ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি (NIST)

পরিচিতি

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি (NIST) হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের একটি সংস্থা। এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মান উন্নয়ন এবং প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। NIST এর প্রধান কার্যালয় মেরিল্যান্ডের গেইথার্সবার্গ শহরে অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়তা করে।

ইতিহাস

NIST এর যাত্রা শুরু হয় ১৯০১ সালে। তখন এটি "Bureau of Standards" নামে পরিচিত ছিল। শুরুতে এর প্রধান কাজ ছিল পরিমাপের মান উন্নয়ন করা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে শিল্প ও বাণিজ্যকে সহায়তা করা। ১৯৪৮ সালে এর নাম পরিবর্তন করে ন্যাশনাল bureau of Standards করা হয়। পরবর্তীতে, ১৯৮০ সালে এটি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি (NIST) নামে পরিচিত হয়। সময়ের সাথে সাথে NIST তার পরিধি বিস্তার করেছে এবং বর্তমানে এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালনা করছে।

NIST-এর কার্যাবলী

NIST বিভিন্ন ধরনের কার্যাবলী সম্পাদন করে, যাকে কয়েকটি প্রধান বিভাগে ভাগ করা যায়:

মান উন্নয়ন ও পরিমাপ: NIST বিভিন্ন ভৌত, রাসায়নিক এবং অন্যান্য পরিমাপের মান তৈরি করে এবং সেগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত করে। এই মানগুলো বৈজ্ঞানিক গবেষণা, শিল্প উৎপাদন এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
গবেষণা ও উন্নয়ন: NIST অত্যাধুনিক গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। এর মধ্যে রয়েছে ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং পদার্থ বিজ্ঞান এর বিভিন্ন ক্ষেত্র।
শিল্প সহায়তা: NIST মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে এবং তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সাইবার নিরাপত্তা: NIST সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত মান, নির্দেশিকা এবং প্রযুক্তি তৈরি করে, যা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
ফরেনসিক বিজ্ঞান: NIST ফরেনসিক বিজ্ঞান গবেষণার মাধ্যমে অপরাধ তদন্তে সহায়তা করে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখে।

NIST-এর গুরুত্বপূর্ণ বিভাগসমূহ

NIST-এর অধীনে বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে, যারা বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কাজ করে। এদের মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিভাগ হলো:

ফিজিক্যাল মেজারমেন্ট ল্যাবরেটরি (PML): এই বিভাগটি ভৌত পরিমাপের মান উন্নয়ন এবং ক্যালিব্রেশন স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করে।
কেমিস্ট্রি অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স ডিভিশন (CMSD): এই বিভাগটি রাসায়নিক উপাদান এবং পদার্থের বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করে।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডিরেক্টরেট (CSTD): এই বিভাগটি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা করে, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডেটা বিজ্ঞান এবং সাইবার নিরাপত্তা।
ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবরেটরি (EL): এই বিভাগটি প্রকৌশল বিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে।
এনার্জি টেকনোলজিস ডিভিশন (ETD): এই বিভাগটি শক্তি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উন্নয়নের চেষ্টা করে।

NIST এবং বাইনারি অপশন ট্রেডিং

যদিও NIST সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের সাথে জড়িত নয়, তবুও এর কাজগুলো এই আর্থিক বাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। NIST এর ক্রিপ্টোগ্রাফি এবং কম্পিউটার নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণাগুলি অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক। এছাড়াও, NIST-এর ডেটা বিশ্লেষণ এবং মডেলিংয়ের কাজগুলি ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং বাজার বিশ্লেষণ এর জন্য প্রয়োজনীয় ভিত্তি তৈরি করে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্মগুলির নির্ভরযোগ্যতা এবং ডেটা সুরক্ষার জন্য NIST-এর মানদণ্ডগুলি অনুসরণ করা উচিত। একটি সুরক্ষিত এবং নির্ভরযোগ্য ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম নিশ্চিত করতে, নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপর নজর রাখা প্রয়োজন:

এনক্রিপশন: প্ল্যাটফর্মের ডেটা এনক্রিপশনের জন্য NIST-অনুমোদিত অ্যালগরিদম ব্যবহার করা উচিত।
অথেন্টিকেশন: ব্যবহারকারীদের জন্য শক্তিশালী প্রমাণীকরণ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
ডেটা সুরক্ষা: ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত এবং আর্থিক ডেটা সুরক্ষিত রাখতে হবে।
নিয়মিত নিরীক্ষা: প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়মিতভাবে নিরীক্ষা করা উচিত।

NIST-এর অবদান

NIST বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অবদান নিচে উল্লেখ করা হলো:

আন্তর্জাতিক সময়-মান: NIST আন্তর্জাতিক সময়-মানের (Coordinated Universal Time - UTC) প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে।
ডিজিটাল ফরেনসিকস: NIST ডিজিটাল ফরেনসিকস ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মান এবং পদ্ধতি তৈরি করেছে, যা অপরাধ তদন্তে ব্যবহৃত হয়।
সাইবার নিরাপত্তা ফ্রেমওয়ার্ক: NIST সাইবার নিরাপত্তা ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করেছে, যা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাইবার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ন্যানোটেকনোলজি স্ট্যান্ডার্ড: NIST ন্যানোটেকনোলজি ক্ষেত্রে পরিমাপের মান উন্নয়ন করেছে, যা এই প্রযুক্তির উন্নয়নে সহায়ক।
স্মার্ট গ্রিড স্ট্যান্ডার্ড: NIST স্মার্ট গ্রিড প্রযুক্তির জন্য স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করেছে, যা বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য করে।

NIST-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

NIST ভবিষ্যতে আরও নতুন প্রযুক্তি এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) উন্নয়ন: NIST AI প্রযুক্তির মান উন্নয়ন এবং এর নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং: কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় স্ট্যান্ডার্ড এবং প্রযুক্তি তৈরি করা।
বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা: বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং এর নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করা।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা।
উন্নত উৎপাদন প্রক্রিয়া: উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও আধুনিক এবং দক্ষ করে তোলার জন্য গবেষণা করা।

অভ্যন্তরীণ লিঙ্ক

বাইনারি অপশন ট্রেডিং সম্পর্কিত অতিরিক্ত লিঙ্ক

তথ্যসূত্র

NIST এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: [1](https://www.nist.gov/)
উইকিপিডিয়া: [2](https://en.wikipedia.org/wiki/National_Institute_of_Standards_and_Technology)

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ