GAAP: Difference between revisions

Latest revision as of 22:18, 22 April 2025

GAAP (Generally Accepted Accounting Principles)

GAAP এর পূর্ণরূপ হলো জেনারেলি অ্যাকসেপ্টেড অ্যাকাউন্টিং প্রিন্সিপালস। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির জন্য ব্যবহৃত হিসাববিজ্ঞানের একটি সাধারণ কাঠামো। এই কাঠামো অনুসরণ করে কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক লেনদেন রেকর্ড করে এবং আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করে। GAAP বিনিয়োগকারীদের জন্য কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য এবং কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করতে সহায়ক।

GAAP এর ইতিহাস GAAP এর যাত্রা বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে শুরু হয়। এর আগে, কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করত, যার ফলে আর্থিক বিবরণীর মধ্যে তুলনা করা কঠিন ছিল। ১৯৩০-এর দশকে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) গঠিত হওয়ার পর GAAP প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। SEC এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা এবং আর্থিক বাজারে স্বচ্ছতা আনা। সময়ের সাথে সাথে GAAP পরিবর্তিত হয়েছে এবং আধুনিকীকৃত হয়েছে, যাতে এটি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে। হিসাববিজ্ঞানের ইতিহাস

GAAP এর মূল উপাদান GAAP এর মধ্যে অনেকগুলো নীতি এবং নিয়ম রয়েছে। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. স্বীকৃতি নীতি (Recognition Principle): এই নীতি অনুযায়ী কখন একটি লেনদেনকে আর্থিক বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে তা নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত, যখন কোনো লেনদেন ঘটে এবং এর পরিমাণ নির্ভরযোগ্যভাবে পরিমাপ করা যায়, তখনই তা স্বীকৃতি লাভ করে। স্বীকৃতি নীতি

২. পরিমাপ নীতি (Measurement Principle): এই নীতি অনুযায়ী আর্থিক লেনদেনগুলোকে কী পরিমাণে রেকর্ড করতে হবে তা নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত, ঐতিহাসিকCost বা বর্তমান বাজার মূল্য ব্যবহার করা হয়। মূল্যায়ন পদ্ধতি

৩. প্রকাশ নীতি (Disclosure Principle): এই নীতি অনুযায়ী আর্থিক বিবরণীতে কী কী তথ্য প্রকাশ করতে হবে তা নির্ধারণ করা হয়। কোম্পানিগুলোকে তাদের আর্থিক অবস্থা এবং কর্মক্ষমতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ এবং স্পষ্ট তথ্য প্রকাশ করতে হয়। আর্থিক বিবরণীর প্রকাশ

৪. বস্তুনিষ্ঠতা নীতি (Objectivity Principle): এই নীতি অনুযায়ী আর্থিক লেনদেনগুলো অবশ্যই বস্তুনিষ্ঠভাবে রেকর্ড করতে হবে। এর মানে হলো, লেনদেনগুলো ব্যক্তিগত মতামত বা অনুমানের উপর ভিত্তি করে করা উচিত নয়। হিসাববিজ্ঞানের নীতিসমূহ

GAAP এর ভিত্তি GAAP মূলত নিম্নলিখিত ধারণাগুলোর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে:

অর্থনৈতিক সত্তা ধারণা (Economic Entity Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, একটি ব্যবসা তার মালিকদের থেকে আলাদা একটি সত্তা। তাই, ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক লেনদেন আলাদাভাবে রেকর্ড করতে হবে। ব্যবসায়িক সত্তা
চলমান ব্যবসা ধারণা (Going Concern Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, একটি ব্যবসা ভবিষ্যতে অনির্দিষ্টকালের জন্য চালু থাকবে। এই ধারণার ভিত্তিতেই সম্পদ এবং দায়ের মূল্যায়ন করা হয়। চলমান ব্যবসা
হিসাবকাল ধারণা (Periodicity Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, একটি ব্যবসার জীবনকালকে নির্দিষ্ট সময়কালে ভাগ করা যায়। প্রতিটি সময়কালের জন্য আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। হিসাবকাল
মুদ্রা পরিমাপ ধারণা (Monetary Unit Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, আর্থিক লেনদেনগুলো একটি নির্দিষ্ট মুদ্রায় পরিমাপ করা হয়। মুদ্রা ও ব্যাংকিং

GAAP এবং IFRS এর মধ্যে পার্থক্য GAAP হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসাববিজ্ঞান কাঠামো, অন্যদিকে IFRS (International Financial Reporting Standards) হলো আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান কাঠামো। এই দুটির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে:

| বৈশিষ্ট্য | GAAP | IFRS | |---|---|---| | উৎস | SEC এবং FASB | IASB | | নিয়ম | বিস্তারিত এবং সুনির্দিষ্ট | নমনীয় এবং নীতি-ভিত্তিক | | প্রয়োগ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | বিশ্বব্যাপী বহু দেশ | | জটিলতা | তুলনামূলকভাবে জটিল | তুলনামূলকভাবে সরল | | উদ্দেশ্য | বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা | বিশ্বব্যাপী আর্থিক প্রতিবেদনের তুলনাযোগ্যতা |

IFRS এবং GAAP এর মধ্যে পার্থক্য

GAAP এর গুরুত্ব GAAP বিনিয়োগকারী, ঋণদাতা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:

নির্ভরযোগ্য আর্থিক তথ্য: GAAP অনুসরণ করে প্রস্তুত করা আর্থিক বিবরণী নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়।
তুলনাযোগ্যতা: GAAP কোম্পানিগুলোর মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদনের তুলনাযোগ্যতা নিশ্চিত করে।
বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত: বিনিয়োগকারীরা GAAP ভিত্তিক আর্থিক বিবরণী ব্যবহার করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
ঋণ প্রাপ্তি: ঋণদাতারা GAAP ভিত্তিক আর্থিক বিবরণী দেখে ঋণ দেওয়ার ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে পারে।
স্বচ্ছতা: GAAP আর্থিক বাজারে স্বচ্ছতা আনতে সাহায্য করে।

GAAP এর ব্যবহারিক প্রয়োগ GAAP এর ব্যবহারিক প্রয়োগ আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতির প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা যায়। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:

সম্পত্তি,plant এবং সরঞ্জাম (Property, Plant, and Equipment): GAAP অনুযায়ী, এই সম্পদগুলো ঐতিহাসিক খরচে রেকর্ড করতে হবে এবং সময়ের সাথে সাথে অবচয় (depreciation) হিসাব করতে হবে। অবচয় হিসাব
ইনভেন্টরি (Inventory): GAAP অনুযায়ী, ইনভেন্টরিকে Cost অথবা Market Value এর মধ্যে যেটি কম, সেই মূল্যে রেকর্ড করতে হবে। ইনভেন্টরি মূল্যায়ন
রাজস্ব স্বীকৃতি (Revenue Recognition): GAAP অনুযায়ী, রাজস্ব তখনই স্বীকৃতি লাভ করবে যখন এটি অর্জিত হবে এবং সংগ্রহযোগ্য হবে। রাজস্ব স্বীকৃতি নীতি
দায় (Liabilities): GAAP অনুযায়ী, সকল প্রকার দায় আর্থিক বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দায় এবং মালিকানা স্বত্ব

GAAP এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ (Technical Analysis) হলো আর্থিক বাজারের প্রবণতা এবং প্যাটার্ন বিশ্লেষণের একটি পদ্ধতি। GAAP আর্থিক বিবরণী সরবরাহ করে যা টেকনিক্যাল বিশ্লেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টেকনিক্যাল বিশ্লেষকরা এই বিবরণী ব্যবহার করে কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যৎ কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করতে পারেন। টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ

GAAP এবং ভলিউম বিশ্লেষণ ভলিউম বিশ্লেষণ (Volume Analysis) হলো কোনো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লেনদেনের পরিমাণ বিশ্লেষণের একটি পদ্ধতি। GAAP আর্থিক বিবরণীতে ভলিউম সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভলিউম বিশ্লেষণ

GAAP এবং ফিনান্সিয়াল মডেলিং ফিনান্সিয়াল মডেলিং (Financial Modeling) হলো আর্থিক বিবরণী এবং অন্যান্য ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ আর্থিক কর্মক্ষমতা прогнозировать একটি প্রক্রিয়া। GAAP মডেলিংয়ের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে, কারণ এটি আর্থিক ডেটার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড কাঠামো সরবরাহ করে। ফিনান্সিয়াল মডেলিং

GAAP এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management) হলো সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করা এবং সেগুলো কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া। GAAP কোম্পানিগুলোকে তাদের আর্থিক ঝুঁকি প্রকাশ করতে বাধ্য করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

GAAP এর আধুনিকীকরণ GAAP সময়ের সাথে সাথে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। Financial Accounting Standards Board (FASB) GAAP এর নিয়মাবলী নিয়মিত পর্যালোচনা করে এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন করে। এর ফলে GAAP বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে। FASB

GAAP এবং অন্যান্য হিসাববিজ্ঞান কাঠামো GAAP ছাড়াও, বিশ্বে আরো অনেক হিসাববিজ্ঞান কাঠামো রয়েছে। এর মধ্যে IFRS, Canadian GAAP, এবং Indian GAAP উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি কাঠামোর নিজস্ব নিয়মাবলী এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিভিন্ন দেশের হিসাববিজ্ঞান কাঠামো

GAAP এর ভবিষ্যৎ GAAP এর ভবিষ্যৎ ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। FASB এবং SEC আর্থিক প্রতিবেদনের মান উন্নত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে, GAAP আরও বেশি আন্তর্জাতিকীকরণের দিকে ঝুঁকতে পারে, যাতে এটি বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও উপযোগী হয়। হিসাববিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ

উপসংহার GAAP হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসাববিজ্ঞানের ভিত্তি। এটি বিনিয়োগকারী, ঋণদাতা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের জন্য নির্ভরযোগ্য এবং স্বচ্ছ আর্থিক তথ্য সরবরাহ করে। GAAP অনুসরণ করে কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক লেনদেন রেকর্ড করে এবং আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করে। এই কাঠামো আর্থিক বাজারে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।

বিষয়	বিবরণ	GAAP এর পূর্ণরূপ		GAAP এর উৎস		GAAP এর মূল উদ্দেশ্য		IFRS এর সাথে পার্থক্য		GAAP এর ভিত্তি

আরো জানতে:

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

IQ Option-এ নিবন্ধন করুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10) Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন @strategybin এবং পান: ✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত ✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ ✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি ✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ

@@ Line 1: / Line 1: @@
 GAAP (Generally Accepted Accounting Principles)
-GAAP এর পূর্ণরূপ হল জেনারেলি অ্যাকসেপ্টেড অ্যাকাউন্টিং প্রিন্সিপলস। এটি এমন কিছু নিয়ম ও নির্দেশিকার সমষ্টি যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি এবং উপস্থাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই নিয়মগুলি কোম্পানিগুলোকে তাদের আর্থিক লেনদেনগুলি কীভাবে রেকর্ড করতে হবে, আর্থিক বিবরণী কীভাবে তৈরি করতে হবে এবং সেই বিবরণীগুলোতে কী কী তথ্য প্রকাশ করতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে। GAAP এর মূল উদ্দেশ্য হল আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং তুলনামূলকতা নিশ্চিত করা, যাতে বিনিয়োগকারী এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীরা সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
+GAAP এর পূর্ণরূপ হলো জেনারেলি অ্যাকসেপ্টেড অ্যাকাউন্টিং প্রিন্সিপালস। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির জন্য ব্যবহৃত হিসাববিজ্ঞানের একটি সাধারণ কাঠামো। এই কাঠামো অনুসরণ করে কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক লেনদেন রেকর্ড করে এবং আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করে। GAAP বিনিয়োগকারীদের জন্য কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য এবং কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করতে সহায়ক।
 GAAP এর ইতিহাস
+GAAP এর যাত্রা বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে শুরু হয়। এর আগে, কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করত, যার ফলে আর্থিক বিবরণীর মধ্যে তুলনা করা কঠিন ছিল। ১৯৩০-এর দশকে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) গঠিত হওয়ার পর GAAP প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। SEC এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা এবং আর্থিক বাজারে স্বচ্ছতা আনা। সময়ের সাথে সাথে GAAP পরিবর্তিত হয়েছে এবং আধুনিকীকৃত হয়েছে, যাতে এটি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে। [[হিসাববিজ্ঞানের ইতিহাস]]
-GAAP এর যাত্রা শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। সেই সময় বিভিন্ন কোম্পানি নিজেদের পছন্দ মতো হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করত, যার ফলে আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যে অসঙ্গতি দেখা দিত। ১৯৩০ এর দশকে, মহামন্দার (Great Depression) পর, মার্কিন সরকার আর্থিক বাজারের স্থিতিশীলতা আনার জন্য একটি সুসংহত হিসাবরক্ষণ পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এর ফলস্বরূপ, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC) ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তারা আর্থিক প্রতিবেদনের মান নির্ধারণের জন্য কাজ শুরু করে।
-SEC সরাসরি কোনো হিসাবরক্ষণ নীতি তৈরি করে না, তবে তারা Financial Accounting Standards Board (FASB)-কে এই দায়িত্ব দেয়। FASB একটি বেসরকারি সংস্থা, যা হিসাববিদ, অ্যাকাউন্টিং পেশাজীবী এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত। FASB GAAP তৈরি করে, আপডেট করে এবং ব্যাখ্যা করে।
 GAAP এর মূল উপাদান
+GAAP এর মধ্যে অনেকগুলো নীতি এবং নিয়ম রয়েছে। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিচে উল্লেখ করা হলো:
-GAAP এর অধীনে বিভিন্ন ধরনের হিসাবরক্ষণ নীতি রয়েছে, যা আর্থিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিচে উল্লেখ করা হলো:
+১. স্বীকৃতি নীতি (Recognition Principle): এই নীতি অনুযায়ী কখন একটি লেনদেনকে আর্থিক বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে তা নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত, যখন কোনো লেনদেন ঘটে এবং এর পরিমাণ নির্ভরযোগ্যভাবে পরিমাপ করা যায়, তখনই তা স্বীকৃতি লাভ করে। [[স্বীকৃতি নীতি]]
-১. স্বীকৃতি নীতি (Recognition Principles): এই নীতিগুলো নির্ধারণ করে কখন একটি লেনদেনকে আর্থিক বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, রাজস্ব স্বীকৃতি নীতি (Revenue Recognition Principle) নির্ধারণ করে কখন একটি কোম্পানি রাজস্ব হিসাবে অর্থ উপার্জন করতে পারবে।
-২. পরিমাপ নীতি (Measurement Principles): এই নীতিগুলো নির্ধারণ করে কীভাবে আর্থিক বিবরণীতে লেনদেনগুলোর পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। এর মধ্যে ঐতিহাসিক ব্যয় (Historical Cost), ন্যায্য মূল্য (Fair Value) এবং বর্তমান ব্যয় (Current Cost) এর মতো পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত।
-৩. প্রকাশ নীতি (Disclosure Principles): এই নীতিগুলো নির্ধারণ করে আর্থিক বিবরণীতে কী কী তথ্য প্রকাশ করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নোট টু ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্টস (Notes to Financial Statements), যা আর্থিক বিবরণীর অতিরিক্ত তথ্য সরবরাহ করে।
-৪. মৌলিক আর্থিক বিবরণী (Basic Financial Statements): GAAP অনুযায়ী, একটি কোম্পানির চারটি মৌলিক আর্থিক বিবরণী তৈরি করতে হয়:
-   ক. আয় বিবরণী (Income Statement): এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোম্পানির আয় এবং ব্যয় দেখায়, যার মাধ্যমে নিট লাভ বা ক্ষতি নির্ণয় করা হয়। [[আয় বিবরণী]]
+২. পরিমাপ নীতি (Measurement Principle): এই নীতি অনুযায়ী আর্থিক লেনদেনগুলোকে কী পরিমাণে রেকর্ড করতে হবে তা নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত, ঐতিহাসিকCost বা বর্তমান বাজার মূল্য ব্যবহার করা হয়। [[মূল্যায়ন পদ্ধতি]]
-   খ. ব্যালেন্স শীট (Balance Sheet): এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোম্পানির সম্পদ (Assets), দায় (Liabilities) এবং মালিকের স্বত্ব (Equity) দেখায়। [[ব্যালেন্স শীট]]
-   গ. নগদ প্রবাহ বিবরণী (Cash Flow Statement): এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোম্পানির নগদ প্রবাহের পরিবর্তন দেখায়। [[নগদ প্রবাহ বিবরণী]]
-   ঘ. মালিকের স্বত্ব বিবরণী (Statement of Owner’s Equity): এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মালিকের স্বত্ত্বে পরিবর্তন দেখায়। [[মালিকের স্বত্ব বিবরণী]]
-GAAP এর গুরুত্ব
+৩. প্রকাশ নীতি (Disclosure Principle): এই নীতি অনুযায়ী আর্থিক বিবরণীতে কী কী তথ্য প্রকাশ করতে হবে তা নির্ধারণ করা হয়। কোম্পানিগুলোকে তাদের আর্থিক অবস্থা এবং কর্মক্ষমতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ এবং স্পষ্ট তথ্য প্রকাশ করতে হয়। [[আর্থিক বিবরণীর প্রকাশ]]
-GAAP আর্থিক প্রতিবেদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর কয়েকটি প্রধান গুরুত্ব নিচে উল্লেখ করা হলো:
+৪. বস্তুনিষ্ঠতা নীতি (Objectivity Principle): এই নীতি অনুযায়ী আর্থিক লেনদেনগুলো অবশ্যই বস্তুনিষ্ঠভাবে রেকর্ড করতে হবে। এর মানে হলো, লেনদেনগুলো ব্যক্তিগত মতামত বা অনুমানের উপর ভিত্তি করে করা উচিত নয়। [[হিসাববিজ্ঞানের নীতিসমূহ]]
-১. স্বচ্ছতা (Transparency): GAAP আর্থিক লেনদেন এবং প্রতিবেদনের একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো প্রদান করে, যা আর্থিক তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।
+GAAP এর ভিত্তি
+GAAP মূলত নিম্নলিখিত ধারণাগুলোর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে:
-২. নির্ভরযোগ্যতা (Reliability): GAAP নিয়মগুলি অনুসরণ করে তৈরি করা আর্থিক প্রতিবেদনগুলি নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়।
+* অর্থনৈতিক সত্তা ধারণা (Economic Entity Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, একটি ব্যবসা তার মালিকদের থেকে আলাদা একটি সত্তা। তাই, ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক লেনদেন আলাদাভাবে রেকর্ড করতে হবে। [[ব্যবসায়িক সত্তা]]
+* চলমান ব্যবসা ধারণা (Going Concern Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, একটি ব্যবসা ভবিষ্যতে অনির্দিষ্টকালের জন্য চালু থাকবে। এই ধারণার ভিত্তিতেই সম্পদ এবং দায়ের মূল্যায়ন করা হয়। [[চলমান ব্যবসা]]
-৩. তুলনামূলকতা (Comparability): GAAP বিভিন্ন কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনগুলোকে তুলনা করার সুযোগ তৈরি করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
+* হিসাবকাল ধারণা (Periodicity Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, একটি ব্যবসার জীবনকালকে নির্দিষ্ট সময়কালে ভাগ করা যায়। প্রতিটি সময়কালের জন্য আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। [[হিসাবকাল]]
+* মুদ্রা পরিমাপ ধারণা (Monetary Unit Assumption): এই ধারণা অনুযায়ী, আর্থিক লেনদেনগুলো একটি নির্দিষ্ট মুদ্রায় পরিমাপ করা হয়। [[মুদ্রা ও ব্যাংকিং]]
-৪. বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা (Investor Protection): GAAP বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করে, যা তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে।
 GAAP এবং IFRS এর মধ্যে পার্থক্য
+GAAP হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসাববিজ্ঞান কাঠামো, অন্যদিকে IFRS (International Financial Reporting Standards) হলো আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান কাঠামো। এই দুটির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে:
-GAAP (Generally Accepted Accounting Principles) হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবরক্ষণ নীতি। অন্যদিকে, IFRS (International Financial Reporting Standards) হলো আন্তর্জাতিক হিসাবরক্ষণ নীতি, যা বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়। এই দুটির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে:
+| বৈশিষ্ট্য | GAAP | IFRS |
+|---|---|---|
+| উৎস | SEC এবং FASB | IASB |
+| নিয়ম | বিস্তারিত এবং সুনির্দিষ্ট | নমনীয় এবং নীতি-ভিত্তিক |
+| প্রয়োগ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | বিশ্বব্যাপী বহু দেশ |
+| জটিলতা | তুলনামূলকভাবে জটিল | তুলনামূলকভাবে সরল |
+| উদ্দেশ্য | বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা | বিশ্বব্যাপী আর্থিক প্রতিবেদনের তুলনাযোগ্যতা |
-১. নিয়ম-ভিত্তিক বনাম নীতি-ভিত্তিক (Rules-based vs. Principles-based): GAAP মূলত নিয়ম-ভিত্তিক, অর্থাৎ এটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম এবং নির্দেশিকা প্রদান করে। অন্যদিকে, IFRS নীতি-ভিত্তিক, অর্থাৎ এটি সাধারণ নীতি প্রদান করে এবং কোম্পানিগুলোকে তাদের নিজস্ব বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করে তা প্রয়োগ করতে উৎসাহিত করে।
+[[IFRS এবং GAAP এর মধ্যে পার্থক্য]]
-২. বিস্তারিততা (Detail): GAAP প্রায়শই IFRS এর চেয়ে বেশি বিস্তারিত এবং নির্দিষ্ট হয়।
+GAAP এর গুরুত্ব
+GAAP বিনিয়োগকারী, ঋণদাতা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
-৩. প্রয়োগ (Application): GAAP প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত হয়, যেখানে IFRS বিশ্বব্যাপী বহু দেশে ব্যবহৃত হয়।
+* নির্ভরযোগ্য আর্থিক তথ্য: GAAP অনুসরণ করে প্রস্তুত করা আর্থিক বিবরণী নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়।
+* তুলনাযোগ্যতা: GAAP কোম্পানিগুলোর মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদনের তুলনাযোগ্যতা নিশ্চিত করে।
+* বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত: বিনিয়োগকারীরা GAAP ভিত্তিক আর্থিক বিবরণী ব্যবহার করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
+* ঋণ প্রাপ্তি: ঋণদাতারা GAAP ভিত্তিক আর্থিক বিবরণী দেখে ঋণ দেওয়ার ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে পারে।
+* স্বচ্ছতা: GAAP আর্থিক বাজারে স্বচ্ছতা আনতে সাহায্য করে।
-৪. একত্রীকরণ (Consolidation): GAAP এবং IFRS এর মধ্যে একত্রীকরণ সংক্রান্ত নীতিতেও কিছু পার্থক্য রয়েছে।
+GAAP এর ব্যবহারিক প্রয়োগ
+GAAP এর ব্যবহারিক প্রয়োগ আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতির প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা যায়। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:
-GAAP এর প্রয়োগ এবং প্রয়োগকারী সংস্থা
+* সম্পত্তি,plant এবং সরঞ্জাম (Property, Plant, and Equipment): GAAP অনুযায়ী, এই সম্পদগুলো ঐতিহাসিক খরচে রেকর্ড করতে হবে এবং সময়ের সাথে সাথে অবচয় (depreciation) হিসাব করতে হবে। [[অবচয় হিসাব]]
+* ইনভেন্টরি (Inventory): GAAP অনুযায়ী, ইনভেন্টরিকে Cost অথবা Market Value এর মধ্যে যেটি কম, সেই মূল্যে রেকর্ড করতে হবে। [[ইনভেন্টরি মূল্যায়ন]]
+* রাজস্ব স্বীকৃতি (Revenue Recognition): GAAP অনুযায়ী, রাজস্ব তখনই স্বীকৃতি লাভ করবে যখন এটি অর্জিত হবে এবং সংগ্রহযোগ্য হবে। [[রাজস্ব স্বীকৃতি নীতি]]
+* দায় (Liabilities): GAAP অনুযায়ী, সকল প্রকার দায় আর্থিক বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। [[দায় এবং মালিকানা স্বত্ব]]
-GAAP এর প্রয়োগ এবং তত্ত্বাবধানের জন্য বেশ কিছু সংস্থা কাজ করে। এদের মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো:
+GAAP এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
+টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ (Technical Analysis) হলো আর্থিক বাজারের প্রবণতা এবং প্যাটার্ন বিশ্লেষণের একটি পদ্ধতি। GAAP আর্থিক বিবরণী সরবরাহ করে যা টেকনিক্যাল বিশ্লেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টেকনিক্যাল বিশ্লেষকরা এই বিবরণী ব্যবহার করে কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যৎ কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করতে পারেন। [[টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ]]
-১. সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC): SEC হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি সংস্থা, যা পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে এবং GAAP এর প্রয়োগ নিশ্চিত করে। [[সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন]]
+GAAP এবং ভলিউম বিশ্লেষণ
+ভলিউম বিশ্লেষণ (Volume Analysis) হলো কোনো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লেনদেনের পরিমাণ বিশ্লেষণের একটি পদ্ধতি। GAAP আর্থিক বিবরণীতে ভলিউম সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। [[ভলিউম বিশ্লেষণ]]
-২. ফিনান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড (FASB): FASB হলো একটি বেসরকারি সংস্থা, যা GAAP তৈরি করে, আপডেট করে এবং ব্যাখ্যা করে। [[ফিনান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড]]
+GAAP এবং ফিনান্সিয়াল মডেলিং
+ফিনান্সিয়াল মডেলিং (Financial Modeling) হলো আর্থিক বিবরণী এবং অন্যান্য ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ আর্থিক কর্মক্ষমতা прогнозировать একটি প্রক্রিয়া। GAAP মডেলিংয়ের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে, কারণ এটি আর্থিক ডেটার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড কাঠামো সরবরাহ করে। [[ফিনান্সিয়াল মডেলিং]]
-৩. পাবলিক কোম্পানি অ্যাকাউন্টিং ওভারসাইট বোর্ড (PCAOB): PCAOB পাবলিক কোম্পানিগুলোর নিরীক্ষা (Audit) তত্ত্বাবধান করে এবং নিরীক্ষকদের মান নিয়ন্ত্রণ করে। [[পাবলিক কোম্পানি অ্যাকাউন্টিং ওভারসাইট বোর্ড]]
+GAAP এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
+ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management) হলো সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করা এবং সেগুলো কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া। GAAP কোম্পানিগুলোকে তাদের আর্থিক ঝুঁকি প্রকাশ করতে বাধ্য করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। [[ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা]]
-GAAP এর আধুনিক প্রবণতা
+GAAP এর আধুনিকীকরণ
+GAAP সময়ের সাথে সাথে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। Financial Accounting Standards Board (FASB) GAAP এর নিয়মাবলী নিয়মিত পর্যালোচনা করে এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন করে। এর ফলে GAAP বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে। [[FASB]]
-GAAP সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে এবং আধুনিক প্রবণতাগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এটি ক্রমাগত আপডেট করা হচ্ছে। কিছু আধুনিক প্রবণতা হলো:
+GAAP এবং অন্যান্য হিসাববিজ্ঞান কাঠামো
+GAAP ছাড়াও, বিশ্বে আরো অনেক হিসাববিজ্ঞান কাঠামো রয়েছে। এর মধ্যে IFRS, Canadian GAAP, এবং Indian GAAP উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি কাঠামোর নিজস্ব নিয়মাবলী এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। [[বিভিন্ন দেশের হিসাববিজ্ঞান কাঠামো]]
-১. ন্যায্য মূল্য পরিমাপ (Fair Value Measurement): GAAP এখন ন্যায্য মূল্য পরিমাপের ওপর বেশি জোর দেয়, যা আর্থিক সম্পদের বর্তমান বাজার মূল্য নির্ধারণে সাহায্য করে।
+GAAP এর ভবিষ্যৎ
+GAAP এর ভবিষ্যৎ ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। FASB এবং SEC আর্থিক প্রতিবেদনের মান উন্নত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে, GAAP আরও বেশি আন্তর্জাতিকীকরণের দিকে ঝুঁকতে পারে, যাতে এটি বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও উপযোগী হয়। [[হিসাববিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ]]
-২. রাজস্ব স্বীকৃতি (Revenue Recognition): FASB রাজস্ব স্বীকৃতির জন্য একটি নতুন মান (ASC 606) জারি করেছে, যা রাজস্ব স্বীকৃতি প্রক্রিয়াকে আরও সুনির্দিষ্ট এবং স্বচ্ছ করে।
+উপসংহার
+GAAP হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসাববিজ্ঞানের ভিত্তি। এটি বিনিয়োগকারী, ঋণদাতা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের জন্য নির্ভরযোগ্য এবং স্বচ্ছ আর্থিক তথ্য সরবরাহ করে। GAAP অনুসরণ করে কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক লেনদেন রেকর্ড করে এবং আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করে। এই কাঠামো আর্থিক বাজারে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।
-৩. লিজিং (Leasing): লিজিং সংক্রান্ত হিসাবরক্ষণ নীতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা লিজিং লেনদেনগুলোকে আরও সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে।
-৪. ডেটা বিশ্লেষণ (Data Analytics): GAAP এখন ডেটা বিশ্লেষণের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, যা আর্থিক প্রতিবেদনের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করে।
-বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং GAAP এর মধ্যে সম্পর্ক
-বাইনারি অপশন ট্রেডিং একটি জটিল আর্থিক প্রক্রিয়া। যদিও বাইনারি অপশন ট্রেডিং সরাসরি GAAP দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, তবে এর সাথে জড়িত আর্থিক প্রতিবেদন এবং লেনদেন GAAP এর নীতিগুলির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত। বিশেষ করে, যদি কোনো কোম্পানি বাইনারি অপশন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করে বা এই ধরনের ট্রেডিং কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকে, তবে তাদের আর্থিক বিবরণী GAAP অনুযায়ী তৈরি করতে হবে।
-এখানে কিছু ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলো যেখানে বাইনারি অপশন ট্রেডিং এবং GAAP এর মধ্যে সম্পর্ক দেখা যায়:
-১. রাজস্ব স্বীকৃতি (Revenue Recognition): বাইনারি অপশন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলোর আয় GAAP এর রাজস্ব স্বীকৃতি নীতি অনুযায়ী রেকর্ড করতে হবে।
-২. আর্থিক উপকরণ (Financial Instruments): বাইনারি অপশনগুলো আর্থিক উপকরণ হিসাবে বিবেচিত হয় এবং এগুলোকে GAAP এর আর্থিক উপকরণ সংক্রান্ত নীতি অনুযায়ী মূল্যায়ন করতে হবে।
-৩. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management): বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের সাথে জড়িত ঝুঁকিগুলো GAAP এর ঝুঁকি প্রকাশ নীতি অনুযায়ী প্রকাশ করতে হবে।
-৪. নিরীক্ষা (Auditing): বাইনারি অপশন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলোর আর্থিক বিবরণী GAAP অনুযায়ী নিরীক্ষা করা উচিত, যাতে বিনিয়োগকারীরা নির্ভরযোগ্য তথ্য পায়।
-টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ভলিউম বিশ্লেষণ এবং কৌশল
-বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ, ভলিউম বিশ্লেষণ এবং বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়। এই বিষয়গুলো আর্থিক প্রতিবেদনের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে:
-১. টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ([[টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ]]): এই পদ্ধতিতে ঐতিহাসিক মূল্য এবং ভলিউম ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতের মূল্য প্রবণতা অনুমান করা হয়।
-২. ভলিউম বিশ্লেষণ ([[ভলিউম বিশ্লেষণ]]): এই পদ্ধতিতে ট্রেডিং ভলিউমের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়।
-৩. সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল ([[সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল]]): এই লেভেলগুলো নির্ধারণ করে সম্ভাব্য প্রবেশ এবং প্রস্থান পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়।
-৪. মুভিং এভারেজ ([[মুভিং এভারেজ]]): এই কৌশলটি মূল্যের গড় প্রবণতা নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়।
+{| class="wikitable"
+! বিষয় !! বিবরণ
-৫. বলিঙ্গার ব্যান্ড ([[বোলিঙ্গার ব্যান্ড]]): এই সূচকটি বাজারের অস্থিরতা পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়।
+| GAAP এর পূর্ণরূপ || জেনারেলি অ্যাকসেপ্টেড অ্যাকাউন্টিং প্রিন্সিপালস |
+| GAAP এর উৎস || SEC এবং FASB |
-৬. আরএসআই (Relative Strength Index) ([[আরএসআই]]): এই সূচকটি অতিরিক্ত কেনা বা অতিরিক্ত বিক্রির পরিস্থিতি চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।
+| GAAP এর মূল উদ্দেশ্য || আর্থিক প্রতিবেদনের নির্ভরযোগ্যতা এবং তুলনাযোগ্যতা নিশ্চিত করা |
+| IFRS এর সাথে পার্থক্য || GAAP বিস্তারিত এবং সুনির্দিষ্ট, যেখানে IFRS নমনীয় এবং নীতি-ভিত্তিক |
-৭. MACD (Moving Average Convergence Divergence) ([[MACD]]): এই সূচকটি দুটি মুভিং এভারেজের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে ট্রেডিং সংকেত প্রদান করে।
+| GAAP এর ভিত্তি || অর্থনৈতিক সত্তা ধারণা, চলমান ব্যবসা ধারণা, হিসাবকাল ধারণা, মুদ্রা পরিমাপ ধারণা |
+|}
-৮. ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ([[ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট]]): এই কৌশলটি সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।
-৯. ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন ([[ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন]]): এই প্যাটার্নগুলো বাজারের প্রবণতা এবং সম্ভাব্য পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দেয়।
-১০. অপশন ট্রেডিং কৌশল ([[অপশন ট্রেডিং কৌশল]]): বিভিন্ন ধরনের অপশন ট্রেডিং কৌশল ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা তাদের ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য লাভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
-১১. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল ([[ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল]]): বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়, যেমন স্টপ-লস অর্ডার এবং পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন।
-১২. মার্কেট সেন্টিমেন্ট বিশ্লেষণ ([[মার্কেট সেন্টিমেন্ট বিশ্লেষণ]]): বাজারের সামগ্রিক অনুভূতি এবং বিনিয়োগকারীদের মানসিকতা বিশ্লেষণ করে ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
-১৩. অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার ([[অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার]]): গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ডেটা এবং ইভেন্টগুলো ট্র্যাক করে ট্রেডিং সুযোগ সনাক্ত করা হয়।
-১৪. নিউজ ট্রেডিং ([[নিউজ ট্রেডিং]]): গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক খবরের উপর ভিত্তি করে ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
-১৫. অ্যালগরিদমিক ট্রেডিং ([[অ্যালগরিদমিক ট্রেডিং]]): কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেড করা হয়।
-উপসংহার
-GAAP আর্থিক হিসাব এবং প্রতিবেদনের জন্য একটি অপরিহার্য কাঠামো। এটি আর্থিক তথ্যের স্বচ্ছতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং তুলনামূলকতা নিশ্চিত করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক। বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মতো আর্থিক প্রক্রিয়াগুলোতে GAAP এর নীতিগুলো মেনে চলা জরুরি, যাতে বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। সময়ের সাথে সাথে GAAP এর পরিবর্তন এবং আধুনিক প্রবণতাগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলা উচিত, যাতে এটি সর্বদা প্রাসঙ্গিক এবং কার্যকর থাকে।
+আরো জানতে:
+* [[আর্থিক হিসাববিজ্ঞান]]
+* [[খরচ হিসাববিজ্ঞান]]
+* [[পরিচালন হিসাববিজ্ঞান]]
+* [[নিরীক্ষা]]
+* [[বাজেট প্রণয়ন]]
+* [[আর্থিক পরিকল্পনা]]
+* [[বিনিয়োগের মৌলিক ধারণা]]
+* [[শেয়ার বাজার]]
+* [[বন্ড বাজার]]
+* [[ডেরিভেটিভস]]
+* [[ঝুঁকি এবং রিটার্ন]]
+* [[পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা]]
+* [[কর্পোরেট ফিনান্স]]
+* [[মূলধন বাজেট]]
+* [[লভ্যাংশ নীতি]]
+* [[আর্থিক অনুপাত বিশ্লেষণ]]
+* [[নগদ প্রবাহ বিবরণী]]
+* [[আয় বিবরণী]]
+* [[উদ্বৃত্ত পত্র]]
+* [[মালিকানা স্বত্ব]]
 [[Category:হিসাববিজ্ঞান]] (Category:Accounting)

GAAP: Difference between revisions

Latest revision as of 22:18, 22 April 2025

এখনই ট্রেডিং শুরু করুন

আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন

Navigation menu