Deriv Binary Options Platform

Deriv বাইনারি অপশন প্ল্যাটফর্ম

ভূমিকা

Deriv (পূর্বে Binary.com নামে পরিচিত) একটি বিশ্বখ্যাত অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম। এটি বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এছাড়াও, এই প্ল্যাটফর্মে ফরেক্স ট্রেডিং, সিএফডি ট্রেডিং এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং-এর সুযোগ রয়েছে। Deriv প্ল্যাটফর্মটি বিশেষভাবে নতুন এবং অভিজ্ঞ উভয় ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত, কারণ এটি ব্যবহার করা সহজ এবং বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং অপশন সরবরাহ করে। এই নিবন্ধে, Deriv বাইনারি অপশন প্ল্যাটফর্মের বৈশিষ্ট্য, সুবিধা, অসুবিধা, ট্রেডিং কৌশল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

Deriv প্ল্যাটফর্মের ইতিহাস

Deriv এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। দীর্ঘ সময় ধরে তারা অনলাইন ট্রেডিং শিল্পে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। Binary.com থেকে Deriv এ পরিবর্তনের মাধ্যমে, প্ল্যাটফর্মটি তাদের পরিষেবা এবং ট্রেডিং অপশনগুলির পরিধি বিস্তার করেছে। বর্তমানে, Deriv বিভিন্ন দেশে তাদের পরিষেবা প্রদান করে এবং এটি ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিশন (FSC) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

Deriv বাইনারি অপশন প্ল্যাটফর্মের বৈশিষ্ট্য

Deriv প্ল্যাটফর্মের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:

• ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস: Deriv প্ল্যাটফর্মের ইন্টারফেসটি খুবই সহজ এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব। নতুন ট্রেডাররা সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারে।
• বিভিন্ন ধরনের অপশন: Deriv এ বিভিন্ন ধরনের বাইনারি অপশন ট্রেড করার সুযোগ রয়েছে, যেমন - High/Low, Touch/No Touch, Range ইত্যাদি।
• ডেমো অ্যাকাউন্ট: Deriv নতুন ট্রেডারদের জন্য ডেমো অ্যাকাউন্ট সরবরাহ করে, যেখানে তারা কোনো ঝুঁকি ছাড়াই ট্রেডিং অনুশীলন করতে পারে।
• কম ন্যূনতম ট্রেড পরিমাণ: Deriv এ খুব কম পরিমাণ অর্থ দিয়েও ট্রেড শুরু করা যায়, যা ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই উপযোগী।
• দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট: Deriv দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট পদ্ধতি সরবরাহ করে, যা ট্রেডারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
• 24/7 গ্রাহক পরিষেবা: Deriv সপ্তাহে সাত দিন, দিনে চব্বিশ ঘণ্টা গ্রাহক পরিষেবা প্রদান করে।
• অ্যাডভান্সড চার্টিং টুলস: প্ল্যাটফর্মে উন্নত মানের চার্টিং টুলস রয়েছে, যা টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস-এর মাধ্যমে ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
• মোবাইল ট্রেডিং: Deriv মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে স্মার্টফোন থেকে ট্রেড করার সুবিধা রয়েছে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মৌলিক ধারণা

বাইনারি অপশন ট্রেডিং হলো একটি আর্থিক বিনিয়োগ পদ্ধতি, যেখানে ট্রেডাররা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের (যেমন - স্টক, কারেন্সি, কমোডিটি) দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা অনুমান করে ট্রেড করে। যদি ট্রেডারের অনুমান সঠিক হয়, তবে তারা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ পায়। আর যদি অনুমান ভুল হয়, তবে তারা তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ হারায়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মূল বিষয়গুলো হলো:

• স্ট্রাইক প্রাইস (Strike Price): এটি হলো সেই দাম, যেখানে ট্রেডাররা আশা করে সম্পদের দাম পৌঁছাবে।
• এক্সপায়ারি টাইম (Expiry Time): এটি হলো সেই সময়সীমা, যার মধ্যে ট্রেডারদের অনুমান সঠিক হতে হয়।
• পayout (Payout): এটি হলো ট্রেড সফল হলে ট্রেডার যে লাভ পায় তার পরিমাণ।

Deriv প্ল্যাটফর্মে বাইনারি অপশন ট্রেডিং কিভাবে শুরু করবেন?

Deriv প্ল্যাটফর্মে বাইনারি অপশন ট্রেডিং শুরু করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:

১. অ্যাকাউন্ট তৈরি করা: প্রথমে Deriv এর ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এর জন্য আপনার ইমেল আইডি, নাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।

২. অ্যাকাউন্ট যাচাই করা: অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর, আপনাকে আপনার পরিচয় এবং ঠিকানা যাচাই করতে হতে পারে। এর জন্য কিছু নথি জমা দিতে হতে পারে।

৩. ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন করা: অ্যাকাউন্ট যাচাই করার পর, আপনি একটি ডেমো অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন এবং সেখানে ভার্চুয়াল টাকা দিয়ে ট্রেডিং অনুশীলন করতে পারেন।

৪. আসল অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা দেওয়া: যখন আপনি ট্রেডিং সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন, তখন আপনি আপনার আসল অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা দিতে পারেন। Deriv বিভিন্ন পেমেন্ট পদ্ধতি সমর্থন করে, যেমন - ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফার, এবং ই-ওয়ালেট।

৫. ট্রেড শুরু করা: অর্থ জমা দেওয়ার পর, আপনি Deriv প্ল্যাটফর্মে বাইনারি অপশন ট্রেড শুরু করতে পারেন।

Deriv প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ বাইনারি অপশন প্রকার

Deriv প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের বাইনারি অপশন ট্রেড করার সুযোগ রয়েছে। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অপশন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

• High/Low: এটি সবচেয়ে সাধারণ বাইনারি অপশন। এখানে ট্রেডাররা অনুমান করে যে সম্পদের দাম একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়বে নাকি কমবে।
• Touch/No Touch: এই অপশনে, ট্রেডাররা অনুমান করে যে সম্পদের দাম একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মূল্য স্পর্শ করবে কিনা।
• Range: এই অপশনে, ট্রেডাররা অনুমান করে যে সম্পদের দাম একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকবে কিনা।
• Ladder: এই অপশনে, ট্রেডাররা একাধিক স্তরের দামের মধ্যে সম্পদের দাম কোথায় পৌঁছাবে তা অনুমান করে।
• Digital: এই অপশনে, ট্রেডাররা অনুমান করে যে সম্পদের দাম একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট দামের সমান হবে কিনা।

ট্রেডিং কৌশল এবং টিপস

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে সফল হওয়ার জন্য কিছু কৌশল এবং টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে:

• টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস: টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে সম্পদের দামের গতিবিধি বিশ্লেষণ করুন এবং সেই অনুযায়ী ট্রেড করুন।
• ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস: ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে অর্থনৈতিক সূচক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি বিবেচনা করুন।
• ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: আপনার বিনিয়োগের পরিমাণ সঠিকভাবে নির্ধারণ করুন এবং ঝুঁকি কমাতে স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন।
• ডেমো অ্যাকাউন্টে অনুশীলন: আসল অ্যাকাউন্টে ট্রেড করার আগে ডেমো অ্যাকাউন্টে ভালোভাবে অনুশীলন করুন।
• মানসিক শৃঙ্খলা: ট্রেডিংয়ের সময় মানসিক শৃঙ্খলা বজায় রাখুন এবং আবেগপ্রবণ হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না।
• ভলিউম এনালাইসিস: ভলিউম এনালাইসিস করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়।
• ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন: ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন শিখে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
• মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে ট্রেন্ড আইডেন্টিফাই করা যায়।
• আরএসআই (RSI): আরএসআই ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে ওভারবট এবং ওভারসোল্ড কন্ডিশন নির্ণয় করা যায়।
• MACD: MACD ইন্ডিকেটর দিয়ে ট্রেন্ডের মোমেন্টাম বোঝা যায়।
• ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলি সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স হিসাবে কাজ করে।
• সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল: সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করে ট্রেড করা যায়।
• ব্রেকআউট ট্রেডিং: ব্রেকআউট ট্রেডিং স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করে লাভজনক ট্রেড করা যেতে পারে।
• স্কাল্পিং: স্কাল্পিং কৌশল ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ে ছোট লাভ করা যায়।
• নিউজ ট্রেডিং: নিউজ ট্রেডিং করার সময় সতর্ক থাকতে হবে।

Deriv প্ল্যাটফর্মের সুবিধা এবং অসুবিধা

সুবিধা:

• ব্যবহার করা সহজ
• বিভিন্ন ধরনের ট্রেডিং অপশন
• কম ন্যূনতম ট্রেড পরিমাণ
• দ্রুত পেমেন্ট
• 24/7 গ্রাহক পরিষেবা
• ডেমো অ্যাকাউন্টের সুবিধা

অসুবিধা:

• বাইনারি অপশন ট্রেডিং ঝুঁকিপূর্ণ
• কিছু দেশে Deriv এর পরিষেবা উপলব্ধ নাও হতে পারে
• উচ্চ লিভারেজ ঝুঁকির কারণ হতে পারে

Deriv প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা

Deriv প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ ট্রেডিং পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে:

• এসএসএল এনক্রিপশন (SSL Encryption): Deriv প্ল্যাটফর্মে এসএসএল এনক্রিপশন ব্যবহার করা হয়, যা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত এবং আর্থিক তথ্য সুরক্ষিত রাখে।
• দুই ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (Two-Factor Authentication): Deriv দুই ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সমর্থন করে, যা অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়ায়।
• নিয়মিত নিরীক্ষা (Regular Audits): Deriv প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা নিয়মিত নিরীক্ষা করা হয়।

উপসংহার

Deriv বাইনারি অপশন প্ল্যাটফর্ম একটি নির্ভরযোগ্য এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম। এটি নতুন এবং অভিজ্ঞ উভয় ট্রেডারদের জন্য উপযুক্ত। তবে, বাইনারি অপশন ট্রেডিং ঝুঁকিপূর্ণ, তাই ট্রেড করার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নিয়মগুলি অনুসরণ করা উচিত। Deriv প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি বিবেচনা করে, ট্রেডাররা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল প্রক্রিয়া, তাই সবসময় সতর্কতার সাথে ট্রেড করা উচিত।

কারণ:

• শিরোনামটি একটি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কথা বলছে, তাই "প্ল্যাটফর্ম" শব্দটি যোগ করা হয়েছে।
• এই নিবন্ধটি Deriv প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করে, তাই এটি এই শ্রেণীর অধীনে উপযুক্ত।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ