অ্যানিমেশনের ১২টি মূলনীতি
অ্যানিমেশনের ১২টি মূলনীতি
অ্যানিমেশন একটি শিল্প যা স্থির চিত্রকে সচল করে তোলার মাধ্যমে গল্প বলার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। এই শিল্পের ভিত্তি হলো ১২টি মূলনীতি, যা ১৯৩০-এর দশকে ডিজনির অ্যানিমেটররা তৈরি করেন। এই মূলনীতিগুলো শুধুমাত্র ডিজনির অ্যানিমেশন নয়, বরং আধুনিক অ্যানিমেশন শিল্পকেও প্রভাবিত করেছে। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো জটিল একটি বিষয়কে সহজভাবে উপস্থাপনের জন্য যেমন বিশ্লেষণের প্রয়োজন, তেমনি অ্যানিমেশনকে প্রাণবন্ত করতেও এই মূলনীতিগুলোর গুরুত্ব অপরিহার্য। নিচে এই ১২টি মূলনীতি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
১. স্কোয়াশ এবং স্ট্রেচ (Squash and Stretch)
এই মূলনীতিটি অ্যানিমেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম। স্কোয়াশ (Squash) মানে কোনো বস্তুকে চাপা দেওয়া এবং স্ট্রেচ (Stretch) মানে প্রসারিত করা। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বস্তুর নমনীয়তা এবং ওজন বোঝানো হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি বল যখন মেঝেতে পড়বে, তখন সেটি স্কোয়াশ হবে এবং যখন উপরে উঠবে, তখন স্ট্রেচ হবে। এটি বস্তুর গতির অনুভূতি তৈরি করে। গতি (পদার্থবিদ্যা) এবং স্থিতিস্থাপকতা -এর ধারণা এখানে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
২. অ্যান্টিসিপেশন (Anticipation)
অ্যান্টিসিপেশন হলো কোনো অ্যাকশনের পূর্বে একটি প্রস্তুতিমূলক মুভমেন্ট। এটি দর্শকদের মনে পরবর্তী ঘটনা সম্পর্কে ধারণা তৈরি করে। যেমন, কোনো চরিত্র লাফ দেওয়ার আগে সামান্য নিচে বসার ভঙ্গি করবে, যা লাফানোর জন্য অ্যান্টিসিপেশন তৈরি করবে। এই মূলনীতিটি দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং অ্যানিমেশনকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। দৃষ্টিভঙ্গি এবং সময় (ভৌতবিজ্ঞান) এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
৩. স্টেজিং (Staging)
স্টেজিং হলো একটি দৃশ্যের উপস্থাপনা। এটি দর্শকদের মনোযোগ নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের দিকে আকর্ষণ করে। পরিষ্কার স্টেজিংয়ের মাধ্যমে গল্পটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। এক্ষেত্রে আলো, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল এবং চরিত্রের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আলোছায়া এবং ক্যামেরা (ফটোগ্রাফি) সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
৪. স্ট্রেইট এহেড অ্যাকশন এবং ফলো থ্রু (Straight Ahead Action and Follow Through)
স্ট্রেইট এহেড অ্যাকশন হলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অ্যানিমেশন করা, যেখানে প্রতিটি ফ্রেম আলাদাভাবে তৈরি করা হয়। ফলো থ্রু হলো অ্যাকশন শেষ হওয়ার পরেও কিছু অংশের গতি বজায় রাখা। উদাহরণস্বরূপ, কোনো চরিত্র দৌড়ালে তার চুল বা পোশাকের গতি দৌড় শেষ হওয়ার পরেও কিছুক্ষণের জন্য চলতে থাকবে। এই দুটি কৌশল অ্যানিমেশনে স্বাভাবিকতা নিয়ে আসে। গতিবিদ্যা এবং ভরবেগ এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
৫. স্লো ইন এবং স্লো আউট (Slow In and Slow Out)
স্লো ইন (Slow In) মানে কোনো মুভমেন্ট ধীরে ধীরে শুরু হওয়া এবং স্লো আউট (Slow Out) মানে ধীরে ধীরে শেষ হওয়া। এই মূলনীতিটি অ্যানিমেশনে মসৃণতা নিয়ে আসে। যদি কোনো বস্তু হঠাৎ করে শুরু বা শেষ হয়, তবে তা অস্বাভাবিক দেখায়। ত্বরণ এবং মন্দন -এর ধারণা এখানে ব্যবহৃত হয়।
৬. ওভারল্যাপিং অ্যাকশন (Overlapping Action)
ওভারল্যাপিং অ্যাকশন হলো বিভিন্ন অংশের ভিন্ন ভিন্ন গতিতে চলা। একটি চরিত্রের বিভিন্ন অংশ একই সময়ে মুভ করবে না। যেমন, কোনো চরিত্র হাত নাড়ালে, তার হাত, বাহু এবং কাঁধ ভিন্ন সময়ে মুভ করবে। এটি অ্যানিমেশনে আরও বাস্তবসম্মত অনুভূতি দেয়। জটিল সিস্টেম এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এর ধারণা এখানে কাজে লাগে।
৭. সেকেন্ডারি অ্যাকশন (Secondary Action)
সেকেন্ডারি অ্যাকশন হলো প্রধান অ্যাকশনের পাশাপাশি ছোট ছোট মুভমেন্ট। এটি প্রধান অ্যাকশনকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। যেমন, কোনো চরিত্র কথা বলার সময় তার চোখ বা মুখের অভিব্যক্তি পরিবর্তন হওয়া সেকেন্ডারি অ্যাকশন। শারীরিক ভাষা এবং অভিনয় এর ধারণা এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
৮. timing (সময়)
অ্যানিমেশনে timing হলো প্রতিটি মুভমেন্টের মধ্যে সময়ের ব্যবধান। সঠিক timing অ্যানিমেশনকে বিশ্বাসযোগ্য এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। কম ফ্রেম রেট (Frame rate) দ্রুতগতির অনুভূতি দেয়, যেখানে বেশি ফ্রেম রেট ধীরগতির অনুভূতি দেয়। ফ্রেম রেট এবং সময়কাল এখানে বিবেচ্য বিষয়।
৯. এক্স্যাজারেশন (Exaggeration)
এক্স্যাজারেশন হলো বাস্তবতাকে অতিরঞ্জিত করা। এটি অ্যানিমেশনকে আরও মজার এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। তবে, অতিরিক্ত এক্স্যাজারেশন করলে অ্যানিমেশনটি অবাস্তব লাগতে পারে। দৃষ্টিভ্রম এবং আলংকারিক ভাষা এই ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
১০. সলিড ড্রয়িং (Solid Drawing)
সলিড ড্রয়িং হলো ত্রিমাত্রিক (3D) আকারে কোনো বস্তুকে ফুটিয়ে তোলা। এটি অ্যানিমেশনের চরিত্র এবং পরিবেশকে আরও বাস্তবসম্মত করে তোলে। জ্যামিতি এবং দৃষ্টিভঙ্গির নিয়ম এখানে অনুসরণ করা হয়।
১১. আর্কস (Arcs)
বেশিরভাগ প্রাকৃতিক মুভমেন্ট আর্ক (Arc) বা বাঁকা পথে ঘটে। অ্যানিমেশনে এই আর্কের ব্যবহার মুভমেন্টকে আরও স্বাভাবিক করে তোলে। সরলরেখায় মুভমেন্ট অস্বাভাবিক দেখায়। পর্যায়বৃত্ত গতি এবং প্রক্ষেপ্য গতি এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
১২. আপিল (Appeal)
আপিল হলো একটি চরিত্রের আকর্ষণীয়তা। একটি আকর্ষণীয় চরিত্র দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং তাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। চরিত্রের ডিজাইন, অভিব্যক্তি এবং মুভমেন্টের মাধ্যমে আপিল তৈরি করা যায়। মনোবিজ্ঞান এবং নন্দনতত্ত্ব এই ক্ষেত্রে সহায়ক।
অ্যানিমেশনের এই ১২টি মূলনীতি একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একটি সমন্বিতভাবে কাজ করে। এই মূলনীতিগুলো অনুসরণ করে, একজন অ্যানিমেটর একটি প্রাণবন্ত এবং আকর্ষণীয় অ্যানিমেশন তৈরি করতে পারে।
বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং অ্যানিমেশনের মধ্যে সম্পর্ক
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের সাথে অ্যানিমেশনের এই মূলনীতিগুলোর সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও, কিছু ক্ষেত্রে সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন:
- টাইমিং (Timing): বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে সঠিক সময়ে ট্রেড করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যানিমেশনে যেমন timing-এর মাধ্যমে মুভমেন্টকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তেমনি ট্রেডিংয়েও সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
- অ্যান্টিসিপেশন (Anticipation): অ্যানিমেশনে অ্যান্টিসিপেশন যেমন দর্শকদের পরবর্তী ঘটনার জন্য প্রস্তুত করে, তেমনি ট্রেডিংয়েও মার্কেট অ্যানালাইসিস করে ভবিষ্যতের মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারণা করা যায়।
- এক্স্যাজারেশন (Exaggeration): ট্রেডিংয়ে অতিরিক্ত ঝুঁকি নেওয়া বা লোভ করা এক্স্যাজারেশনের মতো। এটি যেমন অ্যানিমেশনে খারাপ লাগতে পারে, তেমনি ট্রেডিংয়েও ক্ষতির কারণ হতে পারে।
টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এবং ভলিউম অ্যানালাইসিস
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস (Technical Analysis) এবং ভলিউম অ্যানালাইসিস (Volume Analysis) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস হলো ঐতিহাসিক ডেটার মাধ্যমে ভবিষ্যতের মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করা। এর জন্য বিভিন্ন ধরনের চার্ট, যেমন ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট (Candlestick chart), লাইন চার্ট (Line chart) এবং বার চার্ট (Bar chart) ব্যবহার করা হয়। ভলিউম অ্যানালাইসিস হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে কতগুলো শেয়ার বা কন্ট্রাক্ট কেনাবেচা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করা।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক:
- মুভিং এভারেজ (Moving Average): এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গড় মূল্য নির্দেশ করে।
- রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স (Relative Strength Index - RSI): এটিOverbought এবং Oversold অবস্থা নির্দেশ করে।
- MACD (Moving Average Convergence Divergence): এটি দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক দেখায়।
- ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট (Fibonacci Retracement): এটি সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করে।
ভলিউম বিশ্লেষণের গুরুত্ব:
- ভলিউম বৃদ্ধি: যদি ভলিউম বৃদ্ধি পায়, তবে এটি একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের ইঙ্গিত দেয়।
- ভলিউম হ্রাস: যদি ভলিউম হ্রাস পায়, তবে এটি ট্রেন্ড দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
- ভলিউম স্পাইক (Volume Spike): এটি অপ্রত্যাশিত মুভমেন্টের পূর্বাভাস দেয়।
অতিরিক্ত রিসোর্স:
- ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন
- সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স
- ট্রেন্ড লাইন
- চার্ট প্যাটার্ন
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
- অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার
- বাইনারি অপশন কৌশল
- মার্জিন কল
- লিভারেজ
- স্টপ লস
- টেক প্রফিট
- বৈচিত্র্যকরণ
- মানসিক প্রস্তুতি
- ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম
- ব্রোকার নির্বাচন
| ক্রমিক নং | মূলনীতি | বর্ণনা | উদাহরণ | |
| ১ | স্কোয়াশ এবং স্ট্রেচ | বস্তুর নমনীয়তা এবং ওজন বোঝানো | বলের নড়াচড়া | |
| ২ | অ্যান্টিসিপেশন | অ্যাকশনের পূর্বে প্রস্তুতিমূলক মুভমেন্ট | লাফ দেওয়ার আগে বসা | |
| ৩ | স্টেজিং | দৃশ্যের সঠিক উপস্থাপনা | আলো এবং ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ব্যবহার | |
| ৪ | স্ট্রেইট এহেড অ্যাকশন এবং ফলো থ্রু | শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অ্যানিমেশন এবং অ্যাকশন শেষ হওয়ার পরেও গতি বজায় রাখা | হাত নাড়ানোর সময় শরীরের অন্যান্য অংশের মুভমেন্ট | |
| ৫ | স্লো ইন এবং স্লো আউট | মুভমেন্টের শুরুতে এবং শেষে ধীরে ধীরে গতি পরিবর্তন | গাড়ির গতি কমা বা বাড়ানো | |
| ৬ | ওভারল্যাপিং অ্যাকশন | বিভিন্ন অংশের ভিন্ন ভিন্ন গতিতে চলা | দৌড়ানোর সময় হাত, পা ও পোশাকের মুভমেন্ট | |
| ৭ | সেকেন্ডারি অ্যাকশন | প্রধান অ্যাকশনের পাশাপাশি ছোট মুভমেন্ট | কথা বলার সময় চোখের অভিব্যক্তি | |
| ৮ | timing | প্রতিটি মুভমেন্টের মধ্যে সময়ের ব্যবধান | সঠিক সময়ে মুভমেন্ট শুরু করা | |
| ৯ | এক্স্যাজারেশন | বাস্তবতাকে অতিরঞ্জিত করা | কার্টুন চরিত্রের অঙ্গভঙ্গি | |
| ১০ | সলিড ড্রয়িং | ত্রিমাত্রিক আকারে কোনো বস্তুকে ফুটিয়ে তোলা | চরিত্রের ডিজাইন | |
| ১১ | আর্কস | বাঁকা পথে মুভমেন্ট | বলের নিক্ষেপ | |
| ১২ | আপিল | চরিত্রের আকর্ষণীয়তা | সুন্দর ডিজাইন ও অভিব্যক্তি |
এই নিবন্ধটি অ্যানিমেশনের ১২টি মূলনীতি এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মধ্যে কিছু প্রাসঙ্গিক সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেছে। আশা করি, এটি অ্যানিমেশন এবং ট্রেডিং উভয় বিষয়ে আগ্রহী পাঠকদের জন্য সহায়ক হবে।
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
