অনুসরণ পরীক্ষা

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

অনুসরণ পরীক্ষা

অনুসরণ পরীক্ষা (Follow-up Test) একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল যা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে, একজন ট্রেডার প্রথম ট্রেডের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ট্রেড করে। এটি মূলত একটি ট্রেডিং কৌশল যা ক্ষতির পরিমাণ পুনরুদ্ধার এবং লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করে। এই নিবন্ধে, অনুসরণ পরীক্ষা কী, এর প্রকারভেদ, ব্যবহারের নিয়মাবলী, সুবিধা, অসুবিধা এবং কার্যকর কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

অনুসরণ পরীক্ষার ধারণা

অনুসরণ পরীক্ষা হলো পূর্ববর্তী ট্রেডের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ট্রেড করার একটি পদ্ধতি। যদি প্রথম ট্রেডটি লাভজনক হয়, তবে ট্রেডার সাধারণত একই দিকে ট্রেড করা চালিয়ে যান। অন্যদিকে, যদি প্রথম ট্রেডটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে ট্রেডার ক্ষতির পরিমাণ পুনরুদ্ধার করার জন্য ট্রেডিংয়ের দিক পরিবর্তন করতে পারেন অথবা ট্রেডের পরিমাণ বাড়াতে পারেন। এই পদ্ধতিটি মানি ম্যানেজমেন্ট-এর একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

অনুসরণ পরীক্ষার প্রকারভেদ

বিভিন্ন ধরনের অনুসরণ পরীক্ষা কৌশল রয়েছে, যা ট্রেডারদের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:

১. মার্টিনগেল কৌশল (Martingale Strategy): এটি সম্ভবত সবচেয়ে পরিচিত অনুসরণ পরীক্ষা কৌশল। এই পদ্ধতিতে, প্রতিটি ক্ষতির পরে ট্রেডের পরিমাণ দ্বিগুণ করা হয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত একটি লাভজনক ট্রেড আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত ট্রেডের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এই কৌশলের মূল ধারণা হলো, যখন লাভজনক ট্রেডটি আসবে, তখন তা পূর্বের সমস্ত ক্ষতি পূরণ করে দেবে এবং কিছু লাভও অবশিষ্ট থাকবে। তবে, এটি একটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল, কারণ ক্রমাগত ক্ষতির সম্মুখীন হলে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট দ্রুত শূন্য হয়ে যেতে পারে। ঝুঁকি সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক।

২. অ্যান্টি-মার্টিংগেল কৌশল (Anti-Martingale Strategy): মার্টিংগেল কৌশলের ঠিক বিপরীত হলো অ্যান্টি-মার্টিংগেল কৌশল। এই পদ্ধতিতে, প্রতিটি লাভের পরে ট্রেডের পরিমাণ দ্বিগুণ করা হয়। এর ফলে লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ সীমিত থাকে।

৩. ফিবোনাচ্চি অনুসরণ পরীক্ষা (Fibonacci Follow-up Test): এই কৌশলটি ফিবোনাচ্চি সংখ্যার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। ক্ষতির পরে, ট্রেডের পরিমাণ ফিবোনাচ্চি সংখ্যা অনুযায়ী বৃদ্ধি করা হয় (যেমন: ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ইত্যাদি)। এই পদ্ধতিটি মার্টিনগেল কৌশলের চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ।

৪. শতাংশ ভিত্তিক অনুসরণ পরীক্ষা (Percentage-Based Follow-up Test): এই পদ্ধতিতে, ট্রেডের পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হারে বৃদ্ধি বা হ্রাস করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি প্রথম ট্রেডটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে পরবর্তী ট্রেডের পরিমাণ ১০% বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

অনুসরণ পরীক্ষার নিয়মাবলী

অনুসরণ পরীক্ষা করার সময় কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলী অনুসরণ করা উচিত, যা ট্রেডারদের ঝুঁকি কমাতে এবং লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করবে:

  • লক্ষ্য নির্ধারণ: ট্রেড শুরু করার আগে একটি নির্দিষ্ট লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।
  • স্টপ-লস নির্ধারণ: ক্ষতির পরিমাণ সীমিত করার জন্য স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন।
  • ট্রেডের পরিমাণ: আপনার অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ট্রেডের পরিমাণ নির্ধারণ করুন।
  • ধৈর্য: অনুসরণ পরীক্ষা একটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশল, তাই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
  • মানসিক শৃঙ্খলা: আবেগপ্রবণ হয়ে ট্রেড করা উচিত নয়।

অনুসরণ পরীক্ষার সুবিধা

  • ক্ষতির পুনরুদ্ধার: এই কৌশলটি ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।
  • লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি: সঠিক কৌশল অবলম্বন করলে লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।
  • সহজ ব্যবহার: অনুসরণ পরীক্ষা কৌশলটি বোঝা এবং ব্যবহার করা সহজ।
  • নমনীয়তা: ট্রেডাররা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কৌশল পরিবর্তন করতে পারে।

অনুসরণ পরীক্ষার অসুবিধা

  • উচ্চ ঝুঁকি: কিছু কৌশল, যেমন মার্টিনগেল, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
  • অ্যাকাউন্ট শূন্য হওয়ার ঝুঁকি: ক্রমাগত ক্ষতির সম্মুখীন হলে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট দ্রুত শূন্য হয়ে যেতে পারে।
  • মানসিক চাপ: ক্ষতির সম্মুখীন হলে ট্রেডারদের মানসিক চাপ বাড়তে পারে।
  • সীমাবদ্ধতা: এই কৌশলটি সবসময় কার্যকর নাও হতে পারে, বিশেষ করে বাজারের অস্থির পরিস্থিতিতে।

কার্যকর অনুসরণ পরীক্ষার কৌশল

১. সঠিক কৌশল নির্বাচন: ট্রেডারদের উচিত তাদের ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা এবং ট্রেডিং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে সঠিক কৌশল নির্বাচন করা। নতুন ট্রেডারদের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল (যেমন: ফিবোনাচ্চি অনুসরণ পরীক্ষা) ব্যবহার করা উচিত।

২. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: প্রতিটি ট্রেডের জন্য স্টপ-লস নির্ধারণ করা এবং ট্রেডের পরিমাণ সঠিকভাবে নির্ধারণ করা জরুরি।

৩. বাজারের বিশ্লেষণ: ট্রেড করার আগে বাজারের অবস্থা বিশ্লেষণ করা উচিত। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

৪. নিয়মিত পর্যালোচনা: ট্রেডিং কৌশলটি নিয়মিত পর্যালোচনা করা উচিত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা উচিত।

৫. ডেমো অ্যাকাউন্ট ব্যবহার: নতুন কৌশল ব্যবহার করার আগে ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন করা উচিত।

অনুসরণ পরীক্ষার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়

উপসংহার

অনুসরণ পরীক্ষা একটি শক্তিশালী ট্রেডিং কৌশল হতে পারে, যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে, এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে। ট্রেডারদের উচিত তাদের ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা, ট্রেডিং অভিজ্ঞতা এবং বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে সঠিক কৌশল নির্বাচন করা এবং যথাযথ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অবলম্বন করা। নিয়মিত অনুশীলন এবং শেখার মাধ্যমে এই পদ্ধতিতে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер