আইসিসি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) হলো ক্রিকেট খেলার আন্তর্জাতিক পরিচালনা সংস্থা। এটি সদস্য দেশসমূহের ক্রিকেট সংক্রান্ত নিয়মাবলী প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টসমূহ আয়োজন করে এবং ক্রিকেট খেলার বিশ্বব্যাপী উন্নয়নে কাজ করে। আইসিসি ১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর সদর দপ্তর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে অবস্থিত।

ইতিহাস

আইসিসি-র যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৮২ সালে, যখন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধিরা মিলে 'ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্স' গঠন করেন। মূলত, অস্ট্রেলিয়ার ইংল্যান্ড সফরের সময়কার বিতর্ক নিরসনের জন্য এই সংস্থাটি তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে, ১৯০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ১৯২৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই কনফারেন্সে যোগ দেয়।

১৯৬৩ সালে সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কনফারেন্স' (আইসিসি) রাখা হয়। এরপর ২০০৫ সালে বর্তমান নাম 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল' (আইসিসি) গ্রহণ করা হয়। আইসিসি-র গঠন এবং কার্যক্রমে সময়ের সাথে সাথে অনেক পরিবর্তন এসেছে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী আরও জনপ্রিয় করা এবং এর মান উন্নয়ন করা।

সদস্যপদ

বর্তমানে আইসিসি-র পূর্ণ সদস্য ১১টি:

আইসিসি-র পূর্ণ সদস্য দেশসমূহ
ক্রমিক নং	দেশ
১	অস্ট্রেলিয়া
২	বাংলাদেশ
৩	ইংল্যান্ড
৪	ভারত
৫	আয়ারল্যান্ড
৬	নিউজিল্যান্ড
৭	পাকিস্তান
৮	দক্ষিণ আফ্রিকা
৯	শ্রীলঙ্কা
১০	ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১১	জিম্বাবুয়ে

এছাড়াও, আইসিসি-র সহযোগী সদস্য এবং অ্যাসোসিয়েট সদস্য হিসেবে আরও অনেক দেশ রয়েছে। সহযোগী সদস্যপদ সাধারণত সেই দেশগুলোর জন্য যারা ক্রিকেট খেলার উন্নয়নে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতে পূর্ণ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে চায়।

গঠন ও পরিচালনা

আইসিসি একটি নির্বাচিত বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়। এই বোর্ডে প্রতিটি পূর্ণ সদস্য দেশের একজন করে প্রতিনিধি থাকেন। বোর্ডের সভাপতি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সংস্থার দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। আইসিসি-র প্রধান সিদ্ধান্তগুলো বার্ষিক সাধারণ সভায় (Annual General Meeting) সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের দ্বারা গৃহীত হয়।

আইসিসি বিভিন্ন কমিটি গঠন করে, যারা ক্রিকেট খেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

ক্রিকেট কমিটি: খেলার নিয়মাবলী এবং খেলার অবস্থার উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে।
ফাইন্যান্স কমিটি: সংস্থার আর্থিক বিষয়গুলো দেখে।
ইভেন্ট কমিটি: আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোর আয়োজন এবং পরিচালনা করে।
ডেভেলপমেন্ট কমিটি: ক্রিকেট খেলার বিশ্বব্যাপী উন্নয়নে কাজ করে।

আইসিসি-র গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট

আইসিসি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো:

ক্রিকেট বিশ্বকাপ: এটি চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় এবং ওয়ানডে (One Day International) ফরম্যাটে খেলা হয়। এটি ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট হিসেবে বিবেচিত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: এটিও চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় এবং টি-টোয়েন্টি (Twenty20) ফরম্যাটে খেলা হয়। এই টুর্নামেন্টটি অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি: এটি সেরা আটটি ওয়ানডে দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ: এটি টেস্ট ক্রিকেটের একটি নতুন ফরম্যাট, যেখানে শীর্ষস্থানীয় দলগুলো একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ: তরুণ ক্রিকেটারদের প্রতিভা বিকাশের জন্য এই টুর্নামেন্টটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

নিয়মাবলী ও কোড অফ কন্ডাক্ট

আইসিসি ক্রিকেট খেলার নিয়মাবলী নির্ধারণ করে এবং তা প্রয়োগ করে। এই নিয়মাবলী খেলোয়াড়দের আচরণ, খেলার মাঠের নিরাপত্তা এবং খেলার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, আইসিসি একটি কোড অফ কন্ডাক্ট তৈরি করেছে, যা খেলোয়াড়, কোচ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য প্রযোজ্য। এই কোড অফ কন্ডাক্ট-এর মূল উদ্দেশ্য হলো খেলার নৈতিক মান বজায় রাখা এবং দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করা।

ডোপিং বিরোধী নিয়মাবলী এবং স্পট ফিক্সিং এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রেও আইসিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সম্প্রচার এবং বাণিজ্যিক অধিকার

আইসিসি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলোর সম্প্রচার এবং বাণিজ্যিক অধিকার নিয়ন্ত্রণ করে। এই অধিকারগুলো বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এবং স্পন্সরদের কাছে বিক্রি করা হয়, যা আইসিসি-র আয়ের প্রধান উৎস। সম্প্রচার অধিকারের মাধ্যমে ক্রিকেট খেলা বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

আইসিসি ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী আরও জনপ্রিয় করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

নতুন দেশগুলোতে ক্রিকেট খেলার বিস্তার ঘটানো।
মহিলাদের ক্রিকেটের উন্নয়ন করা।
ক্রিকেট খেলার নতুন ফরম্যাট চালু করা।
প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খেলার মান উন্নয়ন করা।
খেলোয়াড়দের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ সৃষ্টি করা।

আইসিসি এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং

যদিও আইসিসি সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে জড়িত নয়, তবে ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলোতে স্পন্সরশিপের মাধ্যমে এই ধরনের আর্থিক প্ল্যাটফর্মের প্রচার দেখা যায়। বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল আর্থিক বিনিয়োগ কৌশল, যেখানে বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের দাম বাড়বে নাকি কমবে তা অনুমান করে থাকেন। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই বিনিয়োগকারীদের উচিত এই বিষয়ে ভালোভাবে জেনে বুঝে তারপর বিনিয়োগ করা।

 * ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
 * আর্থিক বিশ্লেষণ
 * টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
 * ভলিউম বিশ্লেষণ
 * ট্রেডিং কৌশল
 * মার্জিন ট্রেডিং
 * leveraged trading
 * পিপিং (ফিনান্স)
 * স্প্রেড (ফিনান্স)
 * স্টপ-লস অর্ডার
 * টেক প্রফিট অর্ডার
 * ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ
 * চার্ট প্যাটার্ন
 * মুভিং এভারেজ
 * রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইনডেক্স (RSI)

ক্রিকেট এবং আর্থিক বাজারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে আইসিসি বিভিন্ন বাণিজ্যিক সুযোগ তৈরি করতে পারে, তবে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি।

সমালোচনা

আইসিসি বিভিন্ন সময়ে সমালোচিত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু প্রধান সমালোচনা হলো:

ভারত-কেন্দ্রিকতা: অভিযোগ করা হয় যে আইসিসি ভারতের প্রভাবের অধীনে পরিচালিত হয় এবং অন্যান্য দেশের স্বার্থকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়।
নিয়মাবলীতে পরিবর্তন: প্রায়শই আইসিসি-র নিয়মাবলীতে পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, যা খেলোয়াড় এবং ভক্তদের মধ্যে অসন্তোষের কারণ হতে পারে।
আর্থিক বৈষম্য: ধনী এবং গরিব দেশগুলোর মধ্যে আর্থিক বৈষম্য দূর করতে আইসিসি-র পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেই বলে অনেকে মনে করেন।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

আইসিসি-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: [1](https://www.icc-cricket.com/)
উইকিপিডিয়া: [2](https://en.wikipedia.org/wiki/International_Cricket_Council)

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ