Public Sector Modernization: Difference between revisions

From binaryoption
Jump to navigation Jump to search
Баннер1
(@pipegas_WP)
 
(@pipegas_WP)
 
Line 1: Line 1:
Public Sector Modernization
=== Public Sector Modernization ===


ভূমিকা
'''ভূমিকা'''
সরকারি সংস্কার (Public Sector Modernization) একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে সরকার এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির কার্যকারিতা, দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করা হয়। আধুনিক বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের ক্রমবর্ধমান প্রত্যাশা পূরণের জন্য সরকারি সংস্কার অপরিহার্য। এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো নাগরিক সেবা উন্নত করা, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। [[সুশাসন]] একটি আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি।


সংস্কারের প্রেক্ষাপট
[[সরকারি সংস্কার]] (Public Sector Modernization) একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে [[সরকার]] এবং [[প্রশাসন]] ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং জনগণের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করা হয়। আধুনিকীকরণ মানে শুধুমাত্র [[প্রযুক্তি]]র ব্যবহার নয়, বরং [[নীতি]] ও [[আইন]]ের পরিবর্তন, [[কর্মচারী]]দের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং [[সেবা]] প্রদানের পদ্ধতিতে উদ্ভাবন নিয়ে আসা। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য সরকারি খাতের আধুনিকীকরণ অপরিহার্য।
বিংশ শতাব্দীর শেষভাগ এবং একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্বব্যাপী সরকারি খাতে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। এর প্রধান কারণগুলো হলো:


*  [[ globalization| বিশ্বায়ন]]: বিশ্বায়নের ফলে আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার কারণে সরকারি খাতের উপর দক্ষতা এবং উদ্ভাবনের চাপ বেড়েছে।
'''আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তা'''
*  [[ liberalization| উদারীকরণ]]: অর্থনৈতিক উদারীকরণের ফলে বেসরকারি খাতের বিকাশ ঘটেছে এবং সরকারের ভূমিকা পরিবর্তিত হয়েছে।
*  [[ তথ্য প্রযুক্তি| তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্তার]]: তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে সরকারি পরিষেবাগুলিকে আরও দ্রুত, সহজলভ্য এবং কার্যকর করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
*  নাগরিক সমাজের চাহিদা: নাগরিক সমাজ সরকারের কাছে উন্নত পরিষেবা এবং অধিকতর জবাবদিহিতা দাবি করছে।


সংস্কারের ক্ষেত্রসমূহ
*  '''দক্ষতা বৃদ্ধি:''' আধুনিকীকরণ সরকারি কাজকর্মের গতি বাড়ায় এবং [[সম্পদ]]ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে।
সরকারি সংস্কার একটি বিস্তৃত ধারণা, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র আলোচনা করা হলো:
*  '''স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা:''' আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি কাজকর্মের তথ্য জনগণের জন্য সহজলভ্য করা যায়, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ায়।
*  '''জনগণের চাহিদা পূরণ:''' আধুনিকীকরণ জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারি সেবা প্রদান করতে সাহায্য করে। [[ই-গভর্নেন্স]] এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
*  '''অর্থনৈতিক উন্নয়ন:''' একটি দক্ষ সরকারি খাত [[বিনিয়োগ]] আকর্ষণ করে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে।
*  '''দুর্নীতি হ্রাস:''' স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং সরাসরি কাজের সুযোগ কমানোর মাধ্যমে দুর্নীতি হ্রাস করা সম্ভব।
*  '''বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা:''' আধুনিকীকরণ একটি দেশকে [[বৈশ্বিক অর্থনীতি]]তে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে।


১. প্রশাসনিক সংস্কার (Administrative Reform)
'''আধুনিকীকরণের মূল উপাদান'''
প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাঠামো, প্রক্রিয়া এবং কাজের পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:


*  কর্তৃপক্ষের বিকেন্দ্রীকরণ (Decentralization): ক্ষমতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে স্থানীয় স্তরে নিয়ে যাওয়া। [[ বিকেন্দ্রীকরণ]] প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
সরকারি সংস্কারের মূল উপাদানগুলো হলো:
*  নিয়মকানুন সরলীকরণ (Deregulation): অপ্রয়োজনীয় এবং জটিল নিয়মকানুন বাতিল করা বা সরল করা।
*  মানসম্পন্ন পরিষেবা (Quality Service): নাগরিক들에게 উন্নত মানের সরকারি পরিষেবা প্রদান করা। [[নাগরিক সেবা]] নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।
*  ই-গভর্নেন্স (E-Governance): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারি পরিষেবা প্রদান করা। [[ই-গভর্নেন্স]] প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বাড়ায়।


২. অর্থনৈতিক সংস্কার (Economic Reform)
{| class="wikitable"
অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে সরকারি খাতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
|+ আধুনিকীকরণের মূল উপাদান
|-
|'''উপাদান'''||'''বর্ণনা'''
|-
|প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণ||[[কম্পিউটার]], [[ইন্টারনেট]], [[মোবাইল প্রযুক্তি]] এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারি কাজকর্মকে স্বয়ংক্রিয় করা।
|-
|সাংগঠনিক আধুনিকীকরণ||[[সরকারি সংস্থা]]গুলোর কাঠামো, [[কার্যপ্রণালী]] এবং কর্মপরিবেশের পরিবর্তন আনা।
|-
|আইন ও নীতি সংস্কার||পুরোনো ও অপ্রাসঙ্গিক [[আইন]] ও [[নীতি]] বাতিল করে নতুন ও সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন করা।
|-
|মানব সম্পদ উন্নয়ন||[[সরকারি কর্মচারী]]দের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য [[প্রশিক্ষণ]] ও উন্নয়নের ব্যবস্থা করা।
|-
|সেবা প্রদান পদ্ধতির আধুনিকীকরণ||জনগণের জন্য সহজ ও দ্রুত সেবা প্রদানের জন্য নতুন পদ্ধতি চালু করা।
|-
|আর্থিক ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ||[[বাজেট]] প্রণয়ন, [[হিসাবরক্ষণ]] এবং [[আর্থিক নিয়ন্ত্রণ]] ব্যবস্থাকে আধুনিক করা।
|}
 
'''প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণ'''
 
প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণ সরকারি সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
 
*  '''ই-গভর্নেন্স:''' [[ই-গভর্নেন্স]] হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এর মাধ্যমে নাগরিকরা ঘরে বসেই বিভিন্ন সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, [[ভূমি রেকর্ড]], [[জন্ম নিবন্ধন]], [[পাসপোর্ট]] এবং [[ট্যাক্স]] পরিশোধের মতো কাজ অনলাইনে করা যায়।
*  '''ডিজিটাল বাংলাদেশ:''' [[ডিজিটাল বাংলাদেশ]] একটি [[vision]] যা বাংলাদেশের [[সরকার]] কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের [[অর্থনীতি]], [[সমাজ]] এবং [[রাজনীতি]]তে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।
*  '''ডাটা অ্যানালিটিক্স:''' সরকারি [[ডেটা]] বিশ্লেষণ করে নীতি নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করা।
*  '''ক্লাউড কম্পিউটিং:''' সরকারি [[ডেটা]] এবং অ্যাপ্লিকেশন সংরক্ষণের জন্য [[ক্লাউড]] প্রযুক্তি ব্যবহার করা, যা খরচ কমায় এবং নিরাপত্তা বাড়ায়।
*  '''কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI):''' [[কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা]] ব্যবহার করে সরকারি সেবা উন্নত করা এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ সম্পন্ন করা।
 
'''সাংগঠনিক আধুনিকীকরণ'''
 
সাংগঠনিক আধুনিকীকরণ সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে:
 
*  '''পুনর্গঠন:''' সরকারি সংস্থাগুলোর কাঠামো পরিবর্তন করে সেগুলোকে আরও দক্ষ করা।
*  '''কার্যপ্রণালী সরলীকরণ:''' জটিল [[কার্যপ্রণালী]]গুলো সহজ করা, যাতে সেবা গ্রহণকারীরা সহজে বুঝতে পারে।
*  '''বিকেন্দ্রীকরণ:''' ক্ষমতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।
*  '''যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন:''' সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে এবং জনগণের সাথে যোগাযোগের উন্নতি ঘটানো।
*  '''কর্মপরিবেশের উন্নয়ন:''' [[কর্মচারী]]দের জন্য একটি ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরি করা, যা তাদের কাজের উৎসাহ বাড়ায়।
 
'''আইন ও নীতি সংস্কার'''


*  বাজেট ব্যবস্থাপনা (Budget Management): সরকারি বাজেট প্রণয়ন, অনুমোদন এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে আধুনিকীকরণ করা।
আইন ও নীতি সংস্কার সরকারি আধুনিকীকরণের জন্য অপরিহার্য। এর মধ্যে রয়েছে:
*  হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা (Accounting and Auditing): সরকারি হিসাবরক্ষণ পদ্ধতিকে উন্নত করা এবং নিয়মিত নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা। [[সরকারি হিসাব]] জনগণের কাছে স্বচ্ছ হতে হবে।
*  সরকারি বিনিয়োগ (Public Investment): লাভজনক খাতে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা এবং অপচয় রোধ করা।
*  [[ privatization| বেসরকারিকরণ]]: কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারিকরণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করা।


৩. সাংগঠনিক সংস্কার (Organizational Reform)
*  '''পুরোনো আইনের বাতিল:''' অপ্রাসঙ্গিক এবং পুরোনো আইন বাতিল করা।
সাংগঠনিক সংস্কারের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাঠামো এবং সংস্কৃতি পরিবর্তন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
*  '''নতুন আইন প্রণয়ন:''' সময়োপযোগী এবং আধুনিক আইন প্রণয়ন করা।
*  '''নীতিমালার সরলীকরণ:''' জটিল [[নীতিমালা]]গুলো সহজ করা।
*  '''আইনের প্রয়োগ:''' আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
*  '''স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ:''' আইন ও নীতি প্রণয়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনা।


*  কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ (Training): সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। [[সরকারি কর্মচারী]]দের দক্ষতা বৃদ্ধি অত্যাবশ্যক।
'''মানব সম্পদ উন্নয়ন'''
*  কর্ম desempeño মূল্যায়ন (Performance Evaluation): কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়ন করা এবং তাদের কর্মদক্ষতা অনুযায়ী পুরস্কৃত করা।
*  জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা (Accountability and Transparency): সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। [[স্বচ্ছতা আইন]] এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
*  [[ অংশীজন সম্পৃক্ততা|অংশীজনদের অংশগ্রহণ]]: নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।


৪. প্রযুক্তিগত সংস্কার (Technological Reform)
সরকারি কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর জন্য:
প্রযুক্তিগত সংস্কারের মাধ্যমে সরকারি খাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:


*  ডাটাবেস তৈরি (Database Creation): বিভিন্ন সরকারি তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য আধুনিক ডাটাবেস তৈরি করা।
*  '''প্রশিক্ষণ:''' [[কর্মচারী]]দের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, যাতে তারা নতুন প্রযুক্তি এবং পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারে।
*  অনলাইন পরিষেবা (Online Services): নাগরিকদের জন্য অনলাইন সরকারি পরিষেবা চালু করা।
*  '''capacity building:''' [[কর্মচারী]]দের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন [[capacity building]] প্রোগ্রাম চালু করা।
*  [[ বিগ ডেটা|বিগ ডেটা বিশ্লেষণ]]: সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিগ ডেটা বিশ্লেষণ করা।
*  '''performance evaluation:''' [[কর্মচারী]]দের কাজের মূল্যায়ন করা এবং তাদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া।
*  সাইবার নিরাপত্তা (Cyber Security): সরকারি ডাটাবেস এবং অনলাইন পরিষেবা সুরক্ষিত রাখা।
*  '''incentive:''' ভালো কাজের জন্য [[কর্মচারী]]দের উৎসাহিত করা এবং পুরস্কৃত করা।
*  '''career development:''' [[কর্মচারী]]দের [[ক্যারিয়ার]] উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা।


সংস্কারের কৌশল ও পদ্ধতি
'''সেবা প্রদান পদ্ধতির আধুনিকীকরণ'''
সরকারি সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কৌশল ও পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কৌশল আলোচনা করা হলো:


*  পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতি (Incremental Approach): ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সংস্কার বাস্তবায়ন করা।
জনগণের জন্য সহজ ও দ্রুত সেবা প্রদানের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:
*  ব্যাপক পদ্ধতি (Comprehensive Approach): একটি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে একসঙ্গে সংস্কার বাস্তবায়ন করা।
*  অংশীজনদের অংশগ্রহণ (Stakeholder Participation): সংস্কার প্রক্রিয়ায় সকল অংশীজনের (যেমন - নাগরিক, সরকারি কর্মচারী, বেসরকারি সংস্থা) অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
*  [[বেঞ্চমার্কিং]]: অন্যান্য দেশের সফল সংস্কার মডেল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের দেশে প্রয়োগ করা।
*  পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন (Monitoring and Evaluation): নিয়মিতভাবে সংস্কার কার্যক্রমের পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন আনা।


সংস্কারের চ্যালেঞ্জসমূহ
*  '''One-stop service:''' বিভিন্ন সরকারি সেবা এক জায়গায় পাওয়ার ব্যবস্থা করা।
সরকারি সংস্কার একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং এর বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ আসতে পারে। নিচে কয়েকটি প্রধান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করা হলো:
*  '''অনলাইন সেবা:''' অধিকাংশ সরকারি সেবা অনলাইনে প্রদানের ব্যবস্থা করা।
*  '''হেল্পলাইন:''' জনগণের জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়ার জন্য হেল্পলাইন চালু করা।
*  '''feedback mechanism:''' সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা করা।
*  '''citizen charter:''' নাগরিক অধিকার ও সরকারি সেবার মান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা।


*  রাজনৈতিক বাধা (Political Obstacles): রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং প্রভাবশালী মহলের বিরোধিতার কারণে সংস্কার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
'''আর্থিক ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ'''
*  প্রতিরোধ (Resistance to Change): সরকারি কর্মচারী এবং অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে পরিবর্তনের বিষয়ে অনীহা দেখা যেতে পারে।
*  সীমাবদ্ধ সম্পদ (Limited Resources): সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও মানব সম্পদের অভাব হতে পারে।
*  প্রযুক্তিগত দুর্বলতা (Technological Weakness): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দুর্বল অবকাঠামো এবং দক্ষ জনবলের অভাব হতে পারে।
*  [[ দুর্নীতি|দুর্নীতি]]: দুর্নীতির কারণে সংস্কার কার্যক্রমের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছাতে বাধা আসতে পারে।


সফল সংস্কারের উদাহরণ
আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক করার জন্য:
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি সংস্কারের সফল উদাহরণ রয়েছে। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:


*  [[ সিঙ্গাপুর]]: সিঙ্গাপুরে প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে একটি দক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে।
*  '''ই-ফাইন্যান্স:''' [[অর্থ]] লেনদেনের জন্য [[ইলেকট্রনিক]] পদ্ধতি ব্যবহার করা।
*  [[ এস্তোনিয়া]]: এস্তোনিয়া ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে সরকারি পরিষেবাগুলিকে অত্যন্ত সহজলভ্য করেছে।
*  '''বাজেট প্রণয়নে আধুনিক পদ্ধতি:''' বাজেট প্রণয়নে নতুন ও আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা।
*  [[ রুয়ান্ডা]]: রুয়ান্ডা অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
*  '''হিসাবরক্ষণ ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণ:''' হিসাবরক্ষণ ব্যবস্থাকে স্বয়ংক্রিয় করা।
*  [[ যুক্তরাজ্য]]: যুক্তরাজ্যে নতুন জন ব্যবস্থাপনা (New Public Management) পদ্ধতির প্রবর্তন করে সরকারি খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
*  '''আর্থিক নিয়ন্ত্রণ:''' [[আর্থিক]] অনিয়ম রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা।
*  '''সম্পদ ব্যবস্থাপনা:''' সরকারি [[সম্পদ]]ের সঠিক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।


বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর সাথে সরকারি সংস্কারের সম্পর্ক
'''বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ'''
বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি আর্থিক বিনিয়োগ কৌশল। এই ক্ষেত্রে, একজন বিনিয়োগকারী একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের মূল্য বাড়বে বা কমবে কিনা তা অনুমান করে। যদিও সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই, সরকারি সংস্কারের ফলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত হলে বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর মতো আর্থিক বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে, যা বাজারের লেনদেন এবং সুযোগ তৈরি করে।


ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
[[সরকারি সংস্কার]] বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন:
সরকারি সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে সরকারি সংস্কারকে আরও কার্যকর করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত:


*  [[ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা|কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা]]: সরকারি পরিষেবাগুলিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বৃদ্ধি করা।
*  '''রাজনৈতিক সদিচ্ছা:''' আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য রাজনৈতিক সমর্থন ও সদিচ্ছা প্রয়োজন।
*  [[ ব্লকচেইন]]: ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারি কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
*  '''প্রযুক্তিগত অবকাঠামো:''' দুর্বল প্রযুক্তিগত অবকাঠামো আধুনিকীকরণের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
*  ডেটা সুরক্ষা (Data Protection): নাগরিকদের ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
*  '''অর্থের অভাব:''' আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য পর্যাপ্ত [[অর্থ]]ের অভাব হতে পারে।
*  [[ স্মার্ট সিটি|স্মার্ট সিটি]]: স্মার্ট সিটি গড়ার লক্ষ্যে সরকারি পরিষেবাগুলিকে আধুনিকীকরণ করা।
*  '''কর্মচারীদের প্রতিরোধ:''' কিছু [[কর্মচারী]] নতুন পদ্ধতি গ্রহণে দ্বিধা বোধ করতে পারে।
*  জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change): জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সরকারি নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
*  '''সমন্বয়ের অভাব:''' বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা যেতে পারে।
*  '''সাইবার নিরাপত্তা:''' [[সাইবার]] হামলার ঝুঁকি থাকে।


উপসংহার
'''সফল বাস্তবায়নের উপায়'''
সরকারি সংস্কার একটি আধুনিক রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। এর মাধ্যমে সরকার এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি আরও দক্ষ, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক হয়ে ওঠে। একটি সফল সরকারি সংস্কার কার্যক্রম অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই, সরকারি সংস্কারের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া এবং এর বাস্তবায়নে সকল অংশীজনের সহযোগিতা প্রয়োজন।


{| class="wikitable"
*  '''সঠিক পরিকল্পনা:''' আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য একটি সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
|+ সরকারি সংস্কারের ক্ষেত্রসমূহ
*  '''stakeholder engagement:''' সকল [[stakeholder]]দের (যেমন: [[সরকারি কর্মচারী]], [[বেসরকারি সংস্থা]], [[জনগণ]]) মতামত নিতে হবে।
|-
*  '''capacity building:''' [[কর্মচারী]]দের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
| ক্ষেত্র || বিবরণ || কৌশল
*  '''monitoring and evaluation:''' নিয়মিতভাবে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং মূল্যায়ন করতে হবে।
|-
*  '''রাজনৈতিক সমর্থন:''' আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য রাজনৈতিক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।
| প্রশাসনিক সংস্কার || সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাঠামো, প্রক্রিয়া ও কাজের পদ্ধতির পরিবর্তন || কর্তৃপক্ষের বিকেন্দ্রীকরণ, নিয়মকানুন সরলীকরণ, ই-গভর্নেন্স
*  '''যোগাযোগ:''' আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে।
|-
 
| অর্থনৈতিক সংস্কার || সরকারি খাতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন || বাজেট ব্যবস্থাপনা, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা, সরকারি বিনিয়োগ, বেসরকারিকরণ
'''উপসংহার'''
|-
 
| সাংগঠনিক সংস্কার || সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ও সংস্কৃতির পরিবর্তন || কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ, কর্ম desempeño মূল্যায়ন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা
[[Public Sector Modernization]] একটি জটিল এবং চলমান প্রক্রিয়া। এটি [[সরকার]]কে আরও দক্ষ, স্বচ্ছ এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে। আধুনিকীকরণের মাধ্যমে [[অর্থনৈতিক]] ও [[সামাজিক]] উন্নয়ন সম্ভব। তবে, এর বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, পর্যাপ্ত [[অর্থ]], প্রযুক্তিগত অবকাঠামো এবং [[কর্মচারী]]দের সহযোগিতা অপরিহার্য।
|-
 
| প্রযুক্তিগত সংস্কার || সরকারি খাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি || ডাটাবেস তৈরি, অনলাইন পরিষেবা, বিগ ডেটা বিশ্লেষণ, সাইবার নিরাপত্তা
[[Category:সরকারি সংস্কার]]
|}


আরও দেখুন
আরও জানতে:
* [[গণতন্ত্র]]
* [[ফেডারেল সরকার]]
* [[স্থানীয় সরকার]]
* [[নির্বাচন প্রক্রিয়া]]
* [[রাজনৈতিক দল]]
* [[আইন ও বিচার]]
* [[মানবাধিকার]]
* [[অর্থনীতি]]
* [[ দারিদ্র্য]]
* [[শিক্ষা]]
* [[স্বাস্থ্য]]
* [[পরিবেশ]]
* [[যোগাযোগ]]
* [[পরিবহন]]
* [[শক্তি]]
* [[পানি]]
* [[খাদ্য নিরাপত্তা]]
* [[দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা]]
* [[ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক]]
* [[বৈদেশিক নীতি]]


[[Category:সরকারি_সংস্কার]]
*  [[ই-গভর্নেন্স]]
*  [[ডিজিটাল বাংলাদেশ]]
*  [[নীতি নির্ধারণ]]
*  [[প্রশাসন]]
*  [[সরকার]]
*  [[আইন]]
*  [[প্রযুক্তি]]
*  [[কর্মচারী]]
*  [[বাজেট]]
*  [[হিসাবরক্ষণ]]
*  [[বিনিয়োগ]]
*  [[বৈশ্বিক অর্থনীতি]]
*  [[দুর্নীতি]]
*  [[capacity building]]
*  [[ডাটা অ্যানালিটিক্স]]
*  [[ক্লাউড কম্পিউটিং]]
*  [[কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা]]
*  [[সাইবার নিরাপত্তা]]
*  [[stakeholder engagement]]
*  [[monitoring and evaluation]]
*  [[Citizen Charter]]
*  [[One-stop Service]]
*  [[Performance Evaluation]]
*  [[Career Development]]
*  [[ই-ফাইন্যান্স]]
*  [[বিকেন্দ্রীকরণ]]
*  [[যোগাযোগ ব্যবস্থা]]
*  [[কর্মপরিবেশ]]
*  [[স্বচ্ছতা]]
*  [[জবাবদিহিতা]]
*  [[অর্থনৈতিক উন্নয়ন]]
*  [[সামাজিক উন্নয়ন]]
*  [[রাজনৈতিক সদিচ্ছা]]
*  [[বীজগণিত]] (Data Analysis এর জন্য)
*  [[পরিসংখ্যান]] (Data Analysis এর জন্য)
*  [[কম্পিউটার বিজ্ঞান]] (প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণের জন্য)
*  [[অর্থনীতি]] (আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য)
*  [[রাষ্ট্রবিজ্ঞান]] (সরকারি সংস্কারের জন্য)
*  [[আইন ও বিচার]] (আইন ও নীতি সংস্কারের জন্য)
*  [[মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা]] (মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য)
*  [[যোগাযোগ প্রযুক্তি]] (ই-গভর্নেন্স এর জন্য)।


== এখনই ট্রেডিং শুরু করুন ==
== এখনই ট্রেডিং শুরু করুন ==

Latest revision as of 13:03, 23 April 2025

Public Sector Modernization

ভূমিকা

সরকারি সংস্কার (Public Sector Modernization) একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে সরকার এবং প্রশাসন ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং জনগণের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করা হয়। আধুনিকীকরণ মানে শুধুমাত্র প্রযুক্তির ব্যবহার নয়, বরং নীতি ও আইনের পরিবর্তন, কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সেবা প্রদানের পদ্ধতিতে উদ্ভাবন নিয়ে আসা। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য সরকারি খাতের আধুনিকীকরণ অপরিহার্য।

আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তা

  • দক্ষতা বৃদ্ধি: আধুনিকীকরণ সরকারি কাজকর্মের গতি বাড়ায় এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে।
  • স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি কাজকর্মের তথ্য জনগণের জন্য সহজলভ্য করা যায়, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ায়।
  • জনগণের চাহিদা পূরণ: আধুনিকীকরণ জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারি সেবা প্রদান করতে সাহায্য করে। ই-গভর্নেন্স এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • অর্থনৈতিক উন্নয়ন: একটি দক্ষ সরকারি খাত বিনিয়োগ আকর্ষণ করে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে।
  • দুর্নীতি হ্রাস: স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং সরাসরি কাজের সুযোগ কমানোর মাধ্যমে দুর্নীতি হ্রাস করা সম্ভব।
  • বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা: আধুনিকীকরণ একটি দেশকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে।

আধুনিকীকরণের মূল উপাদান

সরকারি সংস্কারের মূল উপাদানগুলো হলো:

আধুনিকীকরণের মূল উপাদান
উপাদান বর্ণনা
প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণ কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল প্রযুক্তি এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারি কাজকর্মকে স্বয়ংক্রিয় করা।
সাংগঠনিক আধুনিকীকরণ সরকারি সংস্থাগুলোর কাঠামো, কার্যপ্রণালী এবং কর্মপরিবেশের পরিবর্তন আনা।
আইন ও নীতি সংস্কার পুরোনো ও অপ্রাসঙ্গিক আইন ও নীতি বাতিল করে নতুন ও সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন করা।
মানব সম্পদ উন্নয়ন সরকারি কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা করা।
সেবা প্রদান পদ্ধতির আধুনিকীকরণ জনগণের জন্য সহজ ও দ্রুত সেবা প্রদানের জন্য নতুন পদ্ধতি চালু করা।
আর্থিক ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ বাজেট প্রণয়ন, হিসাবরক্ষণ এবং আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আধুনিক করা।

প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণ

প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণ সরকারি সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • ই-গভর্নেন্স: ই-গভর্নেন্স হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এর মাধ্যমে নাগরিকরা ঘরে বসেই বিভিন্ন সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভূমি রেকর্ড, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট এবং ট্যাক্স পরিশোধের মতো কাজ অনলাইনে করা যায়।
  • ডিজিটাল বাংলাদেশ: ডিজিটাল বাংলাদেশ একটি vision যা বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি, সমাজ এবং রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।
  • ডাটা অ্যানালিটিক্স: সরকারি ডেটা বিশ্লেষণ করে নীতি নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করা।
  • ক্লাউড কম্পিউটিং: সরকারি ডেটা এবং অ্যাপ্লিকেশন সংরক্ষণের জন্য ক্লাউড প্রযুক্তি ব্যবহার করা, যা খরচ কমায় এবং নিরাপত্তা বাড়ায়।
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI): কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সরকারি সেবা উন্নত করা এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ সম্পন্ন করা।

সাংগঠনিক আধুনিকীকরণ

সাংগঠনিক আধুনিকীকরণ সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • পুনর্গঠন: সরকারি সংস্থাগুলোর কাঠামো পরিবর্তন করে সেগুলোকে আরও দক্ষ করা।
  • কার্যপ্রণালী সরলীকরণ: জটিল কার্যপ্রণালীগুলো সহজ করা, যাতে সেবা গ্রহণকারীরা সহজে বুঝতে পারে।
  • বিকেন্দ্রীকরণ: ক্ষমতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।
  • যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে এবং জনগণের সাথে যোগাযোগের উন্নতি ঘটানো।
  • কর্মপরিবেশের উন্নয়ন: কর্মচারীদের জন্য একটি ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরি করা, যা তাদের কাজের উৎসাহ বাড়ায়।

আইন ও নীতি সংস্কার

আইন ও নীতি সংস্কার সরকারি আধুনিকীকরণের জন্য অপরিহার্য। এর মধ্যে রয়েছে:

  • পুরোনো আইনের বাতিল: অপ্রাসঙ্গিক এবং পুরোনো আইন বাতিল করা।
  • নতুন আইন প্রণয়ন: সময়োপযোগী এবং আধুনিক আইন প্রণয়ন করা।
  • নীতিমালার সরলীকরণ: জটিল নীতিমালাগুলো সহজ করা।
  • আইনের প্রয়োগ: আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
  • স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ: আইন ও নীতি প্রণয়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনা।

মানব সম্পদ উন্নয়ন

সরকারি কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর জন্য:

  • প্রশিক্ষণ: কর্মচারীদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, যাতে তারা নতুন প্রযুক্তি এবং পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারে।
  • capacity building: কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন capacity building প্রোগ্রাম চালু করা।
  • performance evaluation: কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়ন করা এবং তাদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া।
  • incentive: ভালো কাজের জন্য কর্মচারীদের উৎসাহিত করা এবং পুরস্কৃত করা।
  • career development: কর্মচারীদের ক্যারিয়ার উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা।

সেবা প্রদান পদ্ধতির আধুনিকীকরণ

জনগণের জন্য সহজ ও দ্রুত সেবা প্রদানের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:

  • One-stop service: বিভিন্ন সরকারি সেবা এক জায়গায় পাওয়ার ব্যবস্থা করা।
  • অনলাইন সেবা: অধিকাংশ সরকারি সেবা অনলাইনে প্রদানের ব্যবস্থা করা।
  • হেল্পলাইন: জনগণের জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়ার জন্য হেল্পলাইন চালু করা।
  • feedback mechanism: সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা করা।
  • citizen charter: নাগরিক অধিকার ও সরকারি সেবার মান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা।

আর্থিক ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ

আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক করার জন্য:

  • ই-ফাইন্যান্স: অর্থ লেনদেনের জন্য ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা।
  • বাজেট প্রণয়নে আধুনিক পদ্ধতি: বাজেট প্রণয়নে নতুন ও আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা।
  • হিসাবরক্ষণ ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণ: হিসাবরক্ষণ ব্যবস্থাকে স্বয়ংক্রিয় করা।
  • আর্থিক নিয়ন্ত্রণ: আর্থিক অনিয়ম রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা।
  • সম্পদ ব্যবস্থাপনা: সরকারি সম্পদের সঠিক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।

বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ

সরকারি সংস্কার বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন:

  • রাজনৈতিক সদিচ্ছা: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য রাজনৈতিক সমর্থন ও সদিচ্ছা প্রয়োজন।
  • প্রযুক্তিগত অবকাঠামো: দুর্বল প্রযুক্তিগত অবকাঠামো আধুনিকীকরণের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
  • অর্থের অভাব: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের অভাব হতে পারে।
  • কর্মচারীদের প্রতিরোধ: কিছু কর্মচারী নতুন পদ্ধতি গ্রহণে দ্বিধা বোধ করতে পারে।
  • সমন্বয়ের অভাব: বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা যেতে পারে।
  • সাইবার নিরাপত্তা: সাইবার হামলার ঝুঁকি থাকে।

সফল বাস্তবায়নের উপায়

  • সঠিক পরিকল্পনা: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য একটি সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
  • stakeholder engagement: সকল stakeholderদের (যেমন: সরকারি কর্মচারী, বেসরকারি সংস্থা, জনগণ) মতামত নিতে হবে।
  • capacity building: কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
  • monitoring and evaluation: নিয়মিতভাবে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং মূল্যায়ন করতে হবে।
  • রাজনৈতিক সমর্থন: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য রাজনৈতিক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।
  • যোগাযোগ: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে।

উপসংহার

Public Sector Modernization একটি জটিল এবং চলমান প্রক্রিয়া। এটি সরকারকে আরও দক্ষ, স্বচ্ছ এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে। আধুনিকীকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব। তবে, এর বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, পর্যাপ্ত অর্থ, প্রযুক্তিগত অবকাঠামো এবং কর্মচারীদের সহযোগিতা অপরিহার্য।

আরও জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

Баннер
Retrieved from "https://binaryoption.wiki/bn/index.php?title=Public_Sector_Modernization&oldid=6376"