পর্যায় সারণী

From binaryoption
Revision as of 14:19, 13 May 2025 by Admin (talk | contribs) (@pipegas_WP)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)
Jump to navigation Jump to search
Баннер1

পর্যায় সারণী: উপাদানসমূহের শ্রেণীবিন্যাস এবং বৈশিষ্ট্য

ভূমিকা পর্যায় সারণী হলো রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞান-এর একটি মৌলিক কাঠামো। এটি রাসায়নিক উপাদানসমূহকে তাদের পারমাণবিক সংখ্যা এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে সাজানো একটি তালিকা। এই সারণীটি উপাদানগুলোর মধ্যে বিদ্যমান পর্যায়ক্রমিক প্রবণতাগুলি বুঝতে এবং নতুন উপাদান আবিষ্কারে সহায়ক। আধুনিক পর্যায় সারণী ডিমিত্রি মেন্ডেলিফ-এর কাজের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যিনি ১৮৬৯ সালে উপাদানগুলোকে তাদের পারমাণবিক ভর অনুসারে সাজিয়ে পর্যায় সারণীর প্রাথমিক রূপ দেন।

পর্যায় সারণীর গঠন পর্যায় সারণীতে উল্লম্ব সারিগুলিকে গ্রুপ এবং আনুভূমিক সারিগুলিকে পর্যায় বলা হয়।

  • গ্রুপ: একই গ্রুপের উপাদানগুলোর সর্ববহিঃস্থ ইলেকট্রন বিন্যাস একই থাকে, তাই তাদের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলিও অনুরূপ হয়। পর্যায় সারণীতে ১৮টি গ্রুপ রয়েছে। যেমন - গ্রুপ ১-এর উপাদানগুলো ক্ষার ধাতু, যা অত্যন্ত সক্রিয় এবং সহজে আয়ন তৈরি করে।
  • পর্যায়: একই পর্যায়ের উপাদানগুলোর ইলেকট্রনগুলো একই সংখ্যক শক্তিস্তরে থাকে। পর্যায়ক্রমে পারমাণবিক আকার এবং আয়নিক ব্যাসার্ধ পরিবর্তিত হয়। পর্যায় সারণীতে ৭টি পর্যায় রয়েছে।

উপাদানসমূহের শ্রেণীবিভাগ পর্যায় সারণীর উপাদানগুলোকে প্রধানত ধাতু, অধাতু এবং উপধাতু এই তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।

পর্যায় সারণীর গুরুত্বপূর্ণ গ্রুপসমূহ ১. ক্ষার ধাতু (গ্রুপ ১): এই গ্রুপের উপাদানগুলো অত্যন্ত সক্রিয় এবং পানিতে বিস্ফোরিত হয়। ২. ক্ষারীয় মৃত্তিকা ধাতু (গ্রুপ ২): এরা ক্ষার ধাতুর চেয়ে কম সক্রিয়, তবে ধাতব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ৩. হ্যালোজেন (গ্রুপ ১৭): এই গ্রুপের উপাদানগুলো অত্যন্ত সক্রিয় অধাতু এবং সহজে লবণ তৈরি করে। ৪. নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা noble গ্যাস (গ্রুপ ১৮): এরা অত্যন্ত স্থিতিশীল এবং সাধারণত কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয় না। ৫. संक्रमण ধাতু (d-block): এই গ্রুপের উপাদানগুলো বিভিন্ন প্রকার জারণ অবস্থা প্রদর্শন করে এবং জটিল যৌগ গঠন করে।

পর্যায় সারণীর প্রবণতা পর্যায় সারণীতে কিছু নির্দিষ্ট প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, যা উপাদানগুলোর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা দেয়।

  • পারমাণবিক ব্যাসার্ধ: একটি পর্যায় জুড়ে বাম থেকে ডানে পারমাণবিক ব্যাসার্ধ হ্রাস পায়, কারণ পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কেন্দ্রকের আকর্ষণ বাড়ে।
  • আয়নিক ব্যাসার্ধ: ধনাত্মক আয়নের আকার পারমাণবিক আকারের চেয়ে ছোট হয়, কারণ ইলেকট্রন কমে যাওয়ায় আকর্ষণ কমে যায়। ঋণাত্মক আয়নের আকার পারমাণবিক আকারের চেয়ে বড় হয়, কারণ ইলেকট্রন বৃদ্ধি পাওয়ায় বিকর্ষণ বাড়ে।
  • আয়নন শক্তি: কোনো পরমাণু থেকে ইলেকট্রন অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় শক্তিকে আয়নন শক্তি বলে। এটি পর্যায়ক্রমে বাম থেকে ডানে বৃদ্ধি পায় এবং গ্রুপে উপর থেকে নিচে হ্রাস পায়।
  • ইলেকট্রন আসক্তি: কোনো পরমাণুতে ইলেকট্রন যুক্ত করার সময় নির্গত শক্তিকে ইলেকট্রন আসক্তি বলে। এটি পর্যায়ক্রমে বাম থেকে ডানে বৃদ্ধি পায় এবং গ্রুপে উপর থেকে নিচে হ্রাস পায়।
  • তড়িৎ ঋণাত্মকতা: কোনো পরমাণুর ইলেকট্রন আকর্ষণ করার ক্ষমতাকে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলে। এটি পর্যায়ক্রমে বাম থেকে ডানে বৃদ্ধি পায় এবং গ্রুপে উপর থেকে নিচে হ্রাস পায়।

আধুনিক পর্যায় সারণীর বৈশিষ্ট্য আধুনিক পর্যায় সারণীতে কিছু নতুন উপাদান যুক্ত হয়েছে এবং এর কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন এসেছে।

  • ল্যান্থানাইড ও অ্যাক্টিনাইড শ্রেণী: পর্যায় সারণীর নিচে এই দুটি শ্রেণী যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে বিরল মৃত্তিকা ধাতু এবং তেজস্ক্রিয় ধাতু অন্তর্ভুক্ত।
  • পর্যায় সারণীর ব্লক: পর্যায় সারণীকে s-block, p-block, d-block এবং f-block এই চারটি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে, যা ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি।

পর্যায় সারণীর ব্যবহার পর্যায় সারণী রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

  • উপাদানসমূহের বৈশিষ্ট্য নির্ণয়: পর্যায় সারণী ব্যবহার করে কোনো উপাদানের ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
  • রাসায়নিক বিক্রিয়া ভবিষ্যদ্বাণী: পর্যায় সারণী ব্যবহার করে রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি কীভাবে ঘটবে তা অনুমান করা যায়।
  • নতুন উপাদান আবিষ্কার: পর্যায় সারণী নতুন উপাদান আবিষ্কারে বিজ্ঞানীদের পথ দেখায়।
  • শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার: পর্যায় সারণীর জ্ঞান শিল্পক্ষেত্রে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং উপাদান তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে পর্যায় সারণীর সম্পর্ক যদিও পর্যায় সারণী সরাসরি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সম্পর্কিত নয়, তবে এই বিষয়ে জ্ঞান বিনিয়োগকারীদের জন্য সহায়ক হতে পারে। ১. বাজারের পূর্বাভাস: বিভিন্ন খনিজ এবং রাসায়নিক পণ্যের দামের গতিবিধি বুঝতে পর্যায় সারণীর জ্ঞান কাজে লাগে। ২. প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ: বিভিন্ন ধাতুর উৎপাদন এবং ব্যবহারের তথ্য বিশ্লেষণ করে বাজারের প্রবণতা বোঝা যায়। ৩. ঝুঁকি মূল্যায়ন: কোনো নির্দিষ্ট উপাদানের সরবরাহ এবং চাহিদার উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগের ঝুঁকি মূল্যায়ন করা যায়। ৪. পোর্টফোলিও বৈচিত্র্য: বিভিন্ন খনিজ এবং রাসায়নিক পণ্যে বিনিয়োগ করে পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনা যায়।

টেবিল: পর্যায় সারণীর প্রথম ২০টি উপাদান

পর্যায় সারণীর প্রথম ২০টি উপাদান
পারমাণবিক সংখ্যা উপাদান প্রতীক পারমাণবিক ভর গ্রুপ পর্যায়
1 হাইড্রোজেন H 1.008 1 1
2 হিলিয়াম He 4.0026 18 1
3 লিথিয়াম Li 6.94 1 2
4 বেরিলিয়াম Be 9.0122 2 2
5 বোরন B 10.81 13 2
6 কার্বন C 12.011 14 2
7 নাইট্রোজেন N 14.007 15 2
8 অক্সিজেন O 15.999 16 2
9 ফ্লোরিন F 18.998 17 2
10 নিয়ন Ne 20.180 18 2
11 সোডিয়াম Na 22.990 1 3
12 ম্যাগনেসিয়াম Mg 24.305 2 3
13 অ্যালুমিনিয়াম Al 26.982 13 3
14 সিলিকন Si 28.085 14 3
15 ফসফরাস P 30.974 15 3
16 সালফার S 32.06 16 3
17 ক্লোরিন Cl 35.45 17 3
18 আর্গন Ar 39.948 18 3
19 পটাশিয়াম K 39.098 1 4
20 ক্যালসিয়াম Ca 40.078 2 4

উপসংহার পর্যায় সারণী রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি উপাদানসমূহের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক বুঝতে সহায়ক। আধুনিক বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে পর্যায় সারণীর অবদান অনস্বীকার্য।

আরও জানতে: পারমাণু আণবিক গঠন রাসায়নিক বন্ধন তাপগতিবিদ্যা রাসায়নিক সাম্যাবস্থা জারণ-বিজারণ অ্যাসিড ও ক্ষার জৈব রসায়ন অজৈব রসায়ন ভৌত রসায়ন বিশ্লেষণাত্মক রসায়ন পলিমার ন্যানোটেকনোলজি নতুন উপাদানের সংশ্লেষণ রাসায়নিক শিল্প পরিবেশ রসায়ন বায়োকেমিস্ট্রি ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ভলিউম বিশ্লেষণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер