বিচার (উপন্যাস)

বিচার

বিচার (১৯৯৩) দেবদাস খ্যাত জনপ্রিয় ভারতীয় লেখক সরোজিনী নাড়ু রচিত একটি বাংলা উপন্যাস। উপন্যাসটি কলকাতা শহরের প্রেক্ষাপটে রচিত, যেখানে মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের জটিলতা এবং নৈতিক অবক্ষয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এটি নাড়ুর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়।

পটভূমি

উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট নব্বইয়ের দশকের কলকাতা। এই সময়কালে উদারীকরণের প্রভাবে সমাজে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, যার ফলে পুরনো মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য ভেঙে পড়ছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে, দুর্নীতি বিস্তার লাভ করছে এবং মানুষের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। এই সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উপন্যাসের ঘটনাপ্রবাহকে প্রভাবিত করেছে।

কাহিনী সংক্ষেপ

উপন্যাসটির মূল কাহিনী আবর্তিত হয়েছে অনির্বাণ নামের এক তরুণ আইনজীবীকে কেন্দ্র করে। অনির্বাণ একজন সৎ ও আদর্শবাদী মানুষ, যে আইনকে একটি পবিত্র পেশা হিসেবে দেখেন এবং সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অবিচল থাকেন। সে তার পেশার মাধ্যমে সমাজের দুর্বল ও অসহায় মানুষের জন্য সংগ্রাম করতে চায়।

অনির্বাণ একটি জটিল মামলার ভার নেয়, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী তার ক্ষমতা ব্যবহার করে এক দরিদ্র মহিলাকে যৌন নিপীড়ন করেছেন। মামলাটি রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল হওয়ায় অনির্বাণ বিভিন্ন চাপ ও বাধার সম্মুখীন হয়। প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর সাথীরা তাকে ভয় দেখায়, প্রলোভন দেখায় এবং নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।

অনির্বাণ তার আদর্শ থেকে সরে না গিয়ে সত্যের পথে অবিচল থাকে। সে প্রমাণ সংগ্রহ করে এবং আদালতে শক্তিশালী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। কিন্তু প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর আইনজীবীরা পাল্টা কৌশল অবলম্বন করে এবং সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।

আদালতের বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন, অনির্বাণ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মুখোশ খুলে দেয়। সে দেখে যে ক্ষমতা ও অর্থ কীভাবে ন্যায়বিচারকে প্রভাবিত করতে পারে। উপন্যাসে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং সাধারণ মানুষ—সবার চরিত্রই বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

শেষ পর্যন্ত, অনির্বাণ সত্যের জয় ঘটায় এবং অপরাধীকে শাস্তি পেতে সাহায্য করে। তবে এই বিজয় তাকে ব্যক্তিগতভাবে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। সে বুঝতে পারে যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সহজ নয় এবং এর জন্য অনেক মূল্য দিতে হয়।

চরিত্রায়ণ

উপন্যাসটিতে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র রয়েছে, যাদের প্রত্যেকটিই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। নিচে কয়েকটি প্রধান চরিত্রের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া হলো:

অনির্বাণ: উপন্যাসের নায়ক, একজন সৎ ও আদর্শবাদী আইনজীবী। সে সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অবিচল এবং সমাজের দুর্বল মানুষের জন্য সংগ্রাম করতে প্রস্তুত।
মালিনী: দরিদ্র মহিলা, যে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে। সে অনির্বাণের কাছে আস্থা রাখে এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য তার ওপর নির্ভর করে।
বিক্রম রায়: প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, যে মালিনীকে নির্যাতন করেছে। সে ক্ষমতা ও অর্থ ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে।
অরূপা: অনির্বাণের বান্ধবী, যে তাকে সমর্থন ও সাহস যোগায়। সে একজন বুদ্ধিমতী ও সংবেদনশীল নারী।
বিচারক: মামলার বিচারক, যিনি নিরপেক্ষভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করেন।

থিম বা বিষয়বস্তু

বিচার উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো ন্যায়বিচার ও নৈতিকতা। উপন্যাসটি দেখায় যে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা কতটা কঠিন এবং এর জন্য কী কী বাধা আসতে পারে। এছাড়াও, উপন্যাসটিতে ক্ষমতা, অর্থ, দুর্নীতি, সামাজিক বৈষম্য এবং মানুষের মানসিক দ্বন্দ্বের মতো বিষয়গুলোও আলোচিত হয়েছে।

উপন্যাসটি আইন ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কীভাবে ন্যায়বিচার প্রভাবিত হতে পারে, তা তুলে ধরে। একই সাথে, এটি একজন আদর্শবাদী মানুষের নৈতিক সংগ্রাম এবং সমাজের প্রতি তার দায়বদ্ধতার চিত্র উপস্থাপন করে।

শৈলী ও ভাষা

সরোজিনী নাড়ুর লেখার ভাষা সহজ ও সাবলীল। তিনি বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম। উপন্যাসের বর্ণনাগুলো খুব জীবন্ত এবং পাঠকের মনে সহজেই স্থান করে নেয়। নাড়ু চরিত্রগুলোর মনস্তত্ত্ব এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্কগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বিশ্লেষণ করেছেন।

উপন্যাসটিতে কাব্যিক ভাষার ব্যবহার দেখা যায়, যা এটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সংলাপগুলো চরিত্রগুলোর ব্যক্তিত্ব ও মানসিক অবস্থা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে।

সমালোচনা ও মূল্যায়ন

বিচার উপন্যাসটি সমালোচকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। উপন্যাসটির বিষয়বস্তু, চরিত্রায়ণ এবং লেখার শৈলী—সবকিছুই ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে উপন্যাসটি সমসাময়িক সমাজের একটি বাস্তব চিত্র উপস্থাপন করে। এটি দুর্নীতি, অন্যায্য ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা দেয়।

তবে, কিছু সমালোচক মনে করেন যে উপন্যাসের কাহিনী কিছুটা জটিল এবং কিছু চরিত্রের বিকাশ অসম্পূর্ণ।

প্রভাব

বিচার উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এটি পরবর্তী প্রজন্মের লেখকদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। উপন্যাসটি চলচ্চিত্র ও নাটকের মাধ্যমেও মঞ্চস্থ হয়েছে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সংযোগ

যদিও উপন্যাসটি সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং সম্পর্কিত নয়, তবে এর কিছু থিম এই আর্থিক বাজারের সাথে প্রাসঙ্গিক। যেমন:

ঝুঁকি মূল্যায়ন: উপন্যাসের চরিত্ররা যেমন তাদের কর্মের ফলস্বরূপ ঝুঁকি মোকাবেলা করে, তেমনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ বিনিয়োগকারীরাও ঝুঁকির সম্মুখীন হন। সঠিক ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং ব্যবস্থাপনা ছাড়া এই বাজারে সফল হওয়া কঠিন। (ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা)
সিদ্ধান্ত গ্রহণ: অনির্বাণের ন্যায়, একজন বাইনারি অপশন ট্রেডারকেও দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বাজারের বিশ্লেষণ এবং পূর্বাভাসের ওপর ভিত্তি করে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। (টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ)
নৈতিকতা ও সততা: উপন্যাসের মূল বার্তা ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ানো। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ নৈতিকতা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি। ব্রোকার নির্বাচন এবং ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে সততা অবলম্বন করা উচিত। (ব্রোকার পর্যালোচনা)
বাজারের জটিলতা: উপন্যাসের সমাজের জটিলতা যেমন অনির্বাণকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে, তেমনি বাইনারি অপশন বাজারের জটিলতাও ট্রেডারদের জন্য কঠিন হতে পারে। বাজারের গতিশীলতা বোঝা এবং সঠিক কৌশল অবলম্বন করা প্রয়োজন। (বাজারের পূর্বাভাস)
প্রভাবশালী শক্তি: উপন্যাসে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর ক্ষমতা যেমন ন্যায়বিচারকে প্রভাবিত করে, তেমনি বাইনারি অপশন বাজারেও কিছু প্রভাবশালী শক্তি (যেমন বড় বিনিয়োগকারী বা প্রতিষ্ঠানী প্রতিষ্ঠান) বাজারের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। (ভলিউম বিশ্লেষণ)

আরও কিছু প্রাসঙ্গিক লিঙ্ক

বিচার উপন্যাসটি একটি সামাজিক দলিল হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। এটি সমসাময়িক সমাজের বাস্তবতাকে তুলে ধরে এবং মানুষকে সচেতন করে তোলে।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ