Fraternity

ফ্র্যাটার্নিটি

ফ্র্যাটার্নিটি হল একটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সংগঠন, যা সাধারণত পুরুষদের মধ্যে দেখা যায়। এই সংগঠনগুলি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর সদস্যরা একে অপরের সাথে সামাজিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং চারিত্রিক বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। ফ্র্যাটার্নিটিগুলি প্রায়শই নির্দিষ্ট মূল্যবোধ, ঐতিহ্য এবং লক্ষ্যগুলির উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। এই নিবন্ধে ফ্র্যাটার্নিটির ইতিহাস, গঠন, কার্যক্রম, সুবিধা, অসুবিধা এবং আধুনিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করা হবে।

ইতিহাস

ফ্র্যাটার্নিটির ধারণাটি প্রাচীন গ্রিসের দার্শনিক সমিতি এবং মধ্যযুগীয় ইউরোপের গিল্ড থেকে উদ্ভূত। তবে, আধুনিক ফ্র্যাটার্নিটির সূচনা ১৮ শতকের শেষের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৭৭৬ সালে ফিলBetta কাপ্পা (Phi Beta Kappa) নামে প্রথম গোপন ফ্র্যাটার্নিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা উইলিয়াম ও মেরি কলেজে (College of William & Mary) প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মূলত একটি সাহিত্যিক সমিতি ছিল। এরপর, বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ফ্র্যাটার্নিটি গঠিত হতে থাকে। ১৯ শতকে, ফ্র্যাটার্নিটিগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়।

গঠন

ফ্র্যাটার্নিটিগুলির গঠন সাধারণত একটি জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থার অধীনে স্থানীয় অধ্যায় (chapter) ভিত্তিক হয়। প্রতিটি অধ্যায়ের নিজস্ব নেতৃত্ব কাঠামো থাকে, যার মধ্যে সভাপতি, সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ এবং secretário-র মতো পদাধিকারীরা অন্তর্ভুক্ত। ফ্র্যাটার্নিটির সদস্যরা সাধারণত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত হন, যাকে "রushing" বা "recruitment" বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায়, আগ্রহী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফ্র্যাটার্নিটির সাথে পরিচিত হন এবং তাদের কার্যক্রম ও মূল্যবোধ সম্পর্কে জানতে পারেন।

ফ্র্যাটার্নিটির সাংগঠনিক কাঠামো নিম্নরূপ:

জাতীয় সংস্থা: এটি সামগ্রিক ফ্র্যাটার্নিটির নীতি ও নিয়মাবলী নির্ধারণ করে।
আঞ্চলিক পরিচালক: এরা বিভিন্ন অঞ্চলের অধ্যায়গুলির কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন।
স্থানীয় অধ্যায়: এটি ক্যাম্পাসের মধ্যে ফ্র্যাটার্নিটির দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করে।
সদস্য: ফ্র্যাটার্নিটির মূল ভিত্তি হলো এর সদস্যবৃন্দ।

ফ্র্যাটার্নিটির সাধারণ পদাধিকারী
পদ ! দায়িত্ব	সভাপতি	অধ্যায়ের প্রধান নেতা, যিনি সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন।	সহ-সভাপতি	সভাপতির অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিশেষ প্রকল্প তত্ত্বাবধান করেন।	কোষাধ্যক্ষ	আর্থিক বিষয়গুলি পরিচালনা করেন এবং বাজেট তৈরি করেন।	secretário	অধ্যায়ের নথিপত্র ও যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিচালনা করেন।	রিক্রুটমেন্ট চেয়ারম্যান	নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করেন।

কার্যক্রম

ফ্র্যাটার্নিটিগুলি বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে, যা সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, নেতৃত্বগুণ এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি করে। এই কার্যক্রমগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

সামাজিক অনুষ্ঠান: পার্টি, ডিনার এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যা সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করে।
শিক্ষামূলক কার্যক্রম: কর্মশালা, সেমিনার এবং বিতর্কসভার আয়োজন করা হয়, যা সদস্যদের জ্ঞান এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
দাতব্য কার্যক্রম: স্থানীয় ও জাতীয় দাতব্য সংস্থাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করা হয়।
খেলাধুলা: বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা হয়, যা সদস্যদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখে।
নেতৃত্ব উন্নয়ন: নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কর্মশালা আয়োজন করা হয়, যা সদস্যদের নেতৃত্বগুণাবলী বিকাশে সহায়তা করে।

ফ্র্যাটার্নিটিগুলি প্রায়শই ক্যাম্পাস জীবন এবং ছাত্র সংস্কৃতি-এর সাথে গভীরভাবে জড়িত থাকে।

সুবিধা

ফ্র্যাটার্নিটিতে যোগদান করার অনেক সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো:

নেটওয়ার্কিং: ফ্র্যাটার্নিটিগুলি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করে, যা কর্মজীবনের সুযোগ খুঁজে পেতে সহায়ক।
নেতৃত্ব উন্নয়ন: ফ্র্যাটার্নিটির নেতৃত্ব কাঠামো সদস্যদের নেতৃত্বগুণাবলী বিকাশে সহায়তা করে।
সামাজিক সম্পর্ক: ফ্র্যাটার্নিটিগুলি সদস্যদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের সুযোগ তৈরি করে।
শিক্ষাগত সহায়তা: অনেক ফ্র্যাটার্নিটি শিক্ষামূলক কার্যক্রম এবং পড়াশোনার জন্য সহায়তা প্রদান করে।
ব্যক্তিগত উন্নয়ন: ফ্র্যাটার্নিটির কার্যক্রমগুলি সদস্যদের আত্মবিশ্বাস এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে।
বৃত্তি এবং আর্থিক সহায়তা: কিছু ফ্র্যাটার্নিটি তাদের সদস্যদের জন্য বৃত্তি এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

অসুবিধা

ফ্র্যাটার্নিটির কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:

ব্যয়বহুল: ফ্র্যাটার্নিটিতে যোগদান এবং এর কার্যক্রমগুলিতে অংশগ্রহণ করা বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে।
সময়ের অভাব: ফ্র্যাটার্নিটির কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য প্রচুর সময় প্রয়োজন, যা পড়াশোনা এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
চাপ: ফ্র্যাটার্নিটির সদস্যদের উপর সামাজিক এবং শিক্ষাগত চাপ থাকতে পারে।
ঝুঁকি: কিছু ফ্র্যাটার্নিটিতে মদ্যপান এবং ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ-এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
বুলিং এবং হ্যারাসমেন্ট-এর অভিযোগ: কিছু ফ্র্যাটার্নিটিতে বুলিং এবং হ্যারাসমেন্ট-এর ঘটনা ঘটতে পারে।

আধুনিক প্রেক্ষাপট

আধুনিক বিশ্বে ফ্র্যাটার্নিটিগুলি তাদের ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধ বজায় রাখার পাশাপাশি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে, ফ্র্যাটার্নিটিগুলি বৈচিত্র্য এবং অন্তর্ভুক্তি-এর উপর বেশি জোর দিচ্ছে। অনেক ফ্র্যাটার্নিটি এখন নারী এবং বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে। এছাড়াও, ফ্র্যাটার্নিটিগুলি সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সেবামূলক কাজ-এর প্রতি তাদের অঙ্গীকার বৃদ্ধি করেছে।

ফ্র্যাটার্নিটি এবং sorority (মহিলাদের ফ্র্যাটার্নিটি) উভয়ই গ্রিক জীবন নামে পরিচিত এবং কলেজ ক্যাম্পাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফ্র্যাটার্নিটি এবং আর্থিক বিনিয়োগ

ফ্র্যাটার্নিটির সদস্যরা প্রায়শই আর্থিক বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। যদিও ফ্র্যাটার্নিটি সরাসরি বিনিয়োগ পরামর্শ প্রদান করে না, তবে এর মাধ্যমে সদস্যরা একে অপরের কাছ থেকে শিখতে এবং বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে জানতে পারেন। কিছু ফ্র্যাটার্নিটি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের যারা ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার বা বিনিয়োগ ব্যাংকার, তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে সেমিনার আয়োজন করে।

ফ্র্যাটার্নিটি এবং প্রযুক্তি

ফ্র্যাটার্নিটিগুলি এখন প্রযুক্তিকে তাদের কার্যক্রম এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করছে। সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে সদস্যরা একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে এবং বিভিন্ন তথ্যের আদান-প্রদান করে।

ফ্র্যাটার্নিটির ভবিষ্যৎ

ফ্র্যাটার্নিটির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে এর সদস্যদের অভিযোজন ক্ষমতা এবং সমাজের পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার উপর। যে ফ্র্যাটার্নিটিগুলি তাদের ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধকে আধুনিক চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করতে পারবে, তারাই টিকে থাকবে এবং ভবিষ্যতে সফল হবে।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ (Technical Analysis)

ফ্র্যাটার্নিটির সদস্যদের মধ্যে যারা শেয়ার বাজার বা বিনিয়োগে আগ্রহী, তারা প্রায়শই টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে থাকেন। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ হলো আর্থিক বাজারের ডেটা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের দামের গতিবিধি পূর্বাভাসের একটি পদ্ধতি। এই বিশ্লেষণে চার্ট, ইন্ডিকেটর এবং প্যাটার্ন ব্যবহার করা হয়।

ভলিউম বিশ্লেষণ (Volume Analysis)

ভলিউম বিশ্লেষণ হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল, যা বিনিয়োগকারীরা বাজারের গতিবিধি বোঝার জন্য ব্যবহার করেন। এটি কোনও নির্দিষ্ট সময়ে কেনা-বেচার পরিমাণ বিশ্লেষণ করে বাজারের প্রবণতা নির্ধারণে সাহায্য করে। ফ্র্যাটার্নিটির সদস্যরা প্রায়শই এই কৌশলটি ব্যবহার করে থাকেন।

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ