পর্তুগাল

পর্তুগাল দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ। এর পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তরে স্পেন এবং পূর্বে ভূমধ্যসাগর অবস্থিত। পর্তুগালের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতি এটিকে ইউরোপের অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ হিসেবে পরিচিত করেছে।

ইতিহাস

পর্তুগালের ইতিহাস প্রায় তিন হাজার বছরের পুরনো। খ্রিস্টপূর্বাব্দে ফিনিশীয়, গ্রিক এবং কার্থেজিনীয়রা এখানে বাণিজ্য করত। পরবর্তীতে রোমানরা এই অঞ্চল দখল করে নেয় এবং প্রায় ৬০০ বছর শাসন করে। পঞ্চম শতাব্দীতে পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্য-এর পতনের পর ভিসিগথরা পর্তুগাল দখল করে। ৭১১ খ্রিস্টাব্দে মুসলিমরা আইবেরীয় উপদ্বীপ আক্রমণ করে এবং পর্তুগালও তাদের দখলে চলে যায়।

১২শ শতাব্দীতে আফনসো হেনরিক্স, লিওন রাজ্যের একজনCount, মুসলিমদের কাছ থেকে পর্তুগাল পুনরুদ্ধার করেন এবং নিজেকে পর্তুগালের প্রথম রাজা ঘোষণা করেন। এরপর পর্তুগাল একটি স্বাধীন রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগাল সামুদ্রিক আবিষ্কার-এর যুগে নেতৃত্ব দেয়। ভাস্কো দা গামা ভারত-এ নতুন সমুদ্রপথ আবিষ্কার করেন এবং পেড্রো আলভারেস ক্যাব্রাল ব্রাজিল আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারগুলির ফলে পর্তুগাল একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে তোলে।

ঊনবিংশ শতাব্দীতে পর্তুগাল তার উপনিবেশগুলি হারায় এবং ১৯২৬ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থান-এর মাধ্যমে সালাজার-এর নেতৃত্বে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৪ সালে কার্নেশন বিপ্লব-এর মাধ্যমে এই শাসনের অবসান হয় এবং পর্তুগাল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ১৯৯৯ সালে পর্তুগাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন-এ যোগদান করে।

ভূগোল

পর্তুগালের আয়তন ৯২,০৯0 বর্গকিলোমিটার। দেশটির ভূখণ্ড বৈচিত্র্যময়, যেখানে পার্বত্য অঞ্চল, সমভূমি এবং উপকূলীয় এলাকা রয়েছে। পর্তুগালের দীর্ঘ উপকূলরেখা প্রায় ৯৪৬ কিলোমিটার। দেশটির সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হলো সেররা দা এস্ট্রেলা, যার উচ্চতা ১,৯৯৩ মিটার।

পর্তুগালের প্রধান নদীগুলি হলো তেজো, ডোরো, গুয়াদিয়ানা এবং মোনডেগো। দেশটির জলবায়ু ভূমধ্যসাগরীয়। গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও শুষ্ক এবং শীতকাল হালকা ও বৃষ্টিবহুল।

পর্তুগালের প্রধান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য
আয়তন	৯২,০৯০ বর্গকিলোমিটার	উপকূলরেখা	প্রায় ৯৪৬ কিলোমিটার	সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ	সেররা দা এস্ট্রেলা (১,৯৯৩ মিটার)	প্রধান নদী	তেজো, ডোরো, গুয়াদিয়ানা, ম Monডেগো	জলবায়ু	ভূমধ্যসাগরীয়

রাজনীতি

পর্তুগাল একটি সংসদীয় প্রজাতন্ত্র। রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান। পর্তুগালের সংসদ অ্যাসেম্বলি অফ দ্য রিপাবলিক নামে পরিচিত, যেখানে ২৩0 জন সদস্য রয়েছেন।

পর্তুগালের রাজনৈতিক ব্যবস্থা স্থিতিশীল এবং গণতান্ত্রিক। দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি হলো সোশ্যালিস্ট পার্টি, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি এবং ব্লক অফ লেফট।

অর্থনীতি

পর্তুগালের অর্থনীতি মূলত পর্যটন, শিল্প, কৃষি এবং বাণিজ্য-এর উপর নির্ভরশীল। পর্যটন পর্তুগালের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেশটির সুন্দর সমুদ্র সৈকত, ঐতিহাসিক শহর এবং মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

পর্তুগালের শিল্পখাত বস্ত্র, পাদুকা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রাসায়নিক দ্রব্য এবং অটোমোবাইল উৎপাদন সহ বিভিন্ন শিল্পে বিস্তৃত। কৃষি খাতে জলপাই, ডিম এবং মেশিনারি উল্লেখযোগ্য।

পর্তুগাল ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করে। দেশটির অর্থনীতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

পর্তুগালের অর্থনীতির মূল উপাদান
প্রধান খাত	পর্যটন, শিল্প, কৃষি, বাণিজ্য	মুদ্রা	ইউরো	জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন)	প্রায় ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার	প্রধান শিল্প	বস্ত্র, পাদুকা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রাসায়নিক দ্রব্য, অটোমোবাইল	প্রধান কৃষি পণ্য	জলপাই, ডিম, ওয়াইন, মেশিনারী

সংস্কৃতি

পর্তুগালের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়। দেশটির সংস্কৃতিতে রোমান, মুসলিম এবং আটলান্টিক প্রভাব বিদ্যমান। পর্তুগিজ ভাষা রোমান্স ভাষা পরিবারের সদস্য এবং এটি ব্রাজিল, অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক এবং অন্যান্য প্রাক্তন পর্তুগিজ উপনিবেশে ব্যবহৃত হয়।

পর্তুগালের সঙ্গীত ও নৃত্যের ঐতিহ্য বেশ পুরনো। ফাদো হলো পর্তুগালের সবচেয়ে বিখ্যাত সঙ্গীতশৈলী, যা বিষণ্ণ সুর এবং আবেগপূর্ণ গানের জন্য পরিচিত। পর্তুগিজ রান্না-ও বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত, যেখানে সিফুড, মাংস এবং মিষ্টি-র বিভিন্ন পদ পাওয়া যায়।

পর্তুগালের স্থাপত্য-এ গথিক, মানুয়েলিন এবং বারোক শৈলীর প্রভাব দেখা যায়। দেশটির ঐতিহাসিক শহরগুলিতে সুন্দর গির্জা, মঠ এবং প্রাসাদ রয়েছে।

পর্তুগিজ সাহিত্য-এর মধ্যে লুইস দে কামোয়েস-এর লুসিয়াডস একটি উল্লেখযোগ্য কাজ।

পর্যটন

পর্তুগাল পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। দেশটির প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলি হলো:

লিসবন: পর্তুগালের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর।
পর্তো: ডোরো নদীর তীরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক শহর।
আলগার্ভে: সুন্দর সমুদ্র সৈকত এবং রিসোর্টের জন্য বিখ্যাত।
সিনট্রা: পাহাড়ের উপরে অবস্থিত প্রাসাদ এবং বাগানগুলির জন্য পরিচিত।
এভোর : রোমান মন্দির এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত।

পর্তুগালে পর্যটকরা বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন, যেমন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন, সমুদ্র সৈকতে বিশ্রাম নেওয়া, স্থানীয় খাবার চেখে দেখা এবং ওয়াইন টেস্টিং করা।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং পর্তুগাল

পর্তুগালে বাইনারি অপশন ট্রেডিং বৈধ, তবে এটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। পর্তুগিজ সিকিউরিটিজ মার্কেট কমিশন (CMVM) এই ট্রেডিং কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করে। বাইনারি অপশন ট্রেডিং হলো একটি আর্থিক বিনিয়োগ যেখানে একজন ট্রেডার একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে তা অনুমান করে।

পর্তুগালে বাইনারি অপশন ট্রেডিং করার জন্য, ট্রেডারদের অবশ্যই লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্রোকারের মাধ্যমে ট্রেড করতে হবে। CMVM-এর দ্বারা অনুমোদিত ব্রোকারদের তালিকা তাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই ট্রেডারদের উচিত এই বিষয়ে ভালোভাবে জেনে বুঝে তারপর বিনিয়োগ করা। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা উচিত:

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ: চার্ট এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বিশ্লেষণ করা।
ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ: অর্থনৈতিক ডেটা এবং অন্যান্য মৌলিক বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ করা এবং স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে ঝুঁকি কমানো।
ভলিউম বিশ্লেষণ: ট্রেডিং ভলিউম বিশ্লেষণ করে বাজারের গতিবিধি বোঝা।
মানি ম্যানেজমেন্ট: আপনার ট্রেডিং ক্যাপিটাল সঠিকভাবে পরিচালনা করা।
চার্ট প্যাটার্ন: বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন শিখে সেগুলোকে ট্রেডিং-এ ব্যবহার করা।
ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন: ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন দেখে বাজারের ভবিষ্যৎ গতিবিধি আন্দাজ করা।
মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে ট্রেন্ড নির্ধারণ করা।
আরএসআই (রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইন্ডেক্স): আরএসআই ব্যবহার করে ওভারবট এবং ওভারসোল্ড অবস্থা নির্ণয় করা।
MACD (মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স): MACD ব্যবহার করে বাজারের মোমেন্টাম বোঝা।
বলিঙ্গার ব্যান্ড: বলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহার করে মার্কেটের ভোলাটিলিটি পরিমাপ করা।
ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ব্যবহার করে সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল খুঁজে বের করা।
সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল: সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল চিহ্নিত করে ট্রেডিংয়ের সুযোগ নেওয়া।
ট্রেডিং সাইকোলজি: ট্রেডিংয়ের সময় মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা।
নিউজ ট্রেডিং: গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবরের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করা।

পর্তুগিজ বিনিয়োগকারীদের জন্য বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি সুযোগ হতে পারে, তবে এটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে করা উচিত।

আরও দেখুন

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ