Software testing techniques
সফটওয়্যার টেস্টিং কৌশল
ভূমিকা সফটওয়্যার টেস্টিং হল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা কোনো সফটওয়্যারের গুণগত মান নিশ্চিত করে। ত্রুটিপূর্ণ সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা খারাপ করে এবং আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট লাইফ সাইকেলে (SDLC) টেস্টিং একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার টেস্টিং কৌশল রয়েছে, যা সফটওয়্যারের বিভিন্ন দিক পরীক্ষা করে। এই নিবন্ধে, বহুল ব্যবহৃত কিছু সফটওয়্যার টেস্টিং কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হবে।
টেস্টিং এর মৌলিক ধারণা সফটওয়্যার টেস্টিং মূলত সফটওয়্যারের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করছে কিনা তা যাচাই করার একটি প্রক্রিয়া। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল ত্রুটি বা বাগ খুঁজে বের করা এবং তা সংশোধন করা। টেস্টিং শুধুমাত্র ত্রুটি খুঁজে বের করাই নয়, এটি সফটওয়্যারের নির্ভরযোগ্যতা, কার্যকারিতা এবং ব্যবহারযোগ্যতা উন্নত করতে সহায়ক।
টেস্টিং এর প্রকারভেদ সফটওয়্যার টেস্টিংকে সাধারণত বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা হয়। নিচে কয়েকটি প্রধান প্রকার উল্লেখ করা হলো:
- ইউনিট টেস্টিং: এটি সফটওয়্যারের ক্ষুদ্রতম অংশ, যেমন একটি ফাংশন বা মেথড পরীক্ষা করে। ইউনিট টেস্টিং সাধারণত ডেভেলপাররাই করে থাকেন।
- ইন্টিগ্রেশন টেস্টিং: এই পর্যায়ে, বিভিন্ন ইউনিটকে একত্রিত করে পরীক্ষা করা হয়, যাতে তারা সঠিকভাবে একসাথে কাজ করে। ইন্টিগ্রেশন টেস্টিং
- সিস্টেম টেস্টিং: সম্পূর্ণ সিস্টেমটিকে পরীক্ষা করা হয়, যাতে এটি নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে। সিস্টেম টেস্টিং
- অ্যাকসেপ্টেন্স টেস্টিং: ব্যবহারকারী বা ক্লায়েন্ট সফটওয়্যারটি ব্যবহারের পূর্বে এটি পরীক্ষা করে দেখে যে এটি তাদের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করছে কিনা। অ্যাকসেপ্টেন্স টেস্টিং
সফটওয়্যার টেস্টিং কৌশল বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার টেস্টিং কৌশল রয়েছে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল আলোচনা করা হলো:
১. ব্ল্যাক বক্স টেস্টিং ব্ল্যাক বক্স টেস্টিং-এ সফটওয়্যারের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে কোনো ধারণা না রেখে শুধুমাত্র ইনপুট এবং আউটপুটের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা করা হয়। এটি ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে সফটওয়্যারটি পরীক্ষা করার একটি পদ্ধতি। এই কৌশলে, টেস্টাররা বিভিন্ন ইনপুট প্রদান করে এবং প্রত্যাশিত আউটপুট যাচাই করে। ব্ল্যাক বক্স টেস্টিং এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ইকুইভ্যালেন্স পার্টিশনিং: ইনপুট ডেটাকে বিভিন্ন পার্টিশনে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটি পার্টিশন থেকে একটি করে মান নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
- বাউন্ডারি ভ্যালু অ্যানালাইসিস: ইনপুট ডেটার প্রান্তিক মানগুলি (যেমন সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ মান) নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
- ডিসিশন টেবিল টেস্টিং: বিভিন্ন শর্ত এবং তাদের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে একটি টেবিল তৈরি করা হয় এবং সেই অনুযায়ী পরীক্ষা করা হয়।
২. হোয়াইট বক্স টেস্টিং হোয়াইট বক্স টেস্টিং-এ সফটওয়্যারের অভ্যন্তরীণ গঠন এবং কোড সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা রাখা হয়। টেস্টাররা কোড বিশ্লেষণ করে এবং বিভিন্ন পাথ পরীক্ষা করে ত্রুটি খুঁজে বের করেন। হোয়াইট বক্স টেস্টিং এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- স্টেটমেন্ট কভারেজ: কোডের প্রতিটি স্টেটমেন্ট অন্তত একবার এক্সিকিউট করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা।
- ব্রাঞ্চ কভারেজ: কোডের প্রতিটি ব্রাঞ্চ (যেমন if-else স্টেটমেন্ট) অন্তত একবার এক্সিকিউট করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা।
- পাথ কভারেজ: কোডের প্রতিটি সম্ভাব্য পাথ অন্তত একবার এক্সিকিউট করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা।
৩. গ্রে বক্স টেস্টিং গ্রে বক্স টেস্টিং হলো ব্ল্যাক বক্স এবং হোয়াইট বক্স টেস্টিং-এর মিশ্রণ। এই কৌশলে, টেস্টাররা সফটওয়্যারের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে আংশিক ধারণা রাখে। গ্রে বক্স টেস্টিং
৪. রিগ্রেশন টেস্টিং রিগ্রেশন টেস্টিং-এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে নতুন কোড যোগ করার পরে বিদ্যমান কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ আছে। যখনই সফটওয়্যারে কোনো পরিবর্তন করা হয়, তখন রিগ্রেশন টেস্টিং করা উচিত। রিগ্রেশন টেস্টিং
৫. পারফরম্যান্স টেস্টিং পারফরম্যান্স টেস্টিং-এর মাধ্যমে সফটওয়্যারের গতি, স্থিতিশীলতা এবং নির্ভরযোগ্যতা পরীক্ষা করা হয়। এটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সফটওয়্যারটি কেমন পারফর্ম করে তা মূল্যায়ন করতে সহায়ক। পারফরম্যান্স টেস্টিং এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- লোড টেস্টিং: একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যবহারকারীর চাপ সহ্য করার ক্ষমতা পরীক্ষা করা।
- স্ট্রেস টেস্টিং: সফটওয়্যারকে তার সর্বোচ্চ ক্ষমতার বাইরে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা।
- এন্ডুরেন্স টেস্টিং: দীর্ঘ সময় ধরে একটানা ব্যবহার করার ফলে সফটওয়্যারের কার্যকারিতা কেমন থাকে তা পরীক্ষা করা।
৬. সিকিউরিটি টেস্টিং সিকিউরিটি টেস্টিং-এর মাধ্যমে সফটওয়্যারের নিরাপত্তা দুর্বলতাগুলি খুঁজে বের করা হয় এবং তা সমাধান করা হয়। সিকিউরিটি টেস্টিং এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ভালনারেবিলিটি স্ক্যানিং: স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জাম ব্যবহার করে নিরাপত্তা ত্রুটিগুলি খুঁজে বের করা।
- পেনিট্রেশন টেস্টিং: একজন অভিজ্ঞ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ভেদ করার চেষ্টা করেন।
৭. ইউজার ইন্টারফেস (UI) টেস্টিং UI টেস্টিং-এর মাধ্যমে সফটওয়্যারের ব্যবহারকারী ইন্টারফেস পরীক্ষা করা হয়, যাতে এটি ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য হয়। UI টেস্টিং
৮. অ্যাক্সেসিবিলিটি টেস্টিং অ্যাক্সেসিবিলিটি টেস্টিং-এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে সফটওয়্যারটি প্রতিবন্ধী ব্যবহারকারীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য। অ্যাক্সেসিবিলিটি টেস্টিং
৯. এক্সপ্লোরেটরি টেস্টিং এক্সপ্লোরেটরি টেস্টিং একটি ইনফরমাল টেস্টিং পদ্ধতি, যেখানে টেস্টাররা তাদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে সফটওয়্যারটি পরীক্ষা করেন। এক্সপ্লোরেটরি টেস্টিং
১০. অ্যাড-হক টেস্টিং অ্যাড-হক টেস্টিং হলো কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফটওয়্যার পরীক্ষা করা। অ্যাড-হক টেস্টিং
টেস্টিং সরঞ্জাম সফটওয়্যার টেস্টিং-এর জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম উপলব্ধ রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় সরঞ্জাম হলো:
- Selenium: ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন টেস্টিং-এর জন্য একটি জনপ্রিয় সরঞ্জাম। Selenium
- JUnit: জাভা অ্যাপ্লিকেশন টেস্টিং-এর জন্য একটি ইউনিট টেস্টিং ফ্রেমওয়ার্ক। JUnit
- TestNG: জাভা অ্যাপ্লিকেশন টেস্টিং-এর জন্য একটি টেস্টিং ফ্রেমওয়ার্ক। TestNG
- JMeter: পারফরম্যান্স টেস্টিং-এর জন্য একটি জনপ্রিয় সরঞ্জাম। JMeter
- Burp Suite: ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন নিরাপত্তা টেস্টিং-এর জন্য একটি সরঞ্জাম। Burp Suite
টেস্টিং মেট্রিক্স টেস্টিং মেট্রিক্স ব্যবহার করে টেস্টিং প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা হয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেট্রিক্স হলো:
- ত্রুটির ঘনত্ব: কোডের প্রতি হাজার লাইনে ত্রুটির সংখ্যা।
- ত্রুটি অপসারণের হার: টেস্টিং-এর মাধ্যমে কত শতাংশ ত্রুটি খুঁজে বের করা হয়েছে।
- টেস্টিং কভারেজ: কোডের কত শতাংশ পরীক্ষা করা হয়েছে।
সফটওয়্যার টেস্টিং এর ভবিষ্যৎ সফটওয়্যার টেস্টিং-এর ভবিষ্যৎ ক্রমশ স্বয়ংক্রিয়তার দিকে ঝুঁকছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এবং মেশিন লার্নিং (ML) ব্যবহার করে টেস্টিং প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত করা হচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় টেস্টিং সরঞ্জামগুলি ত্রুটি খুঁজে বের করার গতি এবং নির্ভুলতা বাড়াতে সহায়ক। এছাড়াও, ডেভঅপস (DevOps) এবং কন্টিনিউয়াস টেস্টিং (Continuous Testing) এর সমন্বয়ে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়া আরও দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য করা সম্ভব হচ্ছে।
ভলিউম বিশ্লেষণ এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ সফটওয়্যার টেস্টিং-এর ক্ষেত্রে ভলিউম বিশ্লেষণ এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভলিউম বিশ্লেষণ ডেটার পরিমাণ এবং প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য ত্রুটি চিহ্নিত করতে সাহায্য করে, যেখানে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ কোডের গঠন এবং জটিলতা মূল্যায়ন করে দুর্বলতা খুঁজে বের করে। এই উভয় বিশ্লেষণ কৌশল টেস্টিং প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে তোলে। ভলিউম বিশ্লেষণ, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
উপসংহার সফটওয়্যার টেস্টিং একটি জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। সঠিক টেস্টিং কৌশল এবং সরঞ্জাম ব্যবহার করে উচ্চ মানের সফটওয়্যার তৈরি করা সম্ভব। এই নিবন্ধে আলোচিত কৌশলগুলি সফটওয়্যার টেস্টিং-এর মৌলিক ধারণা এবং প্রয়োগ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দিতে সহায়ক হবে।
আরও জানতে:
- সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট লাইফ সাইকেল
- কোড রিভিউ
- কনফিগারেশন ম্যানেজমেন্ট
- ভার্সন কন্ট্রোল
- ডেভঅপস
- কন্টিনিউয়াস ইন্টিগ্রেশন
- কন্টিনিউয়াস ডেলিভারি
- agile development
- waterfall model
- V-model
- testing pyramid
- test automation
- performance monitoring
- log analysis
- root cause analysis
এখনই ট্রেডিং শুরু করুন
IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ
