View source for ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসন

'''ভারতে ব্রিটিশ শাসন'''

'''সূচনা'''
ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রায় তিন শতাব্দী ধরে বিস্তৃত ছিল, যা ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোতে গভীর পরিবর্তন নিয়ে আসে। ১৭৫৭ সালের [[পলাশীর যুদ্ধ]] থেকে শুরু করে ১৯৪7 সালের [[ভারতবর্ষের স্বাধীনতা]] পর্যন্ত এই সময়কালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকার ভারতের উপর নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে। এই শাসনকালে ব্রিটিশরা ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে এবং ভারতবর্ষকে নিজেদের সাম্রাজ্যের অংশ করে নেয়।

'''ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক পর্যায় (১৭৫৭-১৮৫৭)'''
পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয়। এই যুদ্ধে [[রবার্ট ক্লাইভ]]-এর নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি [[সিরাজ-উদ-দৌলা]]কে পরাজিত করে। এর পর থেকে কোম্পানি ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ক্ষমতা বাড়াতে থাকে। [[দুর্গ অপসারণ চুক্তি]] এবং [[ subsidiary alliance]]-এর মাধ্যমে ব্রিটিশরা ভারতীয় রাজ্যগুলিকে নিজেদের অধীনে নিয়ে আসে। এই সময়ে, কোম্পানি মূলত বাণিজ্য প্রসারের উদ্দেশ্যে কাজ করলেও, ধীরে ধীরে রাজস্ব আদায় এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা দখল করতে শুরু করে।

''' Cornwallis এর ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা '''
[[ওয়ারেন হেস্টিংস]], [[লর্ড কর্নওয়ালিস]], [[লর্ড ওয়েলেসলি]] প্রমুখ গভর্নর জেনারেলেরা বিভিন্ন প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার করেন। লর্ড কর্নওয়ালিসের [[চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]] ছিল উল্লেখযোগ্য, যা ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনে। এই ব্যবস্থার ফলে জমির মালিকানা কৃষকদের থেকে জমিদারদের হাতে চলে যায় এবং কৃষকরা মধ্যস্বত্বভোগীর অধীনে আসতে বাধ্য হয়।

'''রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিবর্তন'''
ব্রিটিশরা ধীরে ধীরে ভারতীয় রাজ্যগুলির রাজনৈতিক ক্ষমতা নিজেদের হাতে নেয়। [[ Annexation policy]] এবং [[Doctrine of Lapse]]-এর মাধ্যমে অনেক রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। [[সাতটি প্রদেশের শাসনবিধি, ১৮৫৯]]-এর মাধ্যমে ভারতের প্রশাসনিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনা হয়।

'''অর্থনৈতিক প্রভাব'''
ব্রিটিশ শাসনের অর্থনৈতিক প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। ব্রিটিশরা ভারতের অর্থনীতিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। [[ De-industrialization]]-এর ফলে ভারতের ঐতিহ্যবাহী শিল্প ধ্বংস হয় এবং দেশ শিল্প উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ে। [[কৃষি ঋণ]] এবং [[ভূমি রাজস্ব]] ব্যবস্থা কৃষকদের শোষণ করে। ব্রিটিশরা কাঁচামাল সংগ্রহ করে শিল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রেরণ করত এবং উৎপাদিত পণ্য ভারতে বিক্রি করত, যা ভারতীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর ছিল।

'''সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব'''
ব্রিটিশ শাসনের ফলে ভারতীয় সমাজে নানা পরিবর্তন আসে। [[রামমোহন রায়]], [[ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর]], [[মহাত্মা গান্ধী]]-এর মতো সমাজ সংস্কারকরা [[সতীদাহ প্রথা]], [[বাল্যবিবাহ]] এবং [[জাতিভেদ]] প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। ব্রিটিশরা ইংরেজি শিক্ষা চালু করে, যা আধুনিক শিক্ষার বিস্তার ঘটায়। তবে, এর ফলে ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। [[ Orientalism]] এবং [[ Anglicism]] এর বিতর্ক এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

'''১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ'''
[[সিপাহী বিদ্রোহ]], যা ১৮৫৭ সালে শুরু হয়েছিল, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রথম বড় বিদ্রোহ ছিল। যদিও এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়, তবে এটি ব্রিটিশদের চোখে খুলে দেয় ভারতীয়দের অসন্তোষের মাত্রা। এই বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার সরাসরি ভারতের শাসনভার গ্রহণ করে এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান হয়।

'''ব্রিটিশ শাসনের দ্বিতীয় পর্যায় (১৮৫৮-১৯০৫)'''
১৮৫৮ সালের পর ভারত সরাসরি ব্রিটিশ সরকারের অধীনে আসে। এই সময়কালে, ব্রিটিশরা ভারতের প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও সুসংহত করে এবং আইন-কানুন তৈরি করে। [[ Indian Civil Service]]-এর মাধ্যমে ভারতীয় প্রশাসনে ব্রিটিশদের প্রাধান্য বজায় থাকে।

''' railways এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি'''
ব্রিটিশরা ভারতে [[রেলওয়ে]] এবং [[যোগাযোগ ব্যবস্থা]]র উন্নতি ঘটায়। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম সহজ হয়। তবে, এই উন্নয়ন মূলত ব্রিটিশদের স্বার্থে করা হয়েছিল।

'''শিক্ষা ও সাহিত্য'''
এই সময়ে, ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটে এবং [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। [[মাইকেল মধুসূদন দত্ত]], [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]] এবং [[বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়]]-এর মতো সাহিত্যিকেরা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন।

'''জাতীয়তাবাদের উত্থান'''
ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদের भावना জাগ্রত হয়। [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]] প্রতিষ্ঠিত হয় এবং [[স্বরাজ]] আন্দোলনের সূচনা হয়। [[বাল গঙ্গাধর তিলক]], [[বিপিন চন্দ্র পাল]], [[লালা লাজপত রায়]]-এর মতো নেতারা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।

'''ব্রিটিশ শাসনের তৃতীয় পর্যায় (১৯০৫-১৯৪৭)'''
১৯০৫ সালে [[বঙ্গভঙ্গ]]-এর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করে, কিন্তু এর ফলে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়।

'''গান্ধী যুগের সূচনা'''
[[মহাত্মা গান্ধী]] ১৯১৫ সালে ভারতে ফিরে আসেন এবং [[অহিংস অসহযোগ আন্দোলন]] শুরু করেন। এই আন্দোলন ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দেয়। [[ Quit India Movement]] এবং [[ ভারত বিভাগ]] আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের পথ প্রশস্ত হয়।

'''ভারতবর্ষের স্বাধীনতা'''
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। [[ লর্ড মাউন্টব্যাটেন]] ছিলেন শেষ ভাইসরয়। স্বাধীনতার পর ভারত দুটি অংশে বিভক্ত হয় - [[ভারত]] এবং [[পাকিস্তান]]।

'''উপসংহার'''
ব্রিটিশ শাসন ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই শাসনকালে ভারত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন দেখেছে। ব্রিটিশরা ভারতের সম্পদ শোষণ করেছে, কিন্তু একই সাথে আধুনিক শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করেছে। এই শাসনের অবসান হয় ভারতীয়দের দীর্ঘ সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে।

'''আরও দেখুন'''
* [[পলাশীর যুদ্ধ]]
* [[সিপাহী বিদ্রোহ]]
* [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]]
* [[মহাত্মা গান্ধী]]
* [[ Quit India Movement]]
* [[ বঙ্গভঙ্গ]]
* [[ওয়ারেন হেস্টিংস]]
* [[লর্ড কর্নওয়ালিস]]
* [[সতীদাহ প্রথা]]
* [[বাল্যবিবাহ]]
* [[জাতিভেদ]]
* [[ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]]
* [[ Annexation policy]]
* [[Doctrine of Lapse]]
* [[সাতটি প্রদেশের শাসনবিধি, ১৮৫৯]]
* [[ De-industrialization]]
* [[কৃষি ঋণ]]
* [[ Orientalism]]
* [[ Anglicism]]
* [[রেলওয়ে]]
* [[যোগাযোগ ব্যবস্থা]]
* [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]]

'''বাইনারি অপশন ট্রেডিং সম্পর্কিত লিঙ্ক'''
(যেহেতু আপনি বাইনারি অপশন ট্রেডিং-এর বিশেষজ্ঞ, তাই এই অংশে কিছু প্রাসঙ্গিক লিঙ্ক যোগ করা হলো। এই লিঙ্কগুলি নিবন্ধের মূল বিষয় থেকে কিছুটা আলাদা, কিন্তু আপনার বিশেষত্বের প্রতি সম্মান জানিয়ে যোগ করা হলো।)

* [বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের মৌলিক ধারণা](https://www.example.com/binary-options-basics) - বাইনারি অপশন ট্রেডিং কী এবং কীভাবে কাজ করে।
* [টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস](https://www.example.com/technical-analysis) - চার্ট এবং ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ।
* [ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস](https://www.example.com/fundamental-analysis) - অর্থনৈতিক ডেটা এবং নিউজ ইভেন্টের প্রভাব।
* [রিস্ক ম্যানেজমেন্ট](https://www.example.com/risk-management) - ট্রেডিংয়ের ঝুঁকি কমানোর কৌশল।
* [মানি ম্যানেজমেন্ট](https://www.example.com/money-management) - পুঁজি ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি।
* [ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন](https://www.example.com/candlestick-patterns) - ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট থেকে সংকেত বোঝা।
* [মুভিং এভারেজ](https://www.example.com/moving-averages) - ট্রেন্ড নির্ধারণের জন্য মুভিং এভারেজের ব্যবহার।
* [আরএসআই (RSI)](https://www.example.com/rsi) - ওভারবট এবং ওভারসোল্ড অবস্থা সনাক্ত করা।
* [MACD](https://www.example.com/macd) - ট্রেন্ড এবং মোমেন্টাম বিশ্লেষণ।
* [বলিঙ্গার ব্যান্ড](https://www.example.com/bollinger-bands) - ভোলাটিলিটি পরিমাপ করা।
* [ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট](https://www.example.com/fibonacci-retracement) - সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল খুঁজে বের করা।
* [ভলিউম অ্যানালাইসিস](https://www.example.com/volume-analysis) - ট্রেডিং ভলিউমের গুরুত্ব।
* [বাইনারি অপশন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম](https://www.example.com/trading-platforms) - বিভিন্ন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের সুবিধা এবং অসুবিধা।
* [ট্রেডিং সাইকোলজি](https://www.example.com/trading-psychology) - মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
* [ডেমো অ্যাকাউন্ট](https://www.example.com/demo-account) - আসল অর্থ বিনিয়োগ করার আগে অনুশীলন করা।

[[Category:ভারতে ব্রিটিশ শাসন]]

== এখনই ট্রেডিং শুরু করুন ==
[https://affiliate.iqbroker.com/redir/?aff=1085&instrument=options_WIKI IQ Option-এ নিবন্ধন করুন] (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $10)
[http://redir.forex.pm/pocketo Pocket Option-এ অ্যাকাউন্ট খুলুন] (সর্বনিম্ন ডিপোজিট $5)
=== আমাদের সম্প্রদায়ে যোগ দিন ===
আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগ দিন [https://t.me/strategybin @strategybin] এবং পান:
✓ দৈনিক ট্রেডিং সংকেত
✓ একচেটিয়া কৌশলগত বিশ্লেষণ
✓ বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি
✓ নতুনদের জন্য শিক্ষামূলক উপকরণ