ক্রিস্টোফার কলম্বাস

ক্রিস্টোফার কলম্বাস ছিলেন ইতালীয় বংশোদ্ভূত স্প্যানিশ নাবিক এবং অভিযাত্রী। তিনি ১৪৯২ সালে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকা মহাদেশে পৌঁছানোর জন্য বিখ্যাত। কলম্বাসের এই সমুদ্রযাত্রা ইউরোপ এবং আমেরিকা-র মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে এবং এর ফলে বিশ্বের ইতিহাস-এ এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।

জীবনী

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের জন্ম ১৪৫১ সালের ৩১ অক্টোবর ইতালির জেনোয়া শহরে। তাঁর পিতার নাম ছিল ডোমেনিকো কলম্বো এবং মায়ের নাম সুসানা ফন্টানারিচা। কলম্বাস অল্প বয়স থেকেই সমুদ্রযাত্রার প্রতি আগ্রহী ছিলেন এবং তিনি খুব শীঘ্রই একজন দক্ষ নাবিক হিসেবে পরিচিত হন।

কলম্বাস প্রথমে জেনোয়া, তারপর পর্তুগাল এবং স্পেনের বিভিন্ন বন্দরে কাজ করেন। তিনি ভূগোল, নাবিকবিদ্যা এবং নক্ষত্রবিদ্যা বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। কলম্বাস বিশ্বাস করতেন যে পশ্চিম দিকে সমুদ্রপথে যাত্রা করে এশিয়ায় পৌঁছানো সম্ভব। সেই সময়ে, এশিয়ার মশলার বাণিজ্য অত্যন্ত লাভজনক ছিল, কিন্তু স্থলপথে এই বাণিজ্য কঠিন এবং ব্যয়বহুল ছিল।

অভিযান

কলম্বাস স্পেনের রাজা ফার্দিনান্দ এবং রানী ই Isabella-র কাছে তাঁর প্রস্তাব পেশ করেন। প্রথমে রাজা-রানি সন্দিহান ছিলেন, কিন্তু অবশেষে তাঁরা কলম্বাসকে তিনটি জাহাজ - সান্তা মারিয়া, পিন্তা এবং নিনা - দিয়ে একটি সমুদ্রযাত্রা করার অনুমতি দেন।

১৪৯২ সালের ৩ আগস্ট কলম্বাস তাঁর প্রথম সমুদ্রযাত্রা শুরু করেন। প্রায় দুই মাস পর, ১২ অক্টোবর তিনি বাহামা দ্বীপপুঞ্জ-এর একটি দ্বীপ সনাক্ত করেন। কলম্বাস এই দ্বীপের নামকরণ করেন সান সালভাদর। তিনি মনে করতেন যে তিনি এশিয়ার কাছাকাছি পৌঁছেছেন, তাই তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের ‘ইন্ডিয়ান’ নামে ডাকতেন।

কলম্বাস এরপর কিউবা এবং হিস্পানিওলা (বর্তমানে ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র এবং হাইতি) দ্বীপগুলি আবিষ্কার করেন। তিনি হিস্পানিওলাতে একটি বসতি স্থাপন করেন, যা সান্তা মারিয়া দে লা কনসেপশন নামে পরিচিত ছিল।

কলম্বাস আরও তিনটি সমুদ্রযাত্রায় আমেরিকা মহাদেশে যান (১৪৯৩, ১৪৯৮ এবং ১৫০২)। তিনি দক্ষিণ আমেরিকা-র উপকূল আবিষ্কার করেন এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের অনেক দ্বীপের সন্ধান পান।

কলম্বাসের অবদান

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের সমুদ্রযাত্রা ইউরোপীয়দের কাছে আমেরিকা মহাদেশকে পরিচিত করে তোলে। এর ফলে আমেরিকা এবং ইউরোপ-এর মধ্যে বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় শুরু হয়। কলম্বাসের অবদানগুলি নিচে উল্লেখ করা হলো:

নতুন বাণিজ্য পথের আবিষ্কার: কলম্বাস এশিয়ার মশলার বাণিজ্যকে সহজ করে দেন এবং নতুন বাণিজ্য পথ খুলে দেন।
সাংস্কৃতিক বিনিময়: কলম্বাসের সমুদ্রযাত্রার ফলে ইউরোপীয় এবং আমেরিকান সংস্কৃতি একে অপরের সাথে পরিচিত হয়।
ভূগোল এবং নাবিকবিদ্যার উন্নতি: কলম্বাসের অভিযান ভূগোল এবং নাবিকবিদ্যার জ্ঞানকে আরও উন্নত করে।
ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের বিস্তার: কলম্বাসের আবিষ্কারের পর ইউরোপীয় দেশগুলি আমেরিকা মহাদেশে উপনিবেশ স্থাপন করতে শুরু করে।

সমালোচনা

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের উপর অনেক সমালোচনাও রয়েছে। তাঁর সমুদ্রযাত্রার ফলে আমেরিকার আদিবাসীরা রোগ, দাসত্ব এবং সাংস্কৃতিক ধ্বংসের শিকার হন। কলম্বাসের কর্মের ফলে আদিবাসী আমেরিকানদের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং তাঁদের অনেক ঐতিহ্য বিলুপ্ত হয়ে যায়।

কলম্বাসের সমালোচকদের মতে, তিনি শুধুমাত্র ইউরোপীয়দের স্বার্থের কথা ভেবেছিলেন এবং আদিবাসীদের প্রতি তাঁর কোনো সহানুভূতি ছিল না।

ঐতিহ্য

ক্রিস্টোফার কলম্বাসকে তাঁর সমুদ্রযাত্রার জন্য অনেক সম্মান জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন দেশে কলম্বাসের নামে স্মৃতিস্তম্ভ এবং উদ্যান তৈরি করা হয়েছে। কলম্বাস ডে (Columbus Day) নামে একটি জাতীয় ছুটির দিনও পালিত হয়, যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই দিনটির উদযাপন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্যসূত্র

ক্রিস্টোফার কলম্বাস সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
বিষয়	তথ্য
জন্ম	৩১ অক্টোবর ১৪৫১
জন্মস্থান	জেনোয়া, ইতালি
মৃত্যু	২০ মে ১৫০৬
মৃত্যুস্থান	ভ্যালাডোলিড, স্পেন
জাতীয়তা	ইতালীয়, স্প্যানিশ
পেশা	নাবিক, অভিযাত্রী
বিখ্যাত	আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কার

আরও দেখুন

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সম্পর্ক

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের সমুদ্রযাত্রা একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ ছিল। রাজা ফার্দিনান্দ এবং রানী ইসাবেলা কলম্বাসের উপর আস্থা রেখেছিলেন এবং তাঁকে অর্থায়ন করেছিলেন। বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর ক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয় এবং সঠিক বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করতে হয়।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ, বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সম্পদের মূল্য বাড়বে নাকি কমবে, তা অনুমান করেন। যদি তাঁদের অনুমান সঠিক হয়, তবে তাঁরা লাভ পান, অন্যথায় তাঁরা তাঁদের বিনিয়োগের অর্থ হারান। এই ট্রেডিং-এ টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস, ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস এবং ভলিউম অ্যানালাইসিস এর মতো বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়।

এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক দেওয়া হলো:

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস : বাজারের গতিবিধি বোঝার জন্য চার্ট এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা।
ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস : অর্থনৈতিক ডেটা এবং অন্যান্য কারণগুলি বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া।
ভলিউম অ্যানালাইসিস : ট্রেডিং ভলিউম বিশ্লেষণ করে বাজারের প্রবণতা বোঝা।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা : বিনিয়োগের ঝুঁকি কমানোর কৌশল।
মানি ম্যানেজমেন্ট : আপনার ট্রেডিং মূলধন সঠিকভাবে পরিচালনা করা।
বাইনারি অপশন কৌশল : বিভিন্ন ট্রেডিং কৌশল যা ব্যবহার করে লাভজনক ট্রেড করা যায়।
চার্ট প্যাটার্ন : চার্টে বিভিন্ন প্যাটার্ন সনাক্ত করে ট্রেডিংয়ের সুযোগ খুঁজে বের করা।
ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন : ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বোঝা।
মুভিং এভারেজ : বাজারের প্রবণতা নির্ধারণের জন্য মুভিং এভারেজ ব্যবহার করা।
আরএসআই (Relative Strength Index) : একটি মোমেন্টাম নির্দেশক যা অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির অবস্থা সনাক্ত করতে সাহায্য করে।
MACD (Moving Average Convergence Divergence) : দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক দেখায় এবং ট্রেডিং সংকেত তৈরি করে।
বলিঙ্গার ব্যান্ডস : বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করে এবং সম্ভাব্য ব্রেকআউট চিহ্নিত করে।
ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট : সম্ভাব্য সমর্থন এবং প্রতিরোধের স্তর সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
ট্রেডিং সাইকোলজি : ট্রেডিংয়ের সময় মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা।
বাইনারি অপশন প্ল্যাটফর্ম : বাইনারি অপশন ট্রেডিং করার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম।

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের মতো, বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এও সাফল্যের জন্য সাহস, দৃঢ় সংকল্প এবং সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ