা হতো, যা ব্যবহারকারীর জন্য বিভ্রান্তিকর ছিল।

অনুমতি চাওয়ার প্রক্রিয়া:

১. অ্যাপ্লিকেশন যখন কোনো সংবেদনশীল ডেটা বা বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করতে চায়, তখন এটি একটি অনুমতি চাওয়ার অনুরোধ পাঠায়। ২. সিস্টেম তখন ব্যবহারকারীকে একটি ডায়ালগ বক্স দেখায়, যেখানে অ্যাপ্লিকেশনটি কী ধরনের অনুমতি চাইছে এবং কেন চাইছে তা উল্লেখ করা হয়। ৩. ব্যবহারকারী তখন অনুমতি দিতে বা প্রত্যাখ্যান করতে পারে। ৪. যদি ব্যবহারকারী অনুমতি দেয়, তবে অ্যাপ্লিকেশনটি সেই ডেটা বা বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করতে পারবে। অন্যথায়, অ্যাপ্লিকেশনটি সেই ডেটা বা বৈশিষ্ট্য অ্যাক্সেস করতে পারবে না।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি

বাইনারি অপশন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলো প্রায়শই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত এবং আর্থিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তাই, এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহারের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত।

  • ডেটা সুরক্ষা: বাইনারি অপশন ট্রেডিং অ্যাপ্লিকেশনের জন্য বিপজ্জনক অনুমতিগুলো, যেমন - স্টোরেজ, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ইত্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। নিশ্চিত করুন অ্যাপ্লিকেশনটি শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ডেটা অ্যাক্সেস করছে।
  • অ্যাপ্লিকেশন অনুমতি পর্যালোচনা: অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার আগে, এর প্রয়োজনীয় অনুমতিগুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করুন। যদি কোনো অনুমতি সন্দেহজনক মনে হয়, তবে অ্যাপ্লিকেশনটি ইনস্টল করা উচিত নয়।
  • অফিসিয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার: শুধুমাত্র বিশ্বস্ত এবং নিয়ন্ত্রিত প্ল্যাটফর্ম থেকে বাইনারি অপশন ট্রেডিং অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করুন।
  • টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন: আপনার অ্যাকাউন্টের সুরক্ষার জন্য টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করুন।

অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি পরিচালনা

অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের তাদের ডিভাইসে ইনস্টল করা অ্যাপ্লিকেশনগুলোর অনুমতি পরিচালনা করার ক্ষমতা দেয়। আপনি নিম্নলিখিত উপায়ে অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি পরিচালনা করতে পারেন:

১. সেটিংস (Settings) অ্যাপ:

  • অ্যাপস (Apps) অথবা অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজার (Application Manager) অপশনে যান।
  • যে অ্যাপ্লিকেশনটির অনুমতি পরিবর্তন করতে চান, সেটি নির্বাচন করুন।
  • অনুমতি (Permissions) অপশনে ক্লিক করুন।
  • এখানে আপনি অ্যাপ্লিকেশনটির জন্য উপলব্ধ সমস্ত অনুমতির তালিকা দেখতে পাবেন। প্রতিটি অনুমতির জন্য আপনি "অনুমতি দিন" (Allow) বা "অনুমতি প্রত্যাখ্যান করুন" (Deny) নির্বাচন করতে পারেন।

২. রানটাইম অনুমতি (Runtime Permissions):

অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ বা তার পরের সংস্করণে, আপনি অ্যাপ্লিকেশন চালানোর সময় অনুমতি দিতে বা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। যখন কোনো অ্যাপ্লিকেশন কোনো অনুমতির জন্য অনুরোধ করবে, তখন আপনি তাৎক্ষণিকভাবে অনুমতি দিতে বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন।

৩. তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশন (Third-party Apps):

প্লে স্টোরে অনেক তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, যেগুলো আপনাকে অ্যাপ্লিকেশনগুলোর অনুমতি পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করে আপনি সহজেই জানতে পারবেন কোন অ্যাপ্লিকেশন কী কী অনুমতি ব্যবহার করছে এবং আপনি সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

গুরুত্বপূর্ণ অনুমতির উদাহরণ

  • লোকেশন (Location): এই অনুমতিটি অ্যাপ্লিকেশনকে আপনার ডিভাইসের লোকেশন জানতে দেয়। এটি ম্যাপ অ্যাপ্লিকেশন, ওয়েদার অ্যাপ্লিকেশন এবং অন্যান্য লোকেশন-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • ক্যামেরা (Camera): এই অনুমতিটি অ্যাপ্লিকেশনকে আপনার ডিভাইসের ক্যামেরা ব্যবহার করতে দেয়। এটি ক্যামেরা অ্যাপ্লিকেশন, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন এবং ভিডিও কলিং অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • মাইক্রোফোন (Microphone): এই অনুমতিটি অ্যাপ্লিকেশনকে আপনার ডিভাইসের মাইক্রোফোন ব্যবহার করতে দেয়। এটি ভয়েস রেকর্ডিং অ্যাপ্লিকেশন, ভয়েস কলিং অ্যাপ্লিকেশন এবং ভয়েস কমান্ড অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • কন্টাক্টস (Contacts): এই অনুমতিটি অ্যাপ্লিকেশনকে আপনার ডিভাইসের কন্টাক্ট লিস্ট অ্যাক্সেস করতে দেয়। এটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন, ইমেইল অ্যাপ্লিকেশন এবং অন্যান্য যোগাযোগ-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • স্টোরেজ (Storage): এই অনুমতিটি অ্যাপ্লিকেশনকে আপনার ডিভাইসের স্টোরেজে ফাইল সংরক্ষণ এবং অ্যাক্সেস করতে দেয়। এটি ফাইল ম্যানেজার অ্যাপ্লিকেশন, গ্যালারি অ্যাপ্লিকেশন এবং অন্যান্য স্টোরেজ-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয়।

অ্যান্ড্রয়েড অনুমতির ভবিষ্যৎ

অ্যান্ড্রয়েড ক্রমাগত তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করছে। ভবিষ্যতে, আমরা অ্যান্ড্রয়েড অনুমতির ক্ষেত্রে আরও কিছু পরিবর্তন দেখতে পাব।

  • আরও সূক্ষ্ম অনুমতি নিয়ন্ত্রণ (More Granular Permission Control): গুগল আরও সূক্ষ্ম অনুমতি নিয়ন্ত্রণের উপর কাজ করছে, যাতে ব্যবহারকারীরা প্রতিটি অনুমতির উপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।
  • স্বয়ংক্রিয় অনুমতি রিসেট (Automatic Permission Reset): গুগল এমন একটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করছে, যা দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার না করা অ্যাপ্লিকেশনগুলোর অনুমতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিসেট করে দেবে।
  • ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষা (Enhanced User Privacy): গুগল ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষার জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে, যা অ্যান্ড্রয়েডকে আরও নিরাপদ করে তুলবে।

উপসংহার

অ্যান্ড্রয়েড অনুমতি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য, যা ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এবং ডেটা রক্ষা করে। একজন সচেতন ব্যবহারকারী হিসেবে, আপনার উচিত অ্যাপ্লিকেশনগুলোর অনুমতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং সেগুলোকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো আর্থিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সময় এই বিষয়ে আরও সতর্ক থাকা উচিত। নিয়মিত আপনার ডিভাইসের অনুমতিগুলো পর্যালোচনা করুন এবং শুধুমাত্র বিশ্বস্ত অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করুন।

আরও জানতে:

অথবা 

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер