টাচ/নো ট্রেডিং

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

টাচ / নো ট্রেডিং : একটি বিস্তারিত আলোচনা

ভূমিকা

বাইনারি অপশন ট্রেডিং জগতে টাচ/নো ট্রেডিং একটি বহুল ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় কৌশল। এটি অপেক্ষাকৃত সহজবোধ্য হওয়ায় নতুন ট্রেডারদের মধ্যেও দ্রুত আকর্ষণীয়তা লাভ করেছে। এই পদ্ধতিতে, একজন ট্রেডার একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অ্যাসেটের মূল্য একটি নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছাবে কিনা (টাচ) বা পৌঁছাবে না (নো টাচ) তা অনুমান করে ট্রেড করেন। এই নিবন্ধে, টাচ/নো ট্রেডিংয়ের মূল ধারণা, কৌশল, ঝুঁকি এবং সুবিধাগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের মূল ধারণা

টাচ/নো ট্রেডিং হলো বাইনারি অপশনের একটি প্রকারভেদ, যেখানে ট্রেডারদের দুটি বিকল্প থাকে:

  • টাচ (Touch): ট্রেডার অনুমান করেন যে অ্যাসেটের মূল্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একটি নির্দিষ্ট মূল্য স্তরে পৌঁছাবে।
  • নো টাচ (No Touch): ট্রেডার অনুমান করেন যে অ্যাসেটের মূল্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একটি নির্দিষ্ট মূল্য স্তরে পৌঁছাবে না।

এই ট্রেডিং পদ্ধতিতে, ট্রেডাররা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্বাচন করেন এবং তারপর একটি স্ট্রাইক মূল্য নির্ধারণ করেন। স্ট্রাইক মূল্য হলো সেই স্তর, যা অ্যাসেটের মূল্য স্পর্শ করবে কিনা তার উপর ট্রেডটি নির্ভর করে।

টাচ/নো ট্রেডিং কিভাবে কাজ করে?

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের কার্যপ্রণালী বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে একটি উদাহরণ দেওয়া হলো:

ধরা যাক, আপনি EUR/USD কারেন্সি পেয়ারে টাচ/নো ট্রেড করতে চান। বর্তমান মূল্য ১.১০৫০ এবং আপনি ১.১১০০-এর স্ট্রাইক মূল্য নির্বাচন করলেন। আপনি যদি মনে করেন যে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মূল্য ১.১১০০-এ পৌঁছাবে, তাহলে আপনি "টাচ" অপশনটি নির্বাচন করবেন। অন্য দিকে, যদি আপনার মনে হয় যে মূল্য ১.১১০০-এ পৌঁছাবে না, তাহলে আপনি "নো টাচ" অপশনটি নির্বাচন করবেন।

যদি আপনার অনুমান সঠিক হয়, তাহলে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ পাবেন। আর যদি ভুল হয়, তাহলে আপনার বিনিয়োগের সম্পূর্ণ পরিমাণ നഷ്ട হবে।

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের প্রকারভেদ

টাচ/নো ট্রেডিং বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যা ট্রেডারদের বিভিন্ন সুযোগ প্রদান করে:

১. সিঙ্গেল টাচ/নো টাচ: এটি সবচেয়ে সাধারণ প্রকার, যেখানে ট্রেডার একটি নির্দিষ্ট স্ট্রাইক মূল্যের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করেন।

২. ডাবল টাচ/নো টাচ: এই ক্ষেত্রে, ট্রেডার দুটি স্ট্রাইক মূল্য নির্ধারণ করেন এবং অ্যাসেটের মূল্য কোনো একটি স্তরে পৌঁছাবে কিনা তা অনুমান করেন।

৩. রিভার্স টাচ/নো টাচ: এই ধরনের ট্রেডে, ট্রেডাররা প্রথমে একটি টাচ বা নো টাচ ট্রেড খোলেন, এবং তারপর বিপরীত দিকে ট্রেড করেন।

কৌশল এবং টিপস

টাচ/নো ট্রেডিংয়ে সফল হতে কিছু কৌশল এবং টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে:

  • বাজার বিশ্লেষণ: ট্রেড করার আগে বাজারের সঠিক বিশ্লেষণ করা জরুরি। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে ভবিষ্যতের মূল্য সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।
  • সময়সীমা নির্বাচন: সঠিক সময়সীমা নির্বাচন করা টাচ/নো ট্রেডিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ছোট সময়সীমা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, তবে দ্রুত লাভের সুযোগ থাকে। দীর্ঘ সময়সীমা কম ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু লাভের পরিমাণ কম হতে পারে।
  • স্ট্রাইক মূল্য নির্ধারণ: স্ট্রাইক মূল্য নির্ধারণ করার সময় বাজারের ভোলাটিলিটি বিবেচনা করা উচিত। বেশি ভোলাটিলিটি থাকলে, স্ট্রাইক মূল্য দূরে রাখা উচিত।
  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: টাচ/নো ট্রেডিংয়ে ঝুঁকি অনেক বেশি, তাই ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করা খুব জরুরি। আপনার বিনিয়োগের একটি ছোট অংশ দিয়ে ট্রেড শুরু করুন এবং স্টপ-লস ব্যবহার করুন।
  • ভলিউম বিশ্লেষণ: ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায় এবং সেই অনুযায়ী ট্রেড করা যায়।
  • চार्ट প্যাটার্ন : বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন যেমন হেড অ্যান্ড শোল্ডারস, ডাবল টপ, ডাবল বটম ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
  • মুভিং এভারেজ : মুভিং এভারেজের মাধ্যমে মার্কেটের ট্রেন্ড বোঝা যায়।
  • আরএসআই (Relative Strength Index): আরএসআই ব্যবহার করে ওভারবট এবং ওভারসোল্ড পরিস্থিতি চিহ্নিত করা যায়।
  • MACD (Moving Average Convergence Divergence): MACD একটি জনপ্রিয় মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর, যা ট্রেডিংয়ের সংকেত দিতে পারে।
  • ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট : ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলি সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স এলাকা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
  • বোলিঙ্গার ব্যান্ড : বলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহার করে মার্কেটের ভোলাটিলিটি এবং সম্ভাব্য ব্রেকআউট সনাক্ত করা যায়।
  • ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন : ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্নগুলি মার্কেটের সেন্টিমেন্ট এবং সম্ভাব্য মূল্য পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দেয়।

ঝুঁকি এবং সুবিধা

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের কিছু সুবিধা এবং ঝুঁকি রয়েছে:

সুবিধা:

  • সহজবোধ্যতা: এই ট্রেডিং কৌশলটি বোঝা এবং প্রয়োগ করা সহজ।
  • দ্রুত লাভ: অল্প সময়ে বেশি লাভের সম্ভাবনা থাকে।
  • কম বিনিয়োগ: কম বিনিয়োগের মাধ্যমে ট্রেড শুরু করা যায়।

ঝুঁকি:

  • উচ্চ ঝুঁকি: টাচ/নো ট্রেডিংয়ে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি।
  • সম্পূর্ণ বিনিয়োগ হারানোর সম্ভাবনা: ভুল অনুমানের কারণে সম্পূর্ণ বিনিয়োগ হারাতে হতে পারে।
  • বাজারের অস্থিরতা: বাজারের অস্থিরতা এই ট্রেডিংয়ের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের জন্য উপযুক্ত সময়

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণত, যখন বাজারে উচ্চ ভোলাটিলিটি থাকে, তখন এই ট্রেডিং কৌশলটি বেশি কার্যকর হতে পারে। এছাড়াও, গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ডেটা প্রকাশের সময় বা রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় এই ট্রেডিংয়ের সুযোগ বেশি থাকে।

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের বিকল্প

টাচ/নো ট্রেডিংয়ের বিকল্প হিসেবে আরও কিছু বাইনারি অপশন ট্রেডিং কৌশল রয়েছে:

  • হাই/লো: এই কৌশলটিতে, ট্রেডাররা অনুমান করেন যে অ্যাসেটের মূল্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়বে নাকি কমবে।
  • ওয়ান টাচ: এই পদ্ধতিতে, ট্রেডাররা অনুমান করেন যে অ্যাসেটের মূল্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একবার হলেও একটি নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছাবে।
  • পিয়ার্সড অপশন: এটি ওয়ান টাচ এর অনুরূপ, কিন্তু এখানে ট্রেডারদের শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্য স্পর্শ করার প্রয়োজন হয়।

উপসংহার

টাচ/নো ট্রেডিং একটি আকর্ষণীয় এবং লাভজনক বাইনারি অপশন ট্রেডিং কৌশল হতে পারে, তবে এটি ঝুঁকির সঙ্গে জড়িত। ট্রেডারদের উচিত বাজার বিশ্লেষণ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং সঠিক কৌশল অবলম্বন করে এই ট্রেডিংয়ে অংশগ্রহণ করা। নতুন ট্রেডারদের জন্য, ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন করা এবং অভিজ্ঞ ট্রেডারদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। টাচ/নো ট্রেডিংয়ের সম্পূর্ণ ধারণা এবং কৌশল আয়ত্ত করতে পারলে, এটি আপনার ট্রেডিং পোর্টফোলিওতে একটি মূল্যবান সংযোজন হতে পারে। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের অন্যান্য দিকগুলো সম্পর্কেও জ্ঞান রাখা প্রয়োজন।

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер