অবশিষ্ট আয় মডেল

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অবশিষ্ট আয় (Residual Income) মডেল একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এই মডেলে, ট্রেডাররা এমনভাবে ট্রেড করে যাতে তারা একটি নির্দিষ্ট সময় পর নিয়মিতভাবে আয় করতে পারে, এমনকি ট্রেডটি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ না করলেও। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশল, যা সময়ের সাথে সাথে আয়ের একটি স্থিতিশীল উৎস তৈরি করতে সাহায্য করে। এই নিবন্ধে, আমরা বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অবশিষ্ট আয় মডেলের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

অবশিষ্ট আয় মডেলের ধারণা

অবশিষ্ট আয় মডেল মূলত এমন একটি কৌশল যেখানে ট্রেডাররা একবার ট্রেড সেট আপ করার পরে, সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে থাকে এবং নিয়মিতভাবে লাভ তৈরি করে। এই মডেলটি বিনিয়োগ এবং ট্রেডিংয়ের মধ্যে একটি সমন্বয়। এখানে, ট্রেডাররা এমন অপশনগুলো খুঁজে বের করে যেগুলোতে লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং তারপর সেগুলোতে বিনিয়োগ করে।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অবশিষ্ট আয় মডেল তৈরি করার জন্য, ট্রেডারদের কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়:

অপশনের মেয়াদ: এমন অপশন নির্বাচন করা উচিত যেগুলোর মেয়াদকাল দীর্ঘ enough, যাতে ট্রেডাররা নিয়মিতভাবে লাভ পেতে পারে।
আন্ডারলাইং অ্যাসেট: স্থিতিশীল এবং পূর্বাভাসযোগ্য আন্ডারলাইং অ্যাসেট নির্বাচন করা জরুরি। আন্ডারলাইং অ্যাসেট সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান এক্ষেত্রে সহায়ক।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ঝুঁকির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে স্টপ-লস এবং টেক-প্রফিট অর্ডার ব্যবহার করা উচিত। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ট্রেডিং কৌশল: একটি সুনির্দিষ্ট এবং পরীক্ষিত ট্রেডিং কৌশল অনুসরণ করা উচিত। ট্রেডিং কৌশল এর সঠিক প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি।

অবশিষ্ট আয় মডেলের প্রকারভেদ

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অবশিষ্ট আয় মডেল বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকার আলোচনা করা হলো:

লং টার্ম ইনভেস্টমেন্ট : এই মডেলে, ট্রেডাররা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য অপশন কেনে এবং সময়ের সাথে সাথে তাদের লাভ বাড়তে থাকে।
স্বয়ংক্রিয় ট্রেডিং : স্বয়ংক্রিয় ট্রেডিং সিস্টেমে, ট্রেডাররা প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ট্রেড করার জন্য একটি সিস্টেম তৈরি করে। এই সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেড করে এবং লাভ তৈরি করে।
কপি ট্রেডিং : কপি ট্রেডিং-এ, ট্রেডাররা সফল ট্রেডারদের ট্রেড কপি করে এবং তাদের মতো করে লাভ করার চেষ্টা করে।
পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন : এই মডেলে, ট্রেডাররা বিভিন্ন ধরনের অপশনে বিনিয়োগ করে, যাতে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়। পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।

অবশিষ্ট আয় মডেলের প্রকারভেদ
মডেল	বিবরণ	সুবিধা
লং টার্ম ইনভেস্টমেন্ট	দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য অপশন কেনা	স্থিতিশীল আয়, কম ঝুঁকি
স্বয়ংক্রিয় ট্রেডিং	প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ট্রেড করা	দ্রুত ট্রেড, কম সময় প্রয়োজন
কপি ট্রেডিং	সফল ট্রেডারদের ট্রেড কপি করা	সহজ, কম জ্ঞান প্রয়োজন
পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন	বিভিন্ন অপশনে বিনিয়োগ করা	ঝুঁকি হ্রাস, স্থিতিশীল আয়

অবশিষ্ট আয় মডেল তৈরির পদক্ষেপ

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অবশিষ্ট আয় মডেল তৈরি করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে:

১. বাজার বিশ্লেষণ : প্রথমে, বাজারের অবস্থা বিশ্লেষণ করতে হবে। কোন আন্ডারলাইং অ্যাসেটগুলো স্থিতিশীল এবং লাভজনক, তা খুঁজে বের করতে হবে। ২. ট্রেডিং কৌশল নির্বাচন : একটি উপযুক্ত ট্রেডিং কৌশল নির্বাচন করতে হবে। এই কৌশলটি বাজারের অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। ট্রেডিং কৌশল নির্বাচন করার সময় সতর্ক থাকতে হবে। ৩. অপশন নির্বাচন : সঠিক মেয়াদ এবং স্ট্রাইক প্রাইস সহ অপশন নির্বাচন করতে হবে। ৪. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা : স্টপ-লস এবং টেক-প্রফিট অর্ডার ব্যবহার করে ঝুঁকির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৫. ট্রেড সেট আপ : নির্বাচিত অপশন এবং কৌশল অনুযায়ী ট্রেড সেট আপ করতে হবে। ৬. পর্যবেক্ষণ এবং সমন্বয় : ট্রেডটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে সমন্বয় করতে হবে।

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ এবং অবশিষ্ট আয় মডেল

টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ অবশিষ্ট আয় মডেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের মাধ্যমে, ট্রেডাররা বাজারের গতিবিধি এবং প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে। এই বিশ্লেষণের জন্য বিভিন্ন ধরনের টুলস এবং ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয়, যেমন:

মুভিং এভারেজ : এটি একটি জনপ্রিয় টুল, যা বাজারের গড় গতিবিধি নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
আরএসআই (Relative Strength Index) : এটি বাজারের অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির অবস্থা নির্দেশ করে।
MACD (Moving Average Convergence Divergence) : এটি দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করে এবং ট্রেডিং সংকেত প্রদান করে।
বলিঙ্গার ব্যান্ডস : এটি বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করতে সাহায্য করে।

এই টুলস এবং ইন্ডিকেটরগুলো ব্যবহার করে, ট্রেডাররা সঠিক সময়ে ট্রেড করতে পারে এবং লাভের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।

ভলিউম বিশ্লেষণ এবং অবশিষ্ট আয় মডেল

ভলিউম বিশ্লেষণ অবশিষ্ট আয় মডেলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে, ট্রেডাররা জানতে পারে যে কোনো নির্দিষ্ট অ্যাসেটে কত সংখ্যক ট্রেডার আগ্রহী। উচ্চ ভলিউম সাধারণত বাজারের শক্তিশালী প্রবণতা নির্দেশ করে। ভলিউম বিশ্লেষণের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়:

ভলিউম বার : এটি একটি নির্দিষ্ট সময়কালে ট্রেড হওয়া ভলিউমের পরিমাণ দেখায়।
অন-ব্যালেন্স ভলিউম (OBV) : এটি ভলিউম এবং মূল্যের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করে।
ভলিউম ওয়েইটেড এভারেজ প্রাইস (VWAP) : এটি একটি নির্দিষ্ট সময়কালে ট্রেড হওয়া গড় মূল্য দেখায়।

ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে, ট্রেডাররা বাজারের চাহিদা এবং যোগান সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে এবং সঠিক ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

অবশিষ্ট আয় মডেলের সুবিধা এবং অসুবিধা

অবশিষ্ট আয় মডেলের কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো:

1. 1. সুবিধা

নিয়মিত আয় : এই মডেলের মাধ্যমে ট্রেডাররা নিয়মিতভাবে আয় করতে পারে।
কম সময় প্রয়োজন : ট্রেড সেট আপ করার পরে, এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে থাকে, তাই বেশি সময় দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
ঝুঁকি হ্রাস : পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশনের মাধ্যমে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়।
দীর্ঘমেয়াদী লাভ : এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশল, যা সময়ের সাথে সাথে লাভ বাড়াতে সাহায্য করে।

1. 1. অসুবিধা

প্রাথমিক বিনিয়োগ : এই মডেল শুরু করার জন্য প্রাথমিক বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়।
জ্ঞান এবং দক্ষতা : বাজারের বিশ্লেষণ এবং ট্রেডিং কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান এবং দক্ষতার প্রয়োজন।
ঝুঁকি বিদ্যমান : বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ ঝুঁকি সবসময় বিদ্যমান থাকে।
সময় প্রয়োজন : একটি স্থিতিশীল অবশিষ্ট আয় তৈরি করতে সময় লাগতে পারে।

অবশিষ্ট আয় মডেলের উদাহরণ

ধরা যাক, একজন ট্রেডার একটি নির্দিষ্ট স্টকের উপর কল অপশন কিনেছে, যার মেয়াদকাল এক মাস এবং স্ট্রাইক প্রাইস ৫০ টাকা। তিনি আশা করছেন যে স্টকের দাম বাড়বে। তিনি স্টপ-লস অর্ডার ৪০ টাকা এবং টেক-প্রফিট অর্ডার ৬০ টাকা সেট করেছেন। যদি স্টকের দাম ৬০ টাকা পর্যন্ত বাড়ে, তবে তিনি লাভ করবেন। যদি দাম ৪০ টাকার নিচে নেমে যায়, তবে তিনি তার বিনিয়োগের কিছু অংশ হারাতে পারেন।

এই ক্ষেত্রে, ট্রেডার একটি অবশিষ্ট আয় মডেল তৈরি করেছেন, যেখানে তিনি একটি নির্দিষ্ট সময় পর নিয়মিতভাবে লাভ আশা করছেন।

উপসংহার

বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এ অবশিষ্ট আয় মডেল একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে, যদি ট্রেডাররা সঠিকভাবে বাজার বিশ্লেষণ করতে পারে, উপযুক্ত ট্রেডিং কৌশল নির্বাচন করতে পারে এবং ঝুঁকির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এই মডেলে সফল হওয়ার জন্য, ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং শেখার মানসিকতা অপরিহার্য।

বাইনারি অপশন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম অর্থ ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগ আর্থিক বাজার ঝুঁকি সতর্কতা কপি ট্রেডিং স্বয়ংক্রিয় ট্রেডিং টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ভলিউম ট্রেডিং বাজারের পূর্বাভাস আন্ডারলাইং সম্পদ অপশন ট্রেডিং স্টপ লস টেক প্রফিট পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ স্বল্পমেয়াদী ট্রেডিং ট্রেডিং সাইকোলজি অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ